বাংলাদেশে প্রথম করোনা টিকা নিয়ে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তা। আজ বুধবার বিকেলে তাকে দিয়ে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়।
টিকা নিচ্ছেন রুনু, সাহস দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
এদিন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথা বলেন রুনুর সঙ্গে। কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি তাকে উৎসাহ প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী।
সরাসরি সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানে দেখা যায়, কথোপকথনের এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী রুনুর কাছে জানতে চান, ভয় পাচ্ছ না তো? জবাবে মাথা নাড়িয়ে রুনু বলেন, না। এরপর টিকা নেন রুনু। পরে তাকে ‘সুস্থ থাকো, ভালো থাকো’ বলে কথা শেষ করেন প্রধানমন্ত্রী।
একইভাবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে টিকা নেয়া অপর ৪ জনের সঙ্গেও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারা হলেন- ডা. আহমেদ লুৎফুল মোবেন (কুর্মিটোলা হাসপাতালের চিকিৎসক), অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা (স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক), দিদারুল ইসলাম (ট্রাফিক পুলিশ মতিঝিল বিভাগ) ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরান হামিদ (সেনাবাহিনী)।
টিকা নিচ্ছেন চারজন, দিচ্ছেন একজন
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর আরো ২১ জনকে কর্মসূচির প্রথম দিনে টিকা দেয়া হয়। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ রয়েছেন। তাদেরকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত ও ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত টিকা দেয়া হয়।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে কুর্মিটোলা ছাড়াও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে টিকাদার কর্মসূচি চলবে। এসব হাসপাতালে অগ্রাধিকার পাওয়া ৫ শতাধিক স্বাস্থ্যকর্মীকে টিকা দেয়া হবে।
টিকা নিবন্ধন প্রক্রিয়া
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ব্যাপকভিত্তিক টিকাদান কর্মসূচি আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি দেশের ৬৪ জেলায় শুরু হবে। আজ থেকেই টিকার ব্যবস্থাপনা অ্যাপ ও ওয়েবসাইট চালু হয়েছে। টিকা নিতে আগ্রহীদের অনলাইনে নিবন্ধন করতে বলা হয়েছে। তবে এ কর্মসূচি কত দিন চলবে, তা নিশ্চিত করা হয়নি।
গতকাল মঙ্গলবার ভারত থেকে আসা টিকা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নিরাপদ প্রমাণিত হওয়ায় ব্যবহারের অনুমতি দেয়ার কথা জানানো হয়। সরকারের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান জানান, প্রথম চালানের ৫০ লাখ ডোজ ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
করোনা টিকা, বেক্সিমকো ও সেরামের লোগো
ইতোমধ্যে দেশে সেরামের টিকার ৭০ লাখ ডোজ এসে পৌঁছেছে। এর মধ্যে গত ২০ জানুয়ারি ভারত সরকারের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে এসেছে ২০ লাখ ডোজ। বাকি ৫০ লাখ গত সোমবার এসেছে। এগুলো বাংলাদেশ সরকারের কেনা। এ ছাড়া প্রতিমাসে ৫০ লাখ করে মোট ৩ কোটি ডোজ টিকা বাংলাদেশে আসবে।