আপনি পড়ছেন

সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি একদিন বাড়িয়ে দুই দিন করা হচ্ছে। জাতীয় নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখায় বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। রূপরেখাটি গত ১৩ সেপ্টেম্বর অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যা ২০২৩ সাল থেকে বাস্তবায়ন শুরু হবে।

government logoসরকারের লোগো

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. মশিউজ্জামান। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় চাইলে আগেও সপ্তাহে দুই দিন ছুটি চালু করতে পারে বলে জানিয়েছে এনসিটিবি সূত্র। এ সংক্রান্ত এক প্রস্তাবে ২০২০ সালে অনুমোদন দেয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় দুটি।

খসড়ায় অনুমোদনের দিনই সংবাদ সম্মেলন করে নতুন শিক্ষাক্রমের বিস্তারিত তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি জানান, আগামী বছর থেকে নতুন শিক্ষাক্রমের পাইলটিং শুরু হবে। এক্ষেত্রে প্রাথমিকে প্রথম শ্রেণি এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পাইলটিং শুরু হবে। আর প্রয়োগ শুরু হবে আগামী ২০২৩ সাল থেকে। ২০২৫ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাক্রম বাস্তায়ন করা হবে।

ntctb logoজাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, এনসিটিবি

বিদ্যমান ব্যবস্থায় সব ছুটি ধরে বছরে ক্লাস হয় ২১৫ দিন, যা নতুন কারিমুলামে কমে আসবে ১৮৫ দিনে। এনসিটিবি বলছে, আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে ছুটি বাড়লেও কমছে না ‘লার্নিং আওয়ার’। এতে শিক্ষা কার্যক্রমের ক্ষতি হবে না, বরং শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক চাপ কমবে।

নতুন রূপরেখায় জানানো হয়েছে, সাপ্তাহে দুদিন ছুটি ধরে ১ম-৩য় শ্রেণিতে বছরে মোট শিখন হবে ৬৮৪ ঘণ্টা এবং ৪র্থ-৫ম শ্রেণিতে ৮৫৫ ঘণ্টা। মাধ্যমিকে ৬ষ্ঠ-৮ম শ্রেণির শিখন হবে ১ হাজার ৫০ ঘণ্টা এবং ৯ম ও ১০ম শ্রেণিতে ১ হাজার ১১৭ ঘণ্টা। এ ছাড়া উচ্চ মাধ্যমিকের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে ১ হাজার ১৬৭ ঘণ্টা শিখন হবে।

শিক্ষাক্রম প্রণয়নের সময় বিষয়টি নির্ধারণ করা দেয়া হবে উল্লেখ করে রূপরেখায় বলা হয়, জাতীয় দিবসগুলোতে খোলা থাকবে বিদ্যালয়, দিবস পালনের কর্মসূচিও শিক্ষার অংশ বিবেচনা করা হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৩ দেশসহ উন্নত বিশ্বের সঙ্গে মিল রেখেই এটি করা হচ্ছে।

জানা যায়, বর্তমানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার রয়েছে। এর সঙ্গে শনিবারও ছুটি করার প্রস্তাব দেয় এনসিটিবি। বিষয়টি পর্যালোচনা করে গত বছরের ৬ অক্টোবরের বৈঠকে সম্মতি দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাপ্তাহিক সরকারি ছুটি দুই দিন হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একদিন ছুটি। এ জন্য আরেক দিন বাড়িয়ে ছুটি সমন্বয় করা হচ্ছে।

dr dipu moniশিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, ফাইল ছবি

বাংলা একাডেমি প্রণীত ১৪২৭-২৮ বঙ্গাব্দের বর্ষপঞ্জি, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন ধর্মীয় পর্বের তালিকা, আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং আরবি মাসের ইসলামী পর্বগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে ২০২১ সালের ছুটির খসড়া তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে।

সেই তালিকা অনুযায়ী, শবে বরাত ২৯ মার্চ সোমবার, শবে কদর ১০ মে সোমবার, ঈদুল ফিতর ১৩ মে বৃহস্পতিবার, ঈদুল আজহা ২০ জুলাই মঙ্গলবার, আশুরা ১৯ আগস্ট বৃহস্পতিবার, ঈদে মিলাদুন্নবী ১৯ অক্টোবর মঙ্গলবার।

এ ছাড়া বিভিন্ন জাতীয় দিবস ও গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় দিবসের ছুটি এ তালিকায় রয়েছে। এসব ছুটির মধ্যে ছয়টি সাপ্তাহিক ছুটির দিন (চারটি শুক্রবার ও দুটি শনিবার) অন্তর্ভুক্ত। বাংলা নববর্ষ ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় দিবস উপলক্ষে আট দিন নির্বাহী আদেশের ছুটির মধ্যে এক দিন সাপ্তাহিক ছুটি রয়েছে। ফলে সাধারণ ছুটি ও নির্বাহী আদেশের ছুটি সবমিলিয়ে কার্যত ১৫ দিন।