বিশ্বের দ্রুততম মানব ক্যালকুলেটরের শিরোপা জিতলেন নীলকান্ত ভানু প্রকাশ নামের এক যুবক। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের লন্ডনে আয়োজিত মাইন্ড স্পোর্টস অলিম্পিয়াডে মেন্টাল ক্যালকুলেশন ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে তিনি প্রথম ভারতীয় হিসেবে স্বর্ণ জয় করেছেন।

nilkanto vanu prokasনীলকান্ত ভানু প্রকাশ- ফাইল ছবি

২০ বছর বয়সী ভানুর বসবাস ভারতের হায়দরাবাদে। গণিত বিষয়ে স্নাতক করছেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট স্টিফেন্স কলেজে। বিশ্বের দ্রুততম মানব ক্যালকুলেটরের শিরোপা ছাড়াও ইতোমধ্যে তিনি চার-চারটি বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন। লিমকা রেকর্ডের অধিকারী হয়েছেন ৫০টি।

এক সময় বিশ্বের দ্রুততম মানব ক্যালকুলেটরের রেকর্ড ছিলো দুই প্রখ্যাত গণিতবিদ স্কট ফ্ল্যানসবুর্গ ও শকুন্তলা দেবীর হাতে। শকুন্তলা দেবী ছিলেন একজন ভারতীয়। এবার সেই রেকর্ডই ভেঙেছেন আরেকজন ভারতীয়।

সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভানু বলেন, তার মস্তিষ্ক এত দ্রুত কাজ করে যে, এটি ক্যালকুলেটরকেও হার মানায়। এই রেকর্ড ভাঙা তার জন্য খুবই গর্বের। এটি একটি জাতীয় গর্বেরও বিষয়। কারণ তিনি এর মাধ্যমে সারা বিশ্বের সামনে ভারতকে তুলে ধরেছেন।

nilkanto vanu prokas 2নীলকান্ত ভানু প্রকাশ- ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া আরেক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, অঙ্ক একটি মানসিক খেলা। তার মাথার মধ্যে সব সময় সংখ্যা ঘোরে। তিনি এটিকে দৌড় প্রতিযোগিতার মতো মনে করেন। যে বেশি দ্রুত সংখ্যা গুণতে পারে, সেই এই খেলায় জয়ী।

এই অসাধারণ ক্ষামতা আয়ত্ত্বের বিষয়ে তিনি বলেন, অনেকেই মনে করেন এটি ঈশ্বর প্রদত্ত। এই অসাধারণ ক্ষমতা সঙ্গে নিয়েই জন্মেছেন তিনি। কিন্তু ব্যাপারটা তা নয়। তার বয়স যখন মাত্র ৫ বছর, তখন তিনি একটি দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাত পান। এরপর প্রায় এক বছর তাকে বিছানায় শুয়ে কাটাতে হয়েছে। তখন তার বাবা-মা তাকে বলেছিলেন, তিনি যদি মস্তিষ্ককে ব্যস্ত না রাখেন, তাহলে তার মস্তিষ্কের ক্ষমতা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবে। আর তখন থেকেই তিনি নিজের মাথার ভেতর অঙ্ক করতে শুরু করেন। যাতে তার মস্তিষ্ক সক্রিয় থাকে। আর এভাবেই তিনি মানব ক্যালকুলেটরে পরিণত হয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, তিনি সারাক্ষণ অঙ্ক নিয়ে চিন্তা করেন। সব সময় কিছু না কিছু গুণতে থাকেন। কারো সঙ্গে কথা বলার সময় অনেক বড় অঙ্কের নামতা গুণেন অথবা পাশ দিয়ে যাওয়া গাড়ি গুণতে থাকেন অথবা তার সঙ্গে কথা বলা ব্যক্তি কতবার চোখের পাতা ফেলছেন, সেটি গুণতে থাকেন। মোট কথা তার মাথার মধ্যে শুধু সংখ্যা ঘোরে।

অঙ্ক নিয়ে মানুষের ভেতর যে ভয় রয়েছে সেটি দূর করাই তার জীবনের মূল লক্ষ্য জানিয়ে ভানু আরো বলেন, তিনি ভবিষ্যতে 'ভিশন ম্যাথ' নামে একটি গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করতে চান। সেখানে ছোট ছোট শিশুদের মনে অঙ্কের প্রতি আগ্রহ ও ভালোবাসা গড়ে তুলবেন তিনি। এ জন্য তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সহযোগিতা কামনা করেন।

এ বছর করোনাভাইরাসের কারণে মাইন্ড স্পোর্টস অলিম্পিয়াড ভার্চুয়ালি লন্ডন থেকে আয়োজন করা হয়। যেখানে মেন্টাল ক্যালকুলেশন ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেন বিশ্বের ১৩টি দেশের ৩০ জন প্রতিযোগী। আর এদের মধ্যেই এবার প্রথম স্থান অর্জন করেন নীলকান্ত ভানু প্রকাশ। এ ছাড়া দ্বিতীয় হন লেবাননের এক বাসিন্দা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের এক বাসিন্দা তৃতীয় স্থান অর্জন করেন।

Discover extraordinary stories from around the world with our exceptional news coverage. From uplifting human interest stories to groundbreaking scientific discoveries, we bring you the best of the best. Stay informed about the latest breakthroughs in technology, medicine, and beyond, and explore the world's most fascinating cultures and communities. Get inspired and informed with our exceptional news coverage.