আপনি পড়ছেন

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মসজিদ হলো মসজিদুল হারাম। পবিত্র কোরআনে এ ঘরকে মানব প্রজন্মের প্রথম ইবাদখানা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ইসলাম ধর্মের সর্বোচ্চ কেন্দ্র ধরা হয় এ মসজিদটিকে। এ মসজিদের দিকে ফিরেই বিশ্বের মুসলমানরা তাদের প্রার্থনা পর্ব পরিচালনা করেন। সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে এ মসজিদটির অবস্থান। মসজিদুল হারামের বর্তমান কাঠামো প্রায় ৩ লক্ষ ৫৬ হাজার ৮০০ শত বর্গমিটার বা ৮৮ দশমিক ২ একরের ওপর স্থাপিত।

hajj

রাসুল (সা.) যখন মক্কা বিজয় করেন তারপর থেকেই কাবা শরিফ মুসলমানদের নিয়ন্ত্রণে আসে। এর আগে এখানে জাহেলি যুগের মানুষ আল্লাহর উদ্দেশে হজ ও তাওয়াফ করতো। তবে তাদের হজ ও তাওয়াফ ইসলামী পদ্ধতি থেকে ভিন্ন ছিলো।

৬৯২ সালে মসজিদটি খুব বড় করে সংস্কার করা হয়। অষ্টম শতাব্দীর শেষ নাগাদ মসজিদের পুরনো কাঠের স্তম্ভগুলোর বদলে মার্বেলের স্তম্ভ স্থাপন করা হয় এবং নামাজের স্থান বৃদ্ধিসহ মিনার যুক্ত করা হয়। সাধারণত এ মসজিদে প্রায় ৯ লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন।

১৫৭০ সালে উসমানীয় খিলাফতের সুলতান দ্বিতীয় সেলিম বিখ্যাত আর্কিটেক্ট মিমার সিনানকে মসজিদ পুনর্র্নিমাণের আদেশ দেন। এ সময় মসজিদের সমতল ছাদগুলো ভেঙে ক্যালিগ্রাফি আঁকা দৃষ্টিনন্দন গম্বুজ বসানো হয়। এ গম্বুজগুলোই বর্তমান মসজিদুল হারামের সবচেয়ে পুরনো প্রত্ন নিদর্শন।

১৬২১ ও ১৬২৯ সালে বড় ধরনের বন্যায় মক্কা নগরী ডুবে যায়। বন্যার কারণে মসজিদ আল হারামের দেয়াল বেশ ভালোই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন উসমানি খিলাফতের মসনদে ছিলেন সুলতান চতুর্থ মুরাদ। তার শাসনামলে কাবা পুনর্নির্মিত হয় এবং মসজিদ আল হারাম সংস্কার করা হয়।

তখন আরো তিনটি নতুন মিনার যুক্ত করার পাশাপাশি মেঝেতে মার্বেলের আচ্ছাদন দেয়া হয়। এরপর প্রায় তিন শত বছর পর্যন্ত এই মসজিদে আর কোনো সংস্কার কিংবা পরিবর্তন-পরিবর্ধন করা হয়নি।

১৯৫৫ থেকে ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে বড় ধরনের সংস্কার করেন তখনকার সৌদি বাদশাহ। এ সময় ছাদের কাজ করার পাশাপাশি আরো চারটি মিনার যুক্ত করা হয়। সাফা ও মারওয়াকে এ সময়ই মসজিদের মূল ভবনের সঙ্গে জুড়ে দেয়া হয়।

১৯৮২ থেকে ১৯৮৮ সালে বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আজিজের শাসনামলে সৌদি শাসকের হাতে দ্বিতীয়বার সংস্কারকাজ চালানো হয়। এ সময় নামাজের জন্য নতুন জায়গা এবং মসজিদের সীমানার বাইরে নামাজ পড়ার জায়গা যুক্ত করা হয়।

১৯৮৮ থেকে ২০০৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে তৃতীয়বার সৌদি শাসকদের হাতে মসজিদ আল হারাম সংস্কার করা হয়। এ সময় প্রায় ৫০০টি মার্বেল স্তম্ভ স্থাপন করা হয়। যুক্ত করা হয় তাপ নিয়ন্ত্রিত মেঝে, এয়ার কন্ডিশন, চলন্ত সিঁড়ি ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা।

২০০৭ সালে মসজিদ আল হারামের চতুর্থবারের মতো সংস্কার কাজ শুরু হয়, যা এ বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে শেষ হওয়ার কথা। ওই সময়ের বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ মসজিদের ধারণ ক্ষমতা ২০ লাখে উন্নীত করার পরিকল্পনা করেন।

২০১৫ সালে বাদশাহ আবদুল্লাহ মারা যাওয়ার পর তার ছেলে সালমান বিন আবদুল আজিজের তদারকিতে এই কাজ চলছে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর