প্রকৃতির রয়েছে নিজস্বতা। যার মাধ্যমে পরিবেশের ভারমাস্য রক্ষা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। প্রকৃতি থেকে সবচে বেশি সুবিধা ভোগ করে থাকে মানুষ। আর এই প্রকৃতিতে বসবাস করা প্রাণী, পাখি ও পোকা পরিবেশ-প্রতিবেশ সুরক্ষার পাশাপাশি সেবা করে যাচ্ছে মানুষেরও। যা অনেক ক্ষেত্রেই অজানা রয়ে গেছে বেশিরভাগ মানুষের। তেমনই কিছু তথ্য জানাতে এই আয়োজন।

spider

অমেরুদন্ডী শিকারী কীট মাকড়শা বেশ উপকারী। এর জাল এন্টিসেপটিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়, এতে প্রচুর ভিটামিন 'কে' থাকায় রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। শুধু ক্ষত সারাতেই নয় লিগামেন্টের চোটেও মাকড়শার জাল বেশ উপকারী। আবার প্রচুর পরিমাণে ক্ষতিকর পোকা ও মশা-মাছি খেয়ে মাকড়শা মানুষের জন্য সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিতে ভূমিকা রাখে। একটি মাকড়শা বছরে মানুষের সমান খাবার খায়, এর সবই ক্ষতিকর পোকামাকড়। ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার মতো ভাইরাস ছড়ানো মশা দমনেও মাকড়শা কার্যকরী ভূমিকা রাখে। তাই বাসা বাড়ির দেয়ালের ঝুল পরিষ্কার করতে গিয়ে উপকারী এই মাকড়শা যেনো মারা না যায় সেদিকে নজর দেয়া উচিত।

vultures

প্রকৃতির পরিচ্ছন্নকর্মী হিসেবে পরিচিত শকুনের কথা জানা আছে তো সকলেরই। এই প্রাণীটি মরা পশু-পাখি খেয়ে প্রতিবেশ সুরক্ষা রাখে। অনেকটা ড্রোনের মতোই আকাশ থেকে নজর রাখে মরা প্রাণী ওপর। পরে দলবেঁধে খেয়ে নেয়। তাই শকুন পরিচ্ছন্নতাকর্মী, প্রকৃতির ঝাড়ুদার, পরিবেশ রক্ষাকারী পাখি নামে পরিচিতি।

earthworm

প্রকৃতির লাঙল হিসেবে পরিচিত কেঁচো একটি উপকারী প্রাণী। এর সার জমির উর্বরতা বাড়ায়, কেঁচোর মাটি খোঁড়া মাটিতে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ায় ও উচ্চ ফলনে ভূমিকা রাখে। অন্যদিকে দৃষ্টিনন্দন পোকা প্রজাপতি। পোকাটির নানা বর্ণের জন্য পার্ক, চিড়িয়াখানা, জাদুঘর ও সংরক্ষণ প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এছাড়াও এটি বিভিন্ন ফুলের মধু আহরণের মাধ্যমে পরাগায়নে ভূমিকা রাখে।

butterfly

পলিথিনের ব্যবহার বাড়া নিয়ে চিন্তিত গোটাবিশ্বের পরিবেশবাদীরা।কিন্তু গবেষণা বলছে, শুঁয়োপোকা ৯২ মিলিগ্রাম প্লাস্টিক মাত্র ১২ ঘন্টায় ক্ষয় করতে সক্ষম! ফলে পরিবেশ সুরক্ষায় শুঁয়োপোকাও বেশ উপকারী।

caterpillar

বিশ্বে ৪,৪৭০ প্রজাতির ব্যাঙ থাকলেও বাংলাদেশে আছে মাত্র ৫০ প্রজাতি। ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে এটি যেমন মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভূমিকা রাখে তেমনি এটি ফসলের সুরক্ষা দেয়। খাদ্যজালে এটি মধ্যম স্তরের প্রাণী। মশার শুককীট খেয়ে পরিবেশ রক্ষা করে ব্যাঙ। ফলে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গুবাহী মশা থেকে রক্ষা পেতে পারে মানুষ। 

frog

১৯৫৮ সালে গণএকটি হঠকারী সিদ্ধান্ত নেয় চীন। নিধন করে চড়ুই পাখি। কারণ হিসেবে বলা হয়, দশ লাখ চড়ুই পাখির খাবার বাঁচিয়ে ৬০ হাজার ব্যক্তির খাদ্যের যোগান সম্ভব হবে, কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ১৯৬১-৬২ সালে চরম দুর্ভিক্ষ দেখা দেয় দেশটিতে, কারণ পোকার আক্রমণে ফসল উদপাদনই কমে যায়। মৃত্যু আর দুর্ভিক্ষের এক ভয়াবহতার পর সরকার ভুল বুঝতে পেরে সোভিয়েত থেকে চড়ুই আমদানি করে। উপকারী এই চড়ুই পাখিটি নানা রকম ক্ষতিকর পোকা ও সেগুলোর শুককীট খেয়ে পরিবেশ ও ফসলের সুরক্ষা দিয়ে থাকে।

sparrow

আদিকাল থেকেই মধুর যোগান দিয়ে আসছে মৌমাছি। নানারকম প্রসাধন সামগ্রী যেমন- কোল্ড ক্রীম, স্নো, সেভিং ক্রিম, ওষুধ ও অন্যান্য প্রসাধনী তৈরীতে বেশি ব্যবহার হয় মধু। এছাড়া ফুল থেকে মধু সংগ্রহের সময় পরাগায়ন ঘটায় মৌমাছি। ফসল রক্ষা ও জীব বৈচিত্র সংরক্ষণে পতঙ্গটির ভূমিকা রয়েছে।

honey bee

অন্যদিকে বোলতা বা ভীমরুল ফসলের নানা পোকার শুককীট খেয়ে ফসল রক্ষা করে। এজন্য কৃষিতে বোলতা ব্যবহার করে প্রাকৃতিকভাবে ফসলের ক্ষতিকর পতঙ্গ নিধন করা হয়ে থাকে। নিধনের কারণে আজ বিপন্ন গুইসাপ। কিন্তু মৃত প্রাণী ও অন্যান্য পোকা মাকড় খেয়ে এটিও পরিবেশ সুরক্ষায় দিয়ে থাকে। যা অনেক মানুষেরই অজানা।

guishap

প্রকৃতি থেকে নানান উপকারি প্রাণী, পাখি, কীট-পতঙ্গ আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। এতে প্রাকৃতিক ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ায় মানুষের জন্য নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টিতেও বাঁধা তৈরি করছে।তাই সকলের উচিত এগুলো রক্ষায় সচেতন হওয়া। এতে সুফল পাবে মানুষই। 

Discover extraordinary stories from around the world with our exceptional news coverage. From uplifting human interest stories to groundbreaking scientific discoveries, we bring you the best of the best. Stay informed about the latest breakthroughs in technology, medicine, and beyond, and explore the world's most fascinating cultures and communities. Get inspired and informed with our exceptional news coverage.