আপনি পড়ছেন

কোন মুসলমান মৃত্যুবরণ করলে তাকে গোসল দেয়া, কাফন-দাফন করা ফরজে কেফায়া। যে এলাকায় মারা যাবেন সে এলাকার মুসলমানদের ওপর এ কাজটি সম্পাদনটি করা ফরজ। কিছুসংখ্যক লোক আদায় করলে সবার পক্ষ থেকে এই ফরজের দায়িত্ব আদায় হয়ে যায়। তবে কেউ যদি এ দায়িত্ব পালন না করে তাহলে এলাকা বা গ্রামের সব মুসলমান গোনহাগার হবেন। 

corona 1

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেলে বা যে-কোন মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেও তার গোসল এবং কাফন-দাফন করা আবশ্যক। মৃতের দেহ থেকে জীবিতরা রোগে আক্রান্ত হতে পারেন, এমন ভয়কে অজুহাত দেখিয়ে একজন মুসলমানের গোসল ও কাফন-দাফন বাদ দেয়ার সুযোগ নেই। একজন মুসলমান হিসেবে অন্য মুসলমানের ওপর এটি তার আল্লাহ ও রাসুলের (সা.) নির্দেশিত ধর্মীয় অধিকার।

হজরত আবু হুরায়া (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন,

حق المسلم على المسلم خمس: رد السلام، وعيادة المريض، واتباع الجنائز، وإجابة الدعوة، وتشميت العاطس

অর্থ: একজন মুসলমানের কাছে আরেকজন মুসলমানের ৫টি অধিকার আছে। অধিকারগুলো হলো, খুশি মনে তার সালামের জওয়াব দেয়া, অসুস্থ হলে তার সেবা করা, সে মারা গেলে তার জন্য জানাজার নামাজের ব্যবস্থা করা, কোনো প্রয়োজনে তাকে সাড়া দেয়া, হাঁচির জওয়াবে দোয়া পড়া। বুখারি, কিতাবুল জানায়েজ, হাদিস ১২৪০; মুসলিম, কিতাবুস সালাম, হাদিস ৫৪৮৭।

আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে সতর্কতামূলকভাবে গোসল দানকারী ব্যক্তি হাতে গ্লাভস, মুখে মাস্ক, আবৃত পোশাক ও স্যনিটাইজার ব্যবহার করে মৃতের দেহে পানি ঢেলে দিয়ে হলেও গোসল করাতে হবে। এমনিতে তো স্বাভাবিক সময়ে মৃতকে গোসল দেওয়ার সময় হাতে কাপড় পেঁচিয়ে নেয়ার নির্দেশ শরিয়তে আছে।

যে ক্ষেত্রে মৃতকে গ্লাভস পরে বা কাপড় দিয়ে হাত ঢেকে গোসল দেয়া সম্ভব হবে না সেক্ষেত্রে শুধু পানি ঢেলে যতটুকু সম্ভব সতর্কতার সহিত কাফনের কাপড় পরিয়ে আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা দাফনের কাজ সম্পাদন করবে।

মনে রাখতে হবে, মৃতকে গোসল করানো জীবিতদের ওপর ওয়াজিব। তাই কোনোভাবেই গোসল ছাড়া, জানাজা ছাড়া মৃতকে দাফন করা বা ফেলে রাখা শরিয়তসম্মত নয়।

লাশ ফুলে বা ফেটে গেলে এবং শরিয়ত মতে গোসল করানো সম্ভব না হলে, সেক্ষেত্রে যে কোনভাবে লাশের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত করে নিলেই আবশ্যক দায়িত্ব পালন হয়ে যাবে। আলা মারাকিউল ফালাহ, পৃষ্ঠা ৫৭০।

এই ফতোয়ার আলোকে বলা যায়, ঠিকঠাক নিয়ম মেনে গোসল করাতে গেলে যদি গোসলদাতারা মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ার সম্ভাবনা সুনিশ্চিতভাবে জানা যায়, সে ক্ষেত্রে যথাসম্ভব দূরত্ব বজায় রেখে পাইপ দিয়ে বা ভিন্ন উপায়ে মৃতের শরীরে পানি ঢেলে দিতে হবে।

প্রয়োজনের তাগিদে মৃতকে যথসম্ভব তাড়াতাড়ি দাফন করা যাবে। মৃতের মাধ্যমে ছোঁয়াচে ব্যাধি ছড়ানোর প্রবল সম্ভাবনা থাকলে খোলা মাঠে বেশি মানুষ নিয়ে জানাজা আদায় করা ঠিক হবে না। অল্প মানুষ নিয়ে বদ্ধ ঘরে কিংবা আবদ্ধ জায়গায় জানাজা পড়িয়ে দ্রুত দাফন করে ফেলতে হবে। আল-বাহরুর রায়িক, ২য় খন্ড, ৩০০ পৃষ্ঠা।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর