আপনি পড়ছেন

করোনার বিধিনিষেধের মধ্যেই চলছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। ভিসির পদত্যাগের দাবিতে সপ্তাহখানেক ধরে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় আলোচিত ভিসি ফরিদ উদ্দিনের সাথে সহমর্মিতা দেখিয়ে পদত্যাগ করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরাও। এ খবরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেছেন, পরিস্থিতি যদি তাই হয় তাহলে এতে তাদের কোনো আপত্তি নেই।

sylhet rallyকাফন পরে শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

জানা গেছে, সার্বিক বিষয় নিয়ে গত বৃহস্পতিবার এক ভার্চ্যুয়াল সভার আয়োজন করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভিসিদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ। ওই সভায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা শাবিপ্রবির ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পক্ষে অবস্থান নেন। তার প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে তারা বলেন, চলমান ঘটনাপ্রবাহের কারণে শাবি ভিসিকে যদি পদত্যাগ করতে হয়, তাহলে তারাও পদত্যাগ করতে প্রস্তুত। ওই সভায় দেশের ৫০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি উপস্থিত ছিলেন। শাবিপ্রবির ভিসি ফরিদ উদ্দিনও এতে অংশ দেন।

সভায় উল্লেখ করা হয়, শাবিতে ভিসির বিরুদ্ধে যা হয়েছে- এভাবে চললে বিশ্ববিদ্যালয়ই চালানো যাবে না। কারণ সব বিশ্ববিদ্যালয়েই একই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তাই ফরিদ উদ্দিনকে যদি পদত্যাগ করতে হয়, তাহলে অন্যরাও পদত্যাগ করতে প্রস্তুত আছেন। পরে অবশ্য যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আনোয়ার হোসেন এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানান, এ ধরনের কথা উঠলেও এ বিষয়ে কোনো ধরনের প্রস্তাব গৃহীত হয়নি।

sylhet police 1শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলা

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, এ রকম কথা আমি শুনিনি। তবে এটাও ঠিক একজন শিক্ষক যখন লাঞ্ছিত হন, তখন সারা দেশের শিক্ষকেরাও নিশ্চয়ই ব্যথিত হন। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে সুষ্ঠু সমাধানে যেতে হবে।

তবে শাবিপ্রবি আন্দোলনকারীরা মনে করেন, তারা যৌক্তিক আন্দোলনই করছেন। এ অবস্থায় অন্য ভিসিরাও যদি এই ভিসির কর্মকাণ্ডের দায়িত্ব নিজেদের ওপর নিতে চান তাহলে এতে তাদের কোনো আপত্তি নেই।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের আন্দোলন যৌক্তিক। একজন ভিসি কী করেছেন, সেটি যদি সবাই নিজের ঘাড়ে নিতে চান, তাহলে সবারই পদত্যাগ করা উচিত।

জানা গেছে, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সূত্রপাত হয় ১৩ জানুয়ারি। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী।

১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় এ আন্দোলনে হামলা চালায় ছাত্রলীগ। পরের দিন বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে ভিসিকে অবরুদ্ধ করেন। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক লাঠিপেটা করা হয় এবং তাদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ।

এরপর ১৫ জানুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। তবে শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখেন। তারা এখন আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। এরই মধ্যে ২৩ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে।