বিপদ বাড়ছে ঢাকার ব্যাচেলরদের

ঢাকাসহ সারা দেশে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে বিপদে পড়ছে রাজধাধানীর ব্যাচেলররা। কর্মসূত্রে বা পড়াশোনার জন্য পরিবার ছেড়ে ঢাকা এসে এমনিতেই বাসা পেতে ঘাম ছুটে যায় তাদের। তার সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে এখন ব্যাচেলর ভাড়াই দিতে চাচ্ছেন না বাড়িওয়ালারা। যারা আগে থেকেই থাকেন, তাদের অনেককে মাত্র কয়েকদিনের নোটিশে বাসা ছেড়ে দিতে বলা হচ্ছে।

সর্বশেষ ঢাকার কল্যাণপুরের একটি মেসে অভিযান চালায় পুলিশ। তাতে নয়জন সন্ত্রাসী মারা যান। এই ঘটনার পর কল্যাণপুর এলাকার বাড়িওয়ালারা ব্যাচেলরদের বাড়ি ভাড়া না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিছু কিছু বাড়ি থেকে ব্যাচেলরদের চলে যেতে বলা হয়েছে।

গুলশানের ঘটনায় অংশ নেয়া সন্ত্রাসীরাও ঢাকার বিভিন্ন ম্যাচে থাকতেন বলে তথ্য পেয়েছে পুলিশ। এরপর থেকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকার মেসে নিয়মিত নজরদারী করছে পুলিশ।

কল্যাণপুরে অভিযান চালানোর কয়েক দিন আগে শেওড়াপাড়া থেকে একজন বাড়িওয়ালাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার অপরাধ ছিলো, বাড়িতে থাকা ব্যাচেলরদের তথ্য সংগ্রহে না রাখা। গুলশান হামলায় অংশ নেয়া একাধিক সন্ত্রাসী ওই বাড়িতে থাকতেন বলে দাবি করেছে পুলিশ।

এই সব ঘটনায় সাধারণ ব্যাচেলরদের উপর বাড়ছে সন্দেহ। পুলিশ বলছে, তাদের পক্ষ থেকে ব্যাচেলরদের কাছে বাড়ি ভাড়া দিতে কোনো ধরনের কড়াকড়ি নেই। তারপরও বিভিন্ন এলাকার বাড়িওয়ালারা তাদের বাড়ির সামনে ‘ব্যাচেলর ভাড়া দেয়া হয় না’ লেখা প্লাকার্ড ঝুলিয়ে রেখেছেন।

উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বাড়িওয়ালা কর্তৃক প্রতিটি ব্যাচেলরের জাতীয় পরিচয়পত্র এবং চাকরি বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্রের কপি সংগ্রহ করে রাখা হচ্ছে। তারপরও চলছে নানা রকমের নজরদারী। কোনো কোনো ক্ষেত্রে লংঘন করা হচ্ছে ব্যক্তিগত নিরাপত্তাও।

দেখা যাচ্ছে, কেয়ারটেকারের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হচ্ছে পরিচয়পত্র। সেই পরিচয়পত্র ঠিক কিভাবে সংরক্ষিত হচ্ছে কিংবা অন্য কারো কাছে বেহাত হয়ে যাচ্ছে কিনা, এ বিষয়ে শঙ্কায় পড়ে যাচ্ছেন অনেকে।

ঢাকায় মোট কতো ব্যাচেলর থাকেন, তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে এই সংখ্যাটা যে কয়েক লক্ষ হবে এটা নিশ্চিত। অবিবাহিত ছাত্র ও চাকরিজীবীদের সঙ্গে অনেক বিবাহিত চাকরিজীবীরাও ঢাকায় ব্যাচেলর হিসেবে থাকেন। বর্তমান পরিস্থিতির ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে সবাইকে।

পুলিশ অবশ্য বলছে, তারা যে কোনো মেসে অভিযান চালাচ্ছেন না। সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলেই কেবল বিভিন্ন মেসে নজরদারী করা হচ্ছে। ব্যাচেলরদের বাসা ভাড়া দেয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ কেবল বলছে, ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ করে তা সংশ্লিষ্ট থানায় জমা রাখতে। কিন্তু বিপত্তিটা বাধাচ্ছেন অনেক বাড়িওয়ালা। তারা সরাসরি ব্যাচেলরদের বাড়ি ভাড়া দেয়া বন্ধ করে দিচ্ছেন।

আপনি আরো পড়তে পারেন

‘তারেক রহমানের মেয়ের কাছে পরাজিত হবেন শেখ হাসিনা’

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার হচ্ছে বিনোদন কেন্দ্র

সালমান এফ রহমানের বাড়ি নিলামে

আইনমন্ত্রী: জঙ্গীসংক্রান্ত মামলার জন্য আলাদা সেল

‘এক যুগে এমন বন্যা আর দেখি নাই’