আপনি পড়ছেন

মানুষকে আল্লাহর পথে আসার দাওয়াত জানায় তাবলিগ জামাত। দাওয়াত শব্দটির আভিধানিক অর্থ আহ্বান করা। বিপথগামী মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান জানানোকে ইসলামী পরিভাষায় দাওয়াত বলা হয়। মানবজাতিকে আল্লাহর পথে দাওয়াত করাই ছিল নবী-রসুলদের প্রধানতম দায়িত্ব। শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আল-কোরআনে দায়ি বলে সম্বোধন করা হয়েছে।

iztema 1

আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাঁর দিকে আহ্বানকারীরূপে (দায়ি) এবং উজ্জ্বল প্রদীপরূপে আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি।’ সূরা আহজাব, আয়াত ৪৬।

মানুষকে আল্লাহর পথে আসার আহ্বান জানানোর মাধ্যমে তাবলিগ জামাত শুদ্ধ মানুষ হওয়ার শিক্ষা দেয়। এ শিক্ষা বিস্তারে তাবলিগ জামাত আয়োজিত ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হতে যাচ্ছে আগামী ১০ জানুয়ারি। আগামী রোববার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে তা শেষ হবে। আখেরি মোনাজাতে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণে দোয়া করা হবে।

তাবলিগের দাওয়াত নিয়ে যারা মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘোরেন তারা হলেন মহান স্রষ্টা কর্তৃক উল্লিখিত সেসব বান্দা যাদের কথা সূরা আলে ইমরানের ১০৪ নম্বর আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের মধ্যে এমন একদল হোক যারা কল্যাণের দিকে আহ্বান করবে এবং সৎ কাজের নির্দেশ দেবে ও অসৎ কাজে নিষেধ করবে, এরাই সফলকাম।’

দাওয়াত ও তাবলিগের মূলনীতি সম্পর্কে আল-কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে, ‘আপনি পালনকর্তার পথের প্রতি আহ্বান করুন জ্ঞানের কথা বুঝিয়ে ও উপদেশ শুনিয়ে উত্তমরূপে এবং তাদের সঙ্গে বিতর্ক করুন পছন্দযুক্ত পন্থায়। নিশ্চয় আপনার পালনকর্তাই ওই ব্যক্তি সম্পর্কে বিশেষভাবে জ্ঞাত রয়েছেন, যে তার পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছে এবং তিনিই ভালো জানেন তাদের, যারা সঠিক পথে আছে।’ সূরা নাহল, আয়াত ১২৫।

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর অনুসারীদের দাওয়াতি মেহনতে নিয়োজিত হওয়ার দিকনির্দেশনা দান করেছেন। বুখারি ও মুসলিমে হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা মানুষের সঙ্গে নম্র ব্যবহার কর, রূঢ় আচরণ কোরো না, সুসংবাদ দাও, ভীতসন্ত্রস্ত কোরো না।’

আল্লাহ-প্রেমিকরা মাল-জান উৎসর্গ করে তাবলিগের মেহনতে নিজেদের নিয়োগ করেন। আল্লাহ ও রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশিত পথে সবাইকে আসার জন্য আহ্বান জানান তারা। তারা ফরজ হুকুমগুলো যথাযথভাবে পালনের জন্য উদ্বুদ্ধ করেন, রসুলের সুন্নাত ভুলে গিয়ে যারা বিপথে চলছে, কিংবা সিদ্ধান্তহীনতায় হাবুডুবু খাচ্ছে, তাদের সঠিক পথের দিশা দেওয়ার চেষ্টা করেন।

জগদ্বিখ্যাত দারুল উলুম দেওবন্দের বুজুর্গ হযরতজী মাওলানা ইলিয়াস (রহ.) মানুষকে আল্লাহ ও তাঁর রসুলের পথে আনার জন্য যে মেহনত শুরু করেন তা আজ দীন প্রতিষ্ঠার মহাআন্দোলনে পরিণত হয়েছে।

তাবলিগ জামাত পথভোলা মানুষকে আল্লাহ ও রসুলের পথের সন্ধান দেওয়া ও বিপথগামীদের সঠিক পথ দেখিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করছে। মানুষকে গোনাহ থেকে দূরে থাকতে উদ্বুদ্ধ করছে। সৎ কাজের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনেও তারা মুমিনদের উদ্বুদ্ধ করছে। বিশ্বে শান্তি ও সহমর্মিতার পরিবেশ সৃষ্টিতেও অবদান রাখছে এ জামাত।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর