আপনি পড়ছেন

বর্তমান সময়ে বিয়ের কথা উঠলেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে জাঁকজমকপূর্ণ একটি অনুষ্ঠানের চিত্র। বিয়ে বলতে মনে হয় সপ্তাহব্যাপী একটি আনন্দ উৎসব। একটা মধ্যবিত্তের পরিবারের বিয়েতেও দশ-পনের লাখ টাকার ঝাক্কি সামলাতে হয়। যে কারণে বিয়ের কথা ভাবলেই খরচের ভাবনায় এক পা এগুলে তিন পা পেছাতে হয় অভিভাকদের। এর বাজে প্রভাব আমাদের পড়ে তরুণ-তরুণীদের চরিত্রের উপর।

islamic couple

প্রিয় নবী (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কারো সন্তান জন্ম নিলে সে যেন তার সুন্দর নাম রাখে এবং তাকে উত্তম আদব কায়দা শিক্ষা দেয়। যখন সে প্রাপ্ত বয়স্ক হয়, তখন যেন তার বিয়ে দেয়। যদি প্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানের বিয়ের ব্যস্থা না করে তাহলে যৌবনের তাড়নায় কোনো গোনাহ করে ফেললে এর দায়ভার বাবা-মার আমলনামায় লেখা হবে। বায়হাকি, হাদিস : ৮১৪৫।

আজকের সমাজে বিয়ে কঠিন করে ফেলার কারণে স্কুল,কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই ছেলেমেয়েরা প্রেম নামক অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এছাড়া পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সহজলভ্যতার কারণে খুব অল্প বয়স থেকেই ছেলেমেয়েরা অশ্লীল নাচ-গান, ভিডিও এবং পর্ণোগ্রাফিতে আসক্ত হয়ে পড়ছে। আপনি হয়তো ভাবছেন আপনার ছেলেমেয়ে এসব করে না।

কিন্তু উচ্চগতির ইন্টারনেটের যুগে এই ভাবনাটা একেবারেই বোকামি। শুনতে খারাপ লাগলেও বাস্তবতা এর চেয়েও ভয়ানক। এর কুফল শুধু ব্যক্তি-পরিবারেরই সীমাবদ্ধ নেই বরং এর ব্যপকতা ছড়িয়ে পড়েছে পুরো সমাজে।

সূরা নূরে আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে অবিবাহিত নারী-পুরুষ ও সৎকর্মশীল দাস-দাসীদের বিয়ে করিয়ে দাও। তারা অভাবী হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও মহাজ্ঞানী।’

যেখানে স্বয়ং মহান আল্লাহ বলছেন নারী-পুরুষের বিবাহ দিতে, যদি তারা অভাবী হয় তাহলে অভাবমুক্ত করে দেয়ার নিশ্চয়তাও স্বয়ং আল্লাহ দিয়েছেন। তারপরও আমরা অভাবের খোড়া যুক্তি দেখিয়ে বিবাহযোগ্য ছেলে-মেয়েদের বিবাহের কথা ভাবি না। অথচ ওই ছেলে-মেয়েই আমাদের সামনে অবৈধ প্রেমে জড়িয়ে আছে, ভ্রুণ নষ্ট করছে- এ নিয়ে আমাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই।

বিয়ের গুরুত্ব বোঝানোর জন্য সুরা বাকারায় মহান আল্লাহ বলেন, ‘স্ত্রীরা তোমাদের পোশাক এবং তোমরা স্বামীরা তাদের পোশাক।’

সুরা রুমে আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহর তায়ালার এক আশ্চর্য নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সঙ্গিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক প্রেম-ভালোবাসা-মায়া-মমতা সৃষ্টি করেছেন।’

বিয়ে নারী-পুরুষের চক্ষু শীতল করে, লজ্জাস্থানকে হেফাজত করে, অন্তর শান্তিতে পূর্ণ করে দেয় এবং একে অপরের চরিত্রের জন্য ঢাল হিসেবে কাজ করে। আজকের দিনে যখন হারামকে অত্যন্ত সহজ করে দেয়া হয়েছে তখন মুসলিম অভিভাকদের স্বাভাবিক নিয়ম-নীতির বাইরে গিয়ে হালালকে সহজ করে দেয়ার সংগ্রাম করতে হবে।

বিবাহযোগ্য ছেলে-মেয়েদের চরিত্র ও দ্বীনদারি বজায় রাখতে দুই পক্ষের অভিভাবকদের অবৈধ সম্পর্কের প্রতি কঠোর ও বিয়ের ব্যাপারে আগ্রহী হওয়া উচিত। এতে শুধু আপনার সন্তানই পাপ থেকে বেঁচে থাকবে না বরং সমাজও পাপের আখড়া থেকে মুক্তি পাবে।

লেখক: শিক্ষার্থী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর