মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এমতাবস্থায় সরকারি স্কুলগুলো বেতন পেলেও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো পড়েছে চরম আর্থিক বিপর্যয়ে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়মিত বেতন দেয়া হচ্ছে না। আর যেগুলোতে অনলাইন ক্লাস হচ্ছে সেখানেও অর্ধেক বেতন দেয়া হচ্ছে।

classroom chickenশ্রেণিকক্ষে মুরগি পালন

পূর্ব আফ্রিকার দেশ কেনিয়ায় গত মার্চ মাস থেকেই সকল বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত বিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকবে। আর এই লম্বা সময়ে আর্থিক সংকট কাটিয়ে উঠতে দেশটির একটি বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে মুরগি পালন শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। পার্শ্ববর্তী আরেকটি বিদ্যালয়ে মুরগি পালনের পাশাপাশি শিশুদের খেলার মাঠে সবজি চাষেরও খবর পাওয়া গেছে।

কেনিয়ার বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোর সংগঠন কেপিএসের বরাত দিয়ে বিবিসির খবরে বলা হয়, সেখানকার মোট শিশু শিক্ষার্থীর এক-পঞ্চমাংশই পড়ে বিভিন্ন বেসরকারি বিদ্যালয়ে। করোনার কারণে এখন অধিকাংশ বিদ্যালয়েরই আয় বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে ১৩৩টি বিদ্যালয় স্থায়ীভাবেই বন্ধ হয়ে গেছে এবং বাকিগুলো কোনোরকমে টিকে আছে। শিক্ষক-কর্মচারীদের ঠিকভাবে বেতন-ভাতা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।

classroom chicken2শিশুদের খেলার মাঠে সবজি চাষ

এমন সংকটাবস্থা কাটিয়ে উঠতে তাই মুইয়া ব্রেথ্রেন স্কুল নামের একটি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শ্রেণিকক্ষে মুরগি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে এখন সেই শ্রেণিকক্ষে শিশু-কিশোরদের কলতানের বদলে মুরগির ডাক শোনা যায়। শ্রেণিকক্ষের বোর্ডে গণিতের সূত্রের বদলে মুরগির টিকা ও খাবার দেয়ার সূচি লেখা থাকে।

বিদ্যালয়টির মালিক জোসেফ মেইনা জানান, তিনি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে বিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়া হলে সব ওলট-পালট হয়ে যায়। এমনকি ব্যাংকের ঋণ তখনো সম্পূর্ণ শোধ করা সম্ভব হয়নি। তাই টিকে থাকতে এবং কিছু একটা করার তাগাদা থেকেই মুরগি পালনের সিদ্ধান্ত নেই। তাছাড়া দীর্ঘ সময় এভাবে তো আর বসে থাকা যায় না।

classroom chicken1শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের বেঞ্চ সরিয়ে সেখানে মুরগির খাদ্য রাখা হয়েছে

এই প্রতিষ্ঠানটির পাশেই রোকা প্রিপারেটরি নামের আরেকটি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মুরগি পালনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠে সবজি চাষও শুরু করেছে। ২৩ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এই বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা জেমস কুঙ্গু জানান, কোনো কাজই মন্দ নয়। করোনা আসার পর আমার অবস্থা অন্যান্য বিদ্যালয়ের মতোই হয়েছে। এমনকি গাড়ির তেল কেনার মতো টাকা ছিল না। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা না থাকায় শারীরিকভাবেও কিছুটা প্রভাব পড়ছিল।

আর তাই মুরগি পালন ও সবজি চাষের সিদ্ধান্ত নেই। এ কাজে সহায়তা করার জন্য দুই জন কর্মচারী রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে চাষ করা সবজি বিক্রির উপযোগী হয়ে উঠেছে এবং মুরগি পালন থেকেও আয় হচ্ছে, যোগ করেন জেমস কুঙ্গু।

Discover extraordinary stories from around the world with our exceptional news coverage. From uplifting human interest stories to groundbreaking scientific discoveries, we bring you the best of the best. Stay informed about the latest breakthroughs in technology, medicine, and beyond, and explore the world's most fascinating cultures and communities. Get inspired and informed with our exceptional news coverage.