আপনি পড়ছেন

বসনিয়ার শরণার্থী শিবিরে তাঁবুতে থাকা ইউরোপে অভিবাসন-প্রত্যাশী কয়েক ডজন বাংলাদেশি তীব্র শীত ও তুষারপাতের মধ্যে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। ক্রোয়েশিয়ার সীমান্তবর্তী দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ভেলিকা ক্লাদুসার শিবিরে এমন অবস্থা দেখা দিয়েছে।

bangladeshi in bosniaশীত-তুষারপাতে বসনিয়ায় বাংলাদেশি শরণার্থীরা

ওই শরণার্থী শিবিরে অবস্থানরত কয়েকজন বাংলাদেশির বরাত দিয়ে আজ শুক্রবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন দেশটিতে থাকা শিক্ষার্থী নূরুল হুদা হাবীব। তিনি জানান, প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যে বাংলাদেশিরা খাবার ও শীতবস্ত্রের সংকটে রয়েছেন।

দেশটির প্রশাসন, স্থানীয় মানুষ ও এনজিওর দেয়া সহায়তা অপ্রতুল উল্লেখ করে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী হাবিব জানান, অনেক বাংলাদেশি সিরিয়া, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের শরণার্থীদের ছিনতাই ও ছুরিকাঘাতের শিকার হচ্ছেন।

স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, ভেলিকা ক্লাদুসার শিবিরের অভিবাসন-প্রত্যাশীরা তীব্র শীতের কারণে চরম সংকটে পড়েছেন। তাদের কাছে ঠাণ্ডা থেকে বাঁচার মতো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নেই।

bangladeshis in bosniaবসনিয়ার পাহাড়ি জঙ্গলে বাংলাদেশিদের বসবাসের দৃশ্য

স্থানীয় এনজিও ‘নো নেম কিচেন’ জানিয়েছে, শরণার্থী শিবিরটিতে ১০০ জনের মতো বাংলাদেশি ছিলেন। গত বুধবার প্রচণ্ড তুষারপাত হলে তাদের বেশ কয়েজন অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁবুতে আশ্রয় নেয়া অনেকে এখনো তীব্র শীতে মারাত্মক সমস্যায় রয়েছেন।

ইউরোপে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়ে বসনিয়ায় আটকে পড়া কয়েক শ বাংলাদেশি প্রথমে দেশটির পাহাড়ি জঙ্গলে আশ্রয় নেন। সেখান থেকে তারা পার্শ্ববর্তী ক্রোয়েশিয়ায় ঢোকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন বার বার। এমনকি ক্রেয়েশীয় নিরাপত্তা বাহিনীর নির্মম নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন এসব শরণার্থী।

torture bangladeshis in croatiaবাংলাদেশিদের ক্রোয়েশীয় বাহিনীর নির্যাতনের দৃশ্য

ডয়চে ভেলে জানায়, স্থানীয় হোক কিংবা অভিবাসী হোক- এভাবে তাদের কুকুরের মতো পেটানো আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। এসব বাংলাদেশি স্বেচ্ছায় নাকি বাধ্য হয়ে দেশ ছেড়েছে, তা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। কিন্তু তাদের নির্যাতন করা এক্ষুনি বন্ধ হওয়া দরকার। এ জন্য সবার সোচ্চার হওয়া উচিত।

ভেলিকা ক্লাদুসায় বাংলাদেশিসহ দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের বিপুল সংখ্যক শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে। এসব মানুষ অবৈধপথে ক্রোয়েশিয়া পার হয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যাওয়ার জন্য বসনিয়ায় অবস্থান করছে মাসের পর মাস। সেখানে তারা খুবই মানবেতর জীবনযাপন করছেন।