আপনি পড়ছেন

দিন যতই এগুচ্ছে, করোনার প্রকোপ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। ক্ষয়ক্ষতি কত দূর গড়াতে পারে তা বিশ্লেষকরাও আন্দাজ করতে পারছেন না। তবে অনেকেই বলছেন, করোনার ক্ষয়ক্ষতি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। আবার কোনো কোনো বিশ্লেষক বলছেন, করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক মন্দা এবং দুর্ভিক্ষের কারণে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধও হতে পারে। 

eidul azha

আসলেই কী হবে তা সময়ই বলে দেবে। তবে একজন মুসলমান হিসেবে এই মুহূর্তে আমাদের কিছু করণীয় আছে। 

প্রথমত, কোনোভাবেই আতংকিত হওয়া যাবে না। করোনার ভয়াল থাবা দেখে ভয়ে মুষড়ে পড়া মুমিনের জন্য মোটেও শোভনীয় নয়। মুমিন তো কেবল ভয় পাবে আল্লাহকে। আল্লাহপাক যদি করোনায় মৃত্যু লিখে থাকেন, তাহলে সে মৃত্যু আলহামদুলিল্লাহ নবীজির (সা.) ঘোষনা মতে, শাহাদাতের মৃত্যু হবে। করোনায় মৃত্যুর মড়ক দেখে হতাশ হওয়া যাবে না। সর্বক্ষণ প্রভুর রহমতের আশায় নিজেকে সজীব রাখতে হবে।

যিনি আজ বিশ্বকে স্থবির করে দিয়েছেন, তিনিই আবার দুনিয়াকে প্রাণচাঞ্চল্য করে তোলবেন। আমাদের ধৈর্যের সহিত অপেক্ষা করতে হবে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন,

وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ بِشَيْءٍ مِنَ الْخَوْفِ وَالْجُوعِ وَنَقْصٍ مِنَ الْأَمْوَالِ وَالْأَنْفُسِ وَالثَّمَرَاتِ وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ

অর্থ: ভয়, ক্ষুধা, অর্থনৈতিক মন্দা এবং জীবন বিপন্ন করে তোমাদের আমি পরীক্ষা করব। যারা ধৈর্য অবলম্বন করবে, তাদের জন্য সুসংবাদ।’ সূরা বাকারাহ, আয়াত ১৫৫।

দ্বিতীয়ত, সরকারি নির্দেশনা পুরোপুরি মেনে চলা। চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে দৈনন্দিন কার্জকর্ম করা। করোনা প্রতিরোধে অন্যান দেশের মত বাংলাদেশ সরকারও বিভিন্ন এলাকা লকডাউন করছে। চিকিৎসকরা হোমকোয়ারেন্টাইন অর্থাৎ নিজ নিজ ঘরে অবস্থানের জোর পরামর্শ দিয়েছেন।

যাদের শরীর খারাপের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে তাদেরকে আইসোলেশন অর্থাৎ নিজের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ নির্দেশনাগুলো সবার জন্য মেনে চলা জরুরি। পাশাপাশি এই সময়ে মসজিদে যাওয়া থেকে বিরত থাকার নির্দেশনাও ধর্মমন্ত্রণালয় থেকে দেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয় এ নির্দেশনাগুলো মেনে চলা আমাদের জন্য ইবাদত।

এ দুর্যোগের সময় তৃতীয় যে বিষয়টি কোনোভাবেই ভুলে গেলে চলবে না তা হলো, মহামারির কারণে কোটি কোটি মানুষ কর্মহীন বেকার হয়ে পড়েছে। যারা দিন এনে দিন খেতো, আজ বহুদিন তাদের কোনো আয় নেই। যারা কোনোরকম একটি কর্ম করে সপ্তাহে বা মাসে কিছু টাকা রোজগার করত, তাদের তহবিলও শূন্য হয়ে গেছে। কোটি কোটি মানুষ খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে।

এ সময় পাড়া প্রতিবেশী আত্বীয়-স্বজনের পাশে যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। অনেকেই সরকার কিংবা বিত্তশালীদের দিকে তাকিয়ে থাকেন। মনে করেন মানুষকে সাহায্য করা সরকার বা পয়সাওয়ালাদের একার দায়িত্ব। কিন্তু এত বড় দুর্যোগ সরকারের একার পক্ষে সামাল দেয়া সম্ভব নয়। সবাইকে কমবেশি সবার পাশে দাঁড়াতে হবে। তাহলে আশা করা যায় খোদাতায়ালার দয়ায় এ বিপর্যয় থেকে আমরা সেরে ওঠব।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর