নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বাড়ি ফিরতে অসুস্থ বাবাকে নিয়ে সাইকেলে ১২০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছিল এক কিশোরী। তার এই অদম্য সাহসের প্রতি সম্মান জানিয়ে তাকে আইআইটির প্রস্তুতির জন্য বিনামূল্যে প্রশিক্ষণের অফার দিয়েছে দেশটির বিহারের 'সুপার ৩০' কোচিং সেন্টার। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও তাকে সাহায্য-সহযোগিতার ঘোষণা দিয়েছে। ডাক এসেছে দিল্লির সাইকেল ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া'র তরফ থেকেও।

joti kuariঅসুস্থ বাবাকে নিয়ে ১২০০ কিলোমিটার পথ সাইকেলে পাড়ি দিয়েছে ১৫ বছরের কিশোরী জ্যোতি কুমারী

সম্প্রতি সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া জ্যোতি কুমারী তার অসুস্থ বাবাকে নিয়ে দিল্লির গুরুগ্রাম থেকে সাইকেল চালিয়ে আসেন বিহারের দারভাঙ্গা গ্রামে। দিনরাত সাইকেল চালিয়ে ৬ দিনে ১২০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন তিনি। পথে ছিল সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা ঝুঁকি। ছিল শারীরিক শক্তির বিষয়ও। তারপরও হার মানেননি তিনি। কোনো ধরনের বিপদ ছাড়াই নিরাপদে গ্রামের বাড়ি পৌঁছান বাবা-মেয়ে। গ্রামে পৌঁছানোর পর পরই ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয় উঠেন তিনি।

তার এই সাহসিকতার তারিফ করে রাজনৈতিক নেতাসহ ছোট বড় সকলেই। ১৫ বছর বয়সী এ দলিত কিশোরীর সাহসিকতার প্রতি সম্মান জানিয়ে তাকে আইআইটির প্রস্তুতির জন্য বিনামূল্যে প্রশিক্ষণের অফার দিয়েছে 'সুপার ৩০' কোচিং সেন্টার।

সম্প্রতি এক টুইটে কোচিং সেন্টারটির প্রতিষ্ঠাতা আনন্দ কুমার জানান, জ্যোতি কুমারী অসুস্থ বাবাকে সাইকেলের পেছনে বসিয়ে ১২০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। ইতোমধ্যে তারা জ্যোতির সঙ্গে দেখা করেছেন এবং বলেছেন তিনি যদি ভবিষ্যতে আইঅইটির জন্য প্রস্তুতি নিতে চায় তাহলে তাকে 'সুপার ৩০' কোচিং সেন্টারে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণের সুযোগ দেওয়া হবে।

শুধু প্রশিক্ষণের অফার নয়, ইতোমধ্যে তাকে ১ লাখ রুপি আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা দিয়েছে উত্তরপ্রদেশের অখিলেশ যাদবের দল সমাজবাদী পার্টি (সপা)। বিহারের রামবিলাস পাসোয়ানের লোক জনশক্তি পার্টিও জানিয়েছে, জ্যোতির সকল শিক্ষার খরচ বহন করবেন তারা। এমনকি ট্রায়ালের জন্য দিল্লির সাইকেল ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার তরফ থেকেও ডাক এসেছে জ্যোতির।

জানা যায়, জ্যোতির বাবা দিল্লিতে রিকশা চালাতেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে দেশজুড়ে জারি করা লকডাউনে বন্ধ হয়ে যায় তার কাজ। তাই মালিকের কাছে রিকশা জমা দিয়ে দেন। এর মধ্যে পায়েও আঘাত পান তিনি।

এদিকে বাড়ির মালিক বাসা ভাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল। তাই উপায়ান্তর না দেখে গ্রামের বাড়িতে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বাবা-মেয়ে। প্রথমে বাড়ি যাওয়া জন্য এক ট্রাক ড্রাইভারের সঙ্গে কথা বলেন তারা। কিন্তু চালকের জন্য ৬ হাজার রুপি ভাড়া চায়। এত অর্থ না থাকায় সাইকেলেই বাড়ির পথ ধরেন তারা।

জ্যোতি জানান, বাড়ি যাবার জন্য ৫০০ রুপি দিয়ে একটি সাইকেল কেনেন তিনি। এরপর গত ১০ মে অসুস্থ বাবাকে পেছনে বসিয়ে দিল্লি থেকে রওনা দেন। টানা ছয় দিন সাইকেল চালিয়ে গত ১৬ মে বাড়ি পৌঁছান তারা। পথে শুধু রাতে কোনো পেট্রোল পাম্পে ২-৩ ঘণ্টার জন্য বিশ্রাম নিতেন। আর কোথাও কোনো ত্রাণ সাহয্য পেলে সেটা দিয়েছে খুদা মিটিয়েছেন। কারণ দিল্লি ছাড়ার সময় তাদের কাছে ছিল মাত্র ৬০০ রুপি।

Discover extraordinary stories from around the world with our exceptional news coverage. From uplifting human interest stories to groundbreaking scientific discoveries, we bring you the best of the best. Stay informed about the latest breakthroughs in technology, medicine, and beyond, and explore the world's most fascinating cultures and communities. Get inspired and informed with our exceptional news coverage.