দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে আছে এডলফ হিটলারের নাম। জাত্যভিমান কীভাবে একটি জাতিকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেয় এর উৎকৃষ্ট প্রমাণ হচ্ছে জার্মানীরা। আর এর পিছনের মূল কারিগর ছিলেন ওই হিটলার। হিটলারকে নিয়ে নানান কেচ্ছা-কাহিনী প্রচলিত আছে। এর কোনোটি সত্য, আবার কোনোটি একেবারে ডাহা মিথ্যা। তবে যুদ্ধে জয়ী হবার অদম্য ইচ্ছায় এবং সেই উদ্দেশ্যে গৃহীত পদক্ষেপে হিটলার তাঁর যুগের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন অন্তত কয়েক যুগ।

hitler

নতুন নতুন নানা অস্ত্র তৈরিতে দারুণ মনোযোগ ছিলো হিটলারের। এই উদ্দেশ্যে বাঘা বাঘা বিজ্ঞানী এবং কাড়ি কাড়ি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন তিনি। সফলও হয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ই বেশকিছু যুদ্ধাস্ত্র এনে একেবারেই চমকে দেন তিনি সবাইকে। হিটলারের গোপন গবেষণাগারে তৈরি এমন কিছু যুদ্ধাস্ত্র নিয়েই এই ফিচার।

stealth bomber

স্টিলথ ফ্লাইং উইং বম্বার

প্রায় দুই হাজার পাউন্ড ওজনের সমরাস্ত্র বহন করতে সক্ষম এই বোমারু বিমানটি পুরোপুরি হিটলারের ইচ্ছায় তৈরি হয়েছিলো। তাই এর পিছনে বাজেটও ছিলো অনেক বেশি। প্রায় ৫ লাখ রাইখ। পোশাকি নাম ‘হর্টেন হো ২২৯’। হিটলারের গোপন অস্ত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম এই বিমান ৪৯ হাজার ফুট উঁচুতেও অবলীলায় ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০০ মাইল উড়তে পারত। কারণ এটির ছিলো টুইন টার্বোজেট ইঞ্জিন। স্টিলথ ফ্লাইং উইং বম্বারকে বিশ্বের প্রথম স্টিলথ উড়োজাহাজ মনে করা হয়। এটিতে ছিলো আরফোরএম রকেট। সঙ্গে ছিলো দু’টি কামান সংযোজনের ব্যবস্থা। তবে নির্মাণের পর এতে ত্রুটি ধরা পরার কারণে জার্মান সেনাদের খুব একটা কাজে লাগেনি হর্টেন হো ২২৯।

 

fritz x radio guided bomb

ফ্রিটজ এক্স রেডিও গাইডেড বম্ব

৩ হাজার ৪৫০ পাউন্ড ওজনের এই বোমাটিকে বলা হয় আধুনিক বোমার পূর্বপুরুষ। ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর ক্ষমতা রাখতো এই বোমা। ফ্রিটজ বোমায় রেডিও সিগন্যাল গ্রহণ করার জন্য রিসিভার ছিলো। যার ফলে কন্ট্রোল মেশিন থেকে সিগন্যাল পাঠিয়ে মাঝ পথে বোমার গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করা যেতো। ২০ হাজার ফুট উচ্চতা থেকে নিক্ষেপ করা ফ্রিটজ এক্স রেডিও গাইডেড বম্ব ২৮ ইঞ্চি পুরুত্বের সাঁজোয়া প্রতিরক্ষা কাঠামো ভেদ করতে পারতো। আবার অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট ব্যবস্থা ব্যবহার করেও আকাশে বোমাটির অবস্থান নির্ণয় করা সম্ভব হতো না। ১৯৪৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই ফ্রিটজ এক্স ব্যবহার করেই ‘রোমা’ নামে ইতালির একটি যুদ্ধজাহাজ ডুবিয়ে দিয়েছিল নাৎসিরা। তবে এতো বিশাল ওজনের বোমা বহনে উপযোগী বিমানের সংখ্যা কম থাকায় জার্মানীরা সদ্ব্যবহার করতে পারেনি।

 

remote control tracked mine

রিমোট কন্ট্রোলড ট্র্যাকড মাইন

কাগুজে নাম ‘রিমোট কন্ট্রোলড ট্র্যাকড মাইন’ হলেও মার্কিন বাহিনীর কাছে এর নাম ছিল ‘ডুডলবাগ’। তবে নাৎসিরা আদর করে এর নাম দিয়েছিলো ‘গোলিয়াথ’। দূর থেকে রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত যুদ্ধাস্ত্র তৈরির ক্ষেত্রে ইতিহাসে পথিকৃৎ এই ছোট আকারের ট্যাংক গোলিয়াথ। বর্তমানের গেমস খেলার জয়স্টিকের মতো দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য গোলিয়াথেও একটি জয়স্টিক ছিলো। দূর-নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে গোলিয়াথ ব্যবহার করে শত্রুপক্ষের রক্ষণভাগ ছিন্নভিন্ন করে দিতো নাৎসীরা। একইসাথে ১৩৩ থেকে ২২০ পাউন্ডের উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরক বহন করতে পারত গোলিয়াথ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রায় সাত হাজার গোলিয়াথ তৈরি জার্মানী।

 

রকেটচালিত উড়োজাহাজ

১৯৩০-এর দশকের শেষ দিকেই ঘণ্টায় ৭০০ মাইল গতির রকেটচালিত মেসারস্কমিট মি ১৬৩ উড়োজাহাজ তৈরি করে জার্মানী। তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে দ্রুতগতিসম্পন্ন এই যুদ্ধবিমানের কাছাকাছি সক্ষমতায় ছিলো মার্কিন পি-৫১ মুসতাং যুদ্ধবিমান। তবে মুসতাংয়ের গতি ছিল ঘণ্টায় মাত্র ৪৪০ মাইল। ৩০০ এমএমের দুটি কামান সংযুক্ত মেসারস্কমিট মি ১৬৩ যুদ্ধবিমান দ্রুতগতির কারণে খুব সহজেই শত্রুপক্ষের হামলা এড়াতে পারতো। তবে দ্রুতগতিই কাল হয়ে দাঁড়ায় বিমানটির। এতো গতি নিয়ে শত্রুপক্ষকে পাল্টা আঘাত করা মেসারস্কমিট মি ১৬৩ –এর জন্য ছিলো খুবই দুরূহ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিন শতাধিক মেসারস্কমিট মি ১৬৩ তৈরি করে জার্মানী।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন

পেট থেকে বের হলো ১৯টি টুথব্রাশ!

ঘুষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে এলো ‘শূন্য রুপির নোট’

লন্ডনেও বিক্রি হচ্ছে বোতলজাত গো-মূত্র!

সূর্য নিয়ন্ত্রণ করছে এলিয়েনরা!

Discover extraordinary stories from around the world with our exceptional news coverage. From uplifting human interest stories to groundbreaking scientific discoveries, we bring you the best of the best. Stay informed about the latest breakthroughs in technology, medicine, and beyond, and explore the world's most fascinating cultures and communities. Get inspired and informed with our exceptional news coverage.