প্রসব বেদনায় ছটফট করছিলেন ববিতা (৩৬)। তাই স্ত্রীকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান রিকশাচালক শিবচরণ। সেখানে সিজারিয়ানের মাধ্যমে একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন তার স্ত্রী। এতে হাসপাতালের বিল হয় মোট ৩৫ হাজার রুপি। কিন্তু এত টাকা দেওয়া সামর্থ্য তাদের ছিলো না। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবে ১ লাখ রুপিতে নবজাতককে বিক্রি করে দেন এই দম্পতি।

baby new bornনবজাতক- প্রতীকী ছবি

সম্প্রতি এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের আগ্রা জেলায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চাপে নিজের সদ্যজাত সন্তানকে বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ করছেন শম্ভু নগরের এ দম্পতি। আর তাদের এমন অভিযোগের পর গোটা জেলায় শুরু হয়েছে চাঞ্চল্য।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ৪৫ বছর বয়সী শিবচরণ পেশায় একজন রিকশাচালক। তার দৈনিক আয় ১০০ রুপিরও কম। ফলে স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানের পরিবার চালাতে তাকে প্রতিনিয়তই হিমশিম খেতে হয়। এর মধ্যে সম্প্রতি দেখা দিয়েছে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। দেশজুড়ে বেশ কয়েক মাস ছিলো লকডাউন। ফলে তার আয় আরো কমেছে।

এমতাবস্থায় গত সপ্তাহে তার স্ত্রীর প্রসব বেদনা শুরু হয়। সঙ্গে সঙ্গে তিনি স্ত্রীকে একটি স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে সিজারিয়ানের মাধ্যমে ববিতা একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। তবে এ সিজারিয়ানের জন্য হাসপাতালে তাদের বিল হয় ৩০ হাজার রুপি। পাশাপাশি ওষুধের বিল হয় আরো ৫ হাজার রুপি।

babita sivcaranববিতা ও শিবচরণ

শিবচরণ অভিযোগ করেন, তার পক্ষে হাসপাতালের এত বড় বিল মেটানো সম্ভব ছিলো না। তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের প্রস্তাব দেয়, ১ লাখ টাকায় নবজাতকটি বিক্রি করে দিতে। উপায় না পেয়ে তারাও সেটি করেছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কয়েকটি কাগজে তাদের টিপ-ছাপ নিয়ে ১ লাখ টাকা দিয়েছে এবং তাদের সাত দিন বয়সী ছেলেকে রেখে দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, তারা পড়ালেখা জানেন না, তাই যেখানে টিপ দিতে বলেছে, সেখানেই টিপ দিয়েছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের কোনো বিলের কাগজপত্র দেয়নি। তার স্ত্রী সন্তান প্রসবের আগে কোনো সরকারি আশা কর্মী তাদের কাছে যায়নি। এ ছাড়া কোথায় গেলে বিনা খরচে চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাবে সেটাও তাদের কেউ বলেনি। তাই তারা কাছাকাছি যেখানে হাসপাতাল পেয়েছেন সেখানে গিয়েছেন। এমনকি তারা আয়ুষ্মান ভারত বা সরকারি বিমারও নথিভুক্ত নন।

সংশ্লিষ্টদের মতে, ভারতে অনেক দম্পতির সন্তান হয় না। তাই তারা টাকার বিনিময়ে সদ্যজাত সন্তান দত্তক নিয়ে থাকেন। শিবচরণ ও ববিতার সন্তান বিক্রির ক্ষেত্রেও হয়তো এমনটাই ঘটেছে।

তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নবজাতক কেনার কথা অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, ওই দম্পতি স্বেচ্ছায় তাদের সন্তানকে দত্তক দিয়েছে। এ জন্য তাদের মধ্যে লিখিত চুক্তিও হয়েছে।

এ বিষয়ে আগ্রার জেলা প্রশাসক প্রভু এন সিং বলেন, এই ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে যাদের দোষী বলা হবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে, এখন ববিতা তার নবজাতক সন্তানকে ফেরত চেয়ে বলেন, হাসপাতালের বিল পরিশোধ করার জন্য তাদের অর্থের প্রয়োজন ছিলো, তাই তারা সন্তান বিক্রি করেছেন। এখন তারা তাদের সন্তানকে ফেরত চান।

Discover extraordinary stories from around the world with our exceptional news coverage. From uplifting human interest stories to groundbreaking scientific discoveries, we bring you the best of the best. Stay informed about the latest breakthroughs in technology, medicine, and beyond, and explore the world's most fascinating cultures and communities. Get inspired and informed with our exceptional news coverage.