রেমডিসিভির ওষুধকে কার্যকর বললেন বাংলাদেশি চিকিৎসক
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মরণঘাতী করোনাভাইরাসে সংক্রমিতদের চিকিৎসা দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আক্রান্তদের রেমডিসিভির নামে ওষুধ প্রয়োগ করবে তারা। এর জন্য বিশেষ আইনের ব্যবস্থাও করেছে তারা। যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) কোনো ওষুধের অনুমতি দেয়ার আগে সাধারণত দীর্ঘ সময় নেয়। কিন্তু এবার করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে তড়িঘড়ি করে রেমডিসিভির অনুমতি দিয়ে দিলো তারা। রেমডিসিভিরকে একটি কার্যকর ওষুধ বলছেন আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশি চিকিৎসক ডা. আরমান রহমানও।
২০০৭ সালে সুইডেনের উমিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে ইমিউনোলজিতে পিএইচডি সম্পন্ন করেছেন তিনি। বর্তমানে ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিন, আয়ারল্যান্ডে রিসার্স ফেলো হিসেবে কর্মরত আছেন। এর আগে ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজে ভিজিটিং রিসার্স ফেলো ও ডাবলিনে ডিসিইউতে পোস্টডক্টরাল ফেলো হিসেবে কাজ করেছেন।
ডা. আরমান রহমান বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এফডিএ রেমিডিসিভির ওষুধের জরুরি অনুমোদন দিয়েছে। ভাইরাসটির প্রতিষেধক এখনও আবিষ্কার হয়নি। বিশ্বজুড়ে গবেষকরা পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কোনো কোনো গবেষণা ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পর্যায়ে আছে। এই পরিস্থিতিতে এই ওষুধের অনুমোদনে অনেককেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন। এখন প্রতিষেধক আবিষ্কার না হওয়ার আগ পর্যন্ত আমাদের এর ওপর ভরসা রাখতে হবে।
এর মূল্য সম্পর্কে তিনি বলেন, এর সটিক মূল্যমান এখনো জানা যায়নি। তবে চীনে এর মূল্য অনেক বেশি ছিল। যুক্তরাষ্ট্রেও কাছাকাছি দামেই বিক্রি হচ্ছে। বাংলাদেশে ওষুধটি স্থানীয়ভাবে প্রক্রিয়াজাত করা হবে। সে রকম কিছু হলে মূল্য কম হবে। যা সাধারণের নাগালের মধ্যে আসতে পারে।
রেমডিসিভির সম্পর্কে তিনি বলেন, এফডিএ সাধারণত একটু ওষুধের অনুমতি দিতে কয়েক বছর সময় নেয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৮-১০ বছর পর্যন্ত সময় নেয়। কিন্তু এবার করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বিশেষ নিয়ম করে রেমডিসিভির অনুমতি দিতে বাধ্য হয়েছে তারা। সাধারণত এমন হয় না। এটা ব্যতিক্রম। যুক্তরাষ্ট্রে দ্রুততার ভিত্তিতে কিছু মানুষের ওপর এই ওষুধটি প্রয়োগ করা হয়েছে। সেখানে ভালো ফল পাওয়ায় এর অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এই অনুমোদনের কারণে বিশ্বের যেকোনো দেশে এর ব্যবহার সম্ভব হবে।
রেমডিসিভির কি ইবোলার ওষুধ? এমন প্রশ্নের জবাবে আরমান রহমান বলেন, হ্যাঁ এটি ইবোলার ওষুধ। গিলিয়েড কোম্পানি ইবোলার জন্য এটি স্পনসর করেছিল। করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীদের ওপর সাম্প্রতিক সময়ে এর প্রয়োগ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হয়েছে। পরে এফডিএ অনুমতি দিলো। এখন বিশ্বের যে কেউ এর ব্যবহার করেত পারবে।
এফডিএ’র অনুমোদন দেয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রের সংক্রামক ব্যাধিবিষয়ক শীর্ষ গবেষক ডা. অ্যান্থনি ফাউসি বলেন, প্রাথমিকভাবে পরীক্ষামূলক ট্রায়ালে যে ফলাফল দেখলাম, তাতে এই ওষুধের ব্যাপারে আমি আশাবাদী। বিজ্ঞানীরা ধাপে ধাপে এগুচ্ছেন, যথাযথ প্রক্রিয়া শেষ হলে তবেই নিশ্চিত করে মন্তব্য করা যাবে। এখন পর্যন্ত যেটুকু তথ্য এসেছে তাতে বলা যায়, এটি করোনা সারানোর সময়কে অনেকখানি কমিয়ে আনবে। প্রক্রিয়া শেষে এটা হবে একটা ‘দুর্দান্ত আবিষ্কার’।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা যখন রেমডিসিভির নিয়ে আশা দেখাচ্ছিলেন, তখন চীন এটিকে বলছিল ‘অকার্যকর’। তার আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও প্রথম পর্যায়ের ট্রায়ালে এটিকে ‘ব্যর্থ’ বলে অভিহিত করেছে।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর