আপনি পড়ছেন

মাওলানা ইলিয়াস (রহ.) এর হাত ধরে তাবলিগ জামাতের পথ চলা শুরু। আল্লাহভোলা, দ্বীনহারা মানুষকে নবীর পথে আনার জন্য হজরতজী এক অদ্ভুত পন্থা বেছে নেন। গরীব কৃষক-শ্রমিক লোকদের কাছে গিয়ে বলেন, তোমরা কাজের বিনিময়ে যে টাকা পাও আমি তোমাদের পাওনা মিটিয়ে দেবো। বিনিময়ে তোমরা আমার মজলিসে এসে বসো। মসজিদে নামাজ পড়তে আসো।

iztema 2

এভাবে মানুষের হাতে পায়ে ধরে পকেটের পয়সা খরচ করে পথহারা মানুষকে প্রভুর পথে নিয়ে আসেন তিনি। হজরতজীর এ দাওয়াতি মিশনও ভারতের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্বের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়তে লাগল।

আজকের তাবলিগ জামাত ও বিশ্ব ইজতেমার এই হলো শুরুর গল্প। অরাজনৈতিক-অহিংস এই দ্বীনি সংগঠনের একমাত্র গর্ব ছিলো তাদের মধ্যে কোনো দলাদলি নেই, ফাটল নেই, মতভেদ নেই। শুরু থেকেই তারা কোরআনে বলা ‘এক মুমিন অন্য মুমিনের ভাই’- এ আয়াতের বাস্তব প্রতিচ্ছবি হয়ে কাজ করছে। মানুষও তাদের এ দাবিকে বিনা দ্বিধায় চোখ বুঝে মেনে নিয়েছিলো।

দিন দিন তাবলিগ জামাতের সুনাম-সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়তে লাগল পৃথিবীর আনাচে-কানাচে। একপর্যায়ে বিশ্ব ইজতেমা এক পর্ব থেকে বেড়ে দুই পর্বের হয়ে গেলো। তবুও মানুষের জায়গা হত না। তারপর ইজতেমা ছড়িয়ে পড়ল জেলায় জেলায়। জানি না কী কারণে এত জনপ্রিয় এত মকবুল দাওয়াতি সংগঠনটি ভেতর থেকে ঘুনে খাওয়ার কাঠের মত পড় পড় করে ভেঙে গেলো।

বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ বের হলো, ইজতেমার শীর্ষ মুরুব্বিদের মাঝে টাকা নিয়ে কোন্দল...। এর অল্প ক’দিন পরই নেতৃত্ব নিয়ে দুই ভাগ হয়ে গেলো তাবলিগ জামাত।

দুঃখজনক হলেও সত্য! অহিংস এ দাওয়াতী সংগঠনটির তীব্র হিংস্ররূপ দেখেছে পুরো বিশ্ব। মারামারি-কাটাকাটি-হানাহানির খবর এখনো নিয়মিত বিরতিতে শোনা যাচ্ছে। হৃদয়ের গভীর থেকে প্রার্থনা করছি, অন্তত বিশ্ব ইজতেমা যেন সুখে-শান্তিতে সুন্দরভাবে সমাপ্ত হয়ে যায়...। আর যেন কোনো রক্ত না ঝরে...। 

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর