আপনি পড়ছেন

স্ত্রীর ইচ্ছের বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ককে আধুনিকতার ভাষায় ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ নামে অভিহিত করা হয়ে থাকে। এ ব্যাপারে ইসলামের সুন্দর দৃষ্টিভঙ্গী থাকা সত্ত্বে কেউ-কেউ মনে করেন, স্ত্রীর মানসিকতা এবং অসুবিধার কথা না ভেবেই ইসলাম স্বামীর ‘যখন তখন’ ইচ্ছেকে গুরুত্ব দিয়েছে।

marriage in islam

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হওয়ার বড় একটি কারণ হলো, শারীরিক চাহিদা এবং মানব বংশ বিস্তার প্রন্ম টিকিয়ে রাখা। শারীরিক চাহিদা পূরণের একমাত্র স্বীকৃত ও সামাজিক পন্থা হলো বিয়ে। বিয়ের পর কোনো নারী যদি স্বামীর সঙ্গে মিলনে সবসময়ই ওজর-আপত্তি দেখাতে থাকে- তাহলে এই বিয়ের কোনো স্বার্থকতা ও প্রয়োজনীয়তা থাকে না।

একইভাবে কোনো পুরুষও যদি আপত্তি করে সেক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।

এক্ষেত্রে ইসলামের বিধান হলো, এ ধরনের ভুক্তভোগী স্বামী-স্ত্রী চাইলে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারবে। তালাক বা ডিভোর্সের যতগুলো বৈধ ও যৌক্তিক কারণ আছে এ ক্ষেত্রে এটি প্রথম ও প্রধান। আর এ ব্যাপারে নারী-পুরুষ দু’জনকেই ইসলাম সমান অধিকার দিয়েছে।

অন্যান্য দেশের দেখাদেখি মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশেও যারা বৈবাহিক ধর্ষণের বিরুদ্ধে আইনের দাবি পর্যন্ত তুলেছেন, তাদের মূল আপত্তি হলো কয়েকটি হাদিসের ভুল ব্যাখ্যা। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘স্বামীর প্রয়োজন হলে স্ত্রী যদি রান্নার কাজেও থাকে, তাহলে সে রান্না ফেলে স্বামীর ডাকে সাড়া দেবে।’ আরেক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে স্ত্রী স্বামীর ডাকে সাড়া দিলো না, রাতভর ফেরেশতারা তাকে অভিশাপ দিতে থাকে।’

এসব হাদিস বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, ইসলাম এমন কিছু পরামর্শ দিয়েছে, যা পালন করলে দু’জনের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক আরো মজবুত আরো গভীর হবে।

কোনো স্ত্রী যদি স্বামীর ডাকে তাৎক্ষণিক সাড়া দেয়, এতে করে ওই স্ত্রীর প্রতি স্বামীর প্রেম, মমতা বাড়বে ছাড়া কমবে না। এ ধরনের পরামর্শ ইসলাম নারীর ভালোর জন্যই দিয়েছে। আবার ইসলাম একথাও মাথায় রেখেছে, প্রেমের খাতিরে ডাকা মাত্রই স্ত্রী তো স্বামীর কাছে ছুটে আসবেই, কিন্তু এভাবে মানসিক প্রস্তুতি ছাড়া আচমকা স্ত্রীর ওপর ঝাপিয়ে পড়া স্বামীর জন্য মোটেও উচিত বা শোভনীয় নয়।

মানবতার মহান শিক্ষক রাসুল (সা.) বলেছেন, হে পুরুষ সকল! তোমরা পশুর মত স্ত্রীর ওপর ঝাপিয়ে পড়ো না। নিজে পরিপাটি হও, স্ত্রীকেও পরিপাটি হতে সময় দাও। শুরুটা করো চুমু দিয়ে।

এখন কোনো পুরুষ যদি বলে, আমার স্ত্রীর সাথে আমি মিশব, এখানে আমাকে পশু বলেছে কেনো ইসলামের নবী, এটা অন্যায়। এর বিরুদ্ধে আইন চাই। অথবা কোনো নারী যদি বলে, আমি চাই আমার স্বামী আমাকে যখন তখন ডাকুক, এটাই আমার ভালো লাগে, ইসলাম কেনো নিষেধ করবে, ইত্যাদি।

এসব বিষয়ে মূল কথা হলো, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে কোনো বিধিনিষেধ ইসলাম চাপিয়ে দিতে চায় না। ইসলাম শুধু কিছু পরামর্শ দিয়েছে যেগুলো মেনে চললে, স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ভালোবাসা বাড়বে বলে আশা করা যায়।

কোনো নারী বা পুরুষের যদি সঙ্গীকে কাছে পাওয়ার ব্যাপারে আপত্তি থাকে, তাহলে তার উচিত বৈবাহিক সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসা। কিন্তু যারা বৈবাহিক ধর্ষণের আইনের পক্ষে কথা বলেন, তারাই আবার পরকীয়াকে আইনের মাধ্যমে বৈধতা দিয়ে ইসলামের পবিত্র সমাজ ব্যবস্থাকে পাশ্চাত্যের নোংরা ভোগবাদী সমাজে পরিণত করতে চায়, যা এদেশের সংস্কৃতির মূলেও কুঠারাঘাত করে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর