কেন বাসায় গেলেন খালেদা জিয়া?

চিকিৎসা শেষে দীর্ঘ ৫৩ দিন পর রাজধানীর গুলশানের ভাড়া বাসা ফিরোজায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এতদিন রাজধানীর বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি।

৫৩ দিন পর নিজ বাসা ফিরোজায় ফিরলেন খালেদা জিয়া

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দিবাগত রাত ৮টা ৪০ মিনিটে তিনি বাসায় ফেরেন। এর আগে রাত সোয়া ৮টার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে বাসার পথে রওনা দেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

এখন প্রশ্ন উঠেছে যে, বিএনপি চেয়ারপারসন কি পুরোপুরি সুস্থ? অর্থাৎ সুস্থ হয়েই কি তিনি বাসায় ফিরেছেন? যেখানে শুক্রবারও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেন যে, নেত্রীর অবস্থা ‘ঝুঁকিপূর্ণ’, সেখানে একদিনের ব্যবধানে কী কারণে বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া?

৫৩ দিন পর নিজ বাসা ফিরোজায় ফিরলেন খালেদা জিয়া

এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের প্রধান ডা. এফ এম সিদ্দিকী বলেন, উনি (খালেদা জিয়া) ৫৩ দিন হাসপাতালে ছিলেন। এই সময়ে উনি কতটা জটিলতার মধ্য দিয়ে গেছেন, সে সম্পর্কে সবারই ধারণা ছিল না। অনেক কনফিউশন (সংশয়) ছিল।

এদিন খালেদা জিয়ার বাসভবনের সামনে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি আারো বলেন, খালেদা জিয়ার ব্লাড কালচার করে দেখা গেছে, যেসব জীবাণু হাসপাতালে থাকে, সেগুলো তাকে আক্রমণ করছে। হাসপাতালের কিছু নার্স, চিকিৎসক ও স্টাফ গত দুই দিন ধরে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে (করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরন) আক্রান্ত হচ্ছেন।

বিএনপির লোগো

এ অবস্থায় হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ড (খালেদা জিয়ার জন্য গঠিত) সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, বর্তমান পরিস্থিতিতে উনাকে হাসপাতালে রাখাটা আরো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হবে। সে কারণেই তাকে বাসায় নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে খালেদা জিয়াকে ৫ ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে। অথচ উনার সারা জীবনে রক্ত দেওয়ার নজির নেই, বলেন ডা. এফ এম সিদ্দিকী।

প্রসঙ্গত, গত ১১ এপ্রিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়। প্রথম কয়েক দিন বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি। গত ১৪ এপ্রিল রাতে সিটি স্ক্যান করার জন্য খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে বাসায় ফিরে গেলেও ২৭ এপ্রিল শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আবারো পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ওই হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ দফায় চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

খালেদা জিয়ার বাসায় ফেরা নিয়ে নেতাকর্মীদের ভিড় না করার জন্য বলা হয়, তাই মহাসচিবসহ গুটি কয়েক সিনিয়র নেতা উপস্থিত ছিলেন

চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক পর্যায়ে খালেদা জিয়ার অবস্থার আরো অবনতি হয়। এ অবস্থায় গত ৩ মে তাকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয় এবং রাখা হয় অক্সিজেন সাপোর্টে। এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৬ মে করোনামুক্ত হন খালেদা জিয়া। তবে কোভিড পরবর্তী এবং আগের শারীরিক জটিলতার কারণে সতর্কতা হিসেবে হাসপাতালে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি।