তথ্যমন্ত্রী: সরকারের সাফল্যে বিএনপির মুখে উদ্ভ্রান্তের প্রলাপ

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ভারতের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে দেওয়া ২০ লাখ ডোজ করোনার ভ্যাকসিন দেশে এসে পৌঁছেছে। আর সরকারের এই সাফল্যে এখন বিএনপির মুখে উদ্ভ্রান্তের প্রলাপ শোনা যাচ্ছে।

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে মতবিনিময়ে সম্পাদক ফোরাম

বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরামের প্রতিনিধিদের সাথে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় সম্পাদক ফোরামের উপদেষ্টা ইকবাল সোহবান চৌধুরী ও আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রতন ফোরামের বক্তব্য তুলে ধরেন। অন্যদের মধ্যে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, প্রধান তথ্য অফিসার সুরথ কুমার সরকার উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির পক্ষ থেকে সম্প্রতি বলা হয়েছে যে, সরকার ভ্যাকসিন নিয়ে রাজনীতি করছে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজ দেশে করোনার টিকা চলে এসেছে। ভারত সরকার আমাদেরকে উপহার হিসেবে এগুলো দিয়েছে। এ জন্য ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। এ ক্ষেত্রে বিএনপির বক্তব্য থেকে যে মানসিকতা প্রকাশ পায়, তা হলো- অপছন্দের প্রতিবেশীর কোনো ভালোই দেখতে না পাওয়া এবং সব সময় অমঙ্গল কামনা করা।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি মনে করেছিল- সরকার দেশের করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবে না। তবে বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বের কারণে সেটা সামাল দেওয়া সম্ভব হয়েছে। তার এই নেতৃত্ব বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে।

ড. হাছান বলেন, করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা উপমহাদেশে সবার ওপরে, আর গোটা বিশ্বে ২০তম। করোনার এই মহামারির মধ্যে সারাবিশ্বে মাত্র ২২টি দেশে ধনাত্মক জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়।

বিএনপির শাসনামলের সমালোচনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতায় থাকাকালে তারা সবকিছুতেই লুটপাটের সঙ্গে জড়িত ছিল। তারা হাওয়া ভবন গঠন করে যে লুটপাট করেছিল, তাতে বাংলাদেশ দুর্নীতিতে পর পর চার বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এ ছাড়া আরেকবার অন্য একটি দেশের সঙ্গে যুগ্মভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।

আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী যথাসময়ে করোনার টিকা আনতে পেরেছেন। সেইসঙ্গে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে সেটা ফ্রন্টলাইনে থাকা লোকদের প্রথমে দেয়া হবে, সরকার সেভাবেই পদক্ষেপ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

কিন্তু বিএনপি এখানে লুটপাট কেন দেখতে পাচ্ছে, সেটা আমি জানি না। তবে সব সময় যারা লুটপাটের কথা চিন্তা করে, তাদের ক্ষেত্রেই এভাবে চিন্তা করা ও বলা সম্ভব। মূল কথা হলো- সরকারের সাফল্যে তারা উদ্ভ্রান্ত হয়ে গেছে। সে কারণেই তাদের মুখে এখন উদ্ভ্রান্তের মতো প্রলাপ শোনা যায়।

মতবিনিময়কালে সম্পাদক ফোরামের পক্ষ থেকে কয়েক দফা দাবি জানানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে, ই-টেন্ডারিংয়ের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞাপনসহ সকল সরকারি বিজ্ঞাপন জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে দুটি এবং জাতীয় পর্যায়ে ৬টি বাংলা এবং ২টি ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশের ব্যবস্থা করা। এ ছাড়া নামসর্বস্ব ও অনিয়মিত পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্র প্রদান বন্ধ এবং তাদের মিডিয়া তালিকাভুক্তি বাতিলের দাবি জানানো হয়।

ডিএফপির তালিকানুসারে ক্রোড়পত্র প্রদান ও যেসব জাতীয় দৈনিক ঢাকার দুই সংবাদপত্র হকার্স সমিতিতে বিতরণ ও বিক্রির জন্য দেওয়া হয়, সেগুলো ছাড়া অন্য পত্রিকায় সরকারের বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্র প্রদান বন্ধ করারও দাবি জানায় সম্পাদক ফোরাম। এ ছাড়া আরো কিছু দাবি জানানো হয় মতবিনিময় সভায়।

এ সময় তথ্যমন্ত্রী দাবিগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হবে বলে আশ্বাস দেন।

এ সময় বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরামের সদস্যদের মধ্যে অনেকেই আলোচনায় অংশ নেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ফারুক আহমেদ তালুকদার, রিমন মাহফুজ, দুলাল আহমদ চৌধুরী, কাজী নাছির উদ্দিন বাবুল, মীর মনিরুজ্জামান, এস.এম. মাহবুবুর রহমান, নাজমুল আলম তৌফিক, নাসিমা খান মন্টি, আহসান উল্লাহ, কে. এম. বেলায়েত হোসেন, ড. এনায়েত কাসিম, মফিজুর রহমান খান বাবু, মাহমুদ আনোয়ার হোসেন, মো. আশ্রাফ আলী, শরিফ শাহাবুদ্দিন এবং আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রমুখ।