কেউ কুকুর, কেউ বিড়াল, আবার কেউবা পাখি, শখ করে মানুষ কত কিছুইনা লালন-পালন করে থাকে। নাম ধরে ডাকলে সেসব পশু-পাখিকে মুনিবের কাছে আসতেও দেখা যায়। কিন্তু শখ করে কচ্ছপ পালন! তাও আবার নাম ধরে ডাকলে মুনিবের কাছে চলে আসে। হ্যাঁ, এবার এমনই একটি কচ্ছপের খোঁজ পাওয়া গেছে যাকে নাম ধরে ডাকা মাত্রই পুকুর ছেড়ে উঠে আসে।

tortle kali

ব্যতিক্রমী স্বভাবের এই কচ্ছপটির নাম কালী। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাসনাবাদের মহিষপুকুর এলাকার বাসিন্দা দিলীপ দাসের বাড়ির পাশের পুকুরে গত চল্লিশ বছর ধরে একটু একটু করে বড় হয়ে উঠছে কচ্ছপটি।

জানা যায়, দিলীপের পরিবারের সদস্যরা দুপুরবেলা যখন পুকুরপাড়ে খাবার দিয়ে ‘কালী’ বলে ডাক দেয় তখন কচ্ছপটি ঘাটের কাছে এসে খাবার খেয়ে যায়।

প্রায় চল্লিশ বছর আগে জমিতে চাষ করতে গিয়ে আলের ধারে ছোট্ট একটি কচ্ছপ ছানা খুঁজে পান দিলীপ। এরপর দিয়েশলাই বাক্সতে ভরে ছানাটিকে বাড়িতে নিয়ে আসেন তিনি। বাড়ির সদস্যরা সেই কচ্ছপটিকে ভালোবেসে নাম দেন ‘কালী’। এরপর থেকে বাড়ির পাশের পুকুরেই রয়েছে কচ্ছপটি । পুকুর পাড়ে ঘিরে রাখার কোন ব্যবস্থা না থাকা সত্ত্বেও কালী পুকুরটি ছেড়ে অন্য কোথাও যায় না।

দিলীপের পরিবারের সদস্যরা জানান, কালীকে নিজের সন্তানের মতোই আদর-যত্ন করে থাকেন তারা। আগে কালীকে প্রায় সময়ই পানি থেকে তুলে আনা হতো। কিন্তু বর্তমানে তার ওজন প্রায় ৩০ কেজির কাছাকাছি হওয়ায় তাকে আর পানি থেকে তোলা সম্ভব হয় না। সন্তান বড় হয়ে গেলে মা যেমন তাকে আর কোলে নিতে পারে না, ঠিক তেমনি কালীকেও এখন আর পানি থেকে তোলা যায় না।

তারা আরো জানান, কালীকে প্রতিদিন খাওয়ার জন্য ভাত দেওয়া হয়। পাশাপাশি কলাপাতা ও সজনে পাতাও পুকুরে দেওয়া হয়। এমনকি কচ্ছপটি অসুস্থ হলে তার জন্য ওষুধ ও চিকিৎসকের ব্যবস্থাও করা হয়।

এ বিষয়ে বাড়ির সদস্য ঝর্না দাস বলেন, কিছুদিন আগে কালীর মুখের ভেতর একটি ঘা হয়েছিল । পরে চিকিৎসকের পরামর্শে হোমিওপ্যাথি ওষুধ খাওয়ানো হয়। তখন কিছুদিন কোন ধরনের শক্ত খাবার দেওয়া হয়নি।

বাড়ির কর্তা মধু দাস বলেন, খুব ছোটবেলা থেকে কচ্ছপটি তাদের পরিবারের সঙ্গে আছে। পরিবারের সদস্যরা সবাই ইতোমধ্যে তার মায়ায় জড়িয়ে পড়েছে। যেহেতু কচ্ছপ অনেকদিন বাঁচে সেহেতু তার মৃত্যুর পর নাতি-নাতনিরা কালীকে দেখা-শুনা করবে।

তিনি আরো বলেন, পাড়া প্রতিবেশীরা কালীকে খুব ভালোবাসে। এমনকি হাসনাবাদ, বসিরহাট, খুলনাসহ দূর-দূরান্ত থেকে মানুষজন তাকে দেখতে আসে।

জানা যায়, বছর কয়েক আগে কয়েকজন ব্যক্তি বন দপ্তরের কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে কচ্ছপটিকে নিয়ে যেতে এসেছিল। তবে তাদের ভুয়া পরিচয় ফাঁস হয়ে যাওয়ায় সে বারের মতো রক্ষা পায় কালী।

এ বিষয়ে স্থানীয় পাটলি খানপুর পঞ্চায়েতের প্রধান পারুল গাজি বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে হয়তো এভাবে কচ্ছপ পালনের নিয়ম নেই। কিন্তু ওই পরিবারটি কচ্ছপটির কোন ক্ষতি করেনি। বরং নিজের সন্তানের স্নেহে বড় করে তুলছে।

Discover extraordinary stories from around the world with our exceptional news coverage. From uplifting human interest stories to groundbreaking scientific discoveries, we bring you the best of the best. Stay informed about the latest breakthroughs in technology, medicine, and beyond, and explore the world's most fascinating cultures and communities. Get inspired and informed with our exceptional news coverage.