মহামারিতে অন্যরকম বর্ষবরণ

বাংলা নতুন বছর ১৪২৮ শুরু হয়েছে। আজ পহেলা বৈশাখ। গত বছরের মতো এবারো পহেলা বৈশাখ এসেছে করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারির মধ্যে। ফলে এ বছরও ঘরবন্দী অবস্থায় পহেলা বৈশাখ উদযাপিত হচ্ছে। অনলাইন প্ল্যাটফর্মেই পালিত হচ্ছে বাঙালির নতুন বছরের প্রথম দিন।

বর্ষবরণের ডিজিটাল আয়োজনে ছায়ানটের সভাপতি সন্‌জীদা খাতুন

বর্ষবরণে গত বছরের মতো এবারো রমনার বটমূলে বসেনি ছায়ানটের বৈশাখ বরণে ঐতিহ্যবাহী আয়োজন। বরং তা সম্পন্ন করতে হয়েছে অনলাইনে।

আজ বুধবার সকালে ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেল এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) এই আয়োজনটি সম্প্রচার করা হয়।

পুরোনো ও নতুন পরিবেশনের মিশ্রণে বাংলা বর্ষবরণের প্রতীকী, সংক্ষেপ ও ডিজিটাল আয়োজনটি সাজানো হয়। অনুষ্ঠানটি সাজানো ছিল বিশেষ করে মানুষের মঙ্গল কামনা এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে উজ্জীবনী গান, বাণী ও কথন দিয়ে।

আয়োজনের শুরুতেই ইউসুফ আলী খান রাগালাপে সরোদবাদন করেন। এরপর ছায়ানটের বড়দের দল 'পূর্বগগনভাগে দীপ্ত হইল সুপ্রভাত' সম্মেলকভাবে রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করে। একক রবীন্দ্রসঙ্গীত 'অন্ধকারের উৎস হতে' পরিবেশন করেন আব্দুল ওয়াদুদ। ছায়ানটের ছোটদের দল উপস্থাপন করে 'এলো এলো রে বৈশাখী ঝড়' সম্মেলক নজরুল গীতি। এ ছাড়া আয়োজনে অন্যান্য শিল্পীরা বিভিন্ন পরিবেশনা উপস্থাপন করেন। সবশেষে কথন পর্বে অংশ নেন ছায়ানট সভাপতি সনজীদা খাতুন।

বর্ষবরণের ডিজিটাল আয়োজনে ছায়ানটের সভাপতি সন্‌জীদা খাতুন

নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, এ বছর আমরা আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতার অর্ধশতবর্ষ পূর্ণ করছি। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে নববর্ষের প্রথম প্রভাতে আপনারা ছায়ানটের প্রীতি ও ভালোবাসা গ্রহণ করুন। নগরজীবনে নববর্ষকে আবাহন জানানোর জন্য ১৯৬৭ সাল থেকে ছায়ানট রমনার বটমূলে যে সুর ও বাণীর আয়োজন করে আসছে, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে তাতে প্রথম ছেদ পড়ে। আর গত বছর মহামারির কারণে দ্বিতীয় ছেদ পড়ে।

সনজীদা খাতুন বলেন, করোনা সংক্রমণের কারণে এ বছরও অনলাইনে অর্থাৎ সীমিত পরিসরে আয়োজিত হচ্ছে বাঙালীর প্রাণের এ উৎসব। কোনো আমেজ নেই, কারণ আজ সর্বজনের অন্তরে সংক্রমণের শঙ্কা আর স্বজন হারানোর বেদনা। তবে বাঙালি জীবনে নিছক নববর্ষ উদযাপন নয় পহেলা বৈশাখ। আত্মপরিচয়ের সন্ধানে যে পথপরিক্রমায় অংশ নিয়েছে বাঙালি, মসৃণ ছিল না সে পথ। বাঙালি জাতীয়তাবাদের যে জোয়ার বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সৃষ্টি হয়েছিল, সর্বধর্মের বাঙালিকে সেই ঐক্যসূত্রে যুক্ত করে নববর্ষের আয়োজন, করেছে নতুন মাত্রা যোগ।