আপনি পড়ছেন

বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে উপাচার্য, ভিসি পদত্যাগ না করায় আমরণ অনশন করছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, শাবি শিক্ষার্থীরা। গত বুধবার থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়, চলছে বিক্ষোভও। এর মধ্যেই আজ শুক্রবার করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে স্কুল-কলেজ ও সমমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার।

shahjalal university student hunger strike 1শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বসতে ঢাকায় আসছে শিক্ষার্থীরা

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের মতো করে ব্যবস্থা নেবে বলে জানানো হয়েছে। ফলে নিজেদের দাবি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে আলোচনা করতে ঢাকায় আসছেন শাবি শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল। আজ শুক্রবার বিকালে ঢাকার পথে রওনা দেন তারা।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনশন ও আন্দোলন অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এদিন দুপুরে অনশনস্থলে যান আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ও দলটির সিলেটের নেতারা। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি ভিসি প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমদের সঙ্গে কথা বলেন তারা।

পরে শফিউল আলম নাদেল জানান, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একজন শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। এ সময় তাদের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় যেয়ে আলোচনার প্রস্তাব দেন মন্ত্রী, তাতে রাজি হন ওই শিক্ষার্থী।

এরপর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করতে তাদের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় যাবে। ভিসির পদত্যাগের দাবি নিয়ে কথা বলবেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাসে আন্দোলন অব্যাহত রাখার বিষয়টিও তুলে ধরবেন।

এ ছাড়া শিক্ষামন্ত্রী সঙ্গে বৈঠক সফল না হলে অর্থাৎ দাবি পূরণ না হলে অনশন ও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তবে মন্ত্রী দাবি মেনে নিলে এ থেকে সরে আসার কথাও বলেছেন তারা।

shahjalal university student hunger strikeআমরণ অনশনে শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ ৩ দফা দাবিতে গত ১৩ জানুয়ারি আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যেই ১৬ জানুয়ারি ভিসিকে অবরুদ্ধ করার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়, তাতে কমপক্ষে ৩০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। এরপর প্রশাসন অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে এবং পরদিন দুপুর ১২টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়।

তবে এসবের প্রতিবাদে গত রোববার দিবাগত রাত থেকেই উপাচার্য বিরোধী আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তারই ধারাবাহিকতায় হল ত্যাগ না করে ভিসির পদত্যাগ, শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য ভিসির প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে আন্দোলন চলে।

এ ছাড়া গত ১৭ জানুয়ারি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ভিসির কার্যালয় এবং প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা দেন। একই দিন দুপুরে ভিসিকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে এবং হল বা ক্যাম্পাস ছেড়ে কোনো শিক্ষার্থী যাবে না বলেও উল্লেখ করেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে, অনশনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে অন্তত ১১ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে। অনশনে বসার ৪৮ ঘণ্টা অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও অনশন ভাঙেননি কোনো শিক্ষার্থী। ফলে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অসুস্থ হয়ে পড়া ১১ শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।