দুটি মানুষ যখন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়, তখন তাদের স্বপ্ন থাকে সারা জীবন একসঙ্গে থাকা। বাস্তবতার নির্মমতায় অনেক সময়ই সেই মধুর স্বপ্ন পরিণত হয় দুঃস্বপ্নে। তিল তিল করে ভালোবাসা দিয়ে গড়ে তোলা সংসার জীবন ভেঙে খান খান হয়ে যায় ডিভোর্স নামক ভয়ংকর ঝড়ের আঘাতে।

children and divorce

সাজানো সংসার ভেঙে ফেলার প্রবণতা বেড়ে চলেছে দিন দিন। ডিভোর্সের মাধ্যমে দুটি মানুষ আলাদা হয়ে যায়, খুঁজে নেয় মুক্তির পথ। কিন্তু তাদের ঘরে যে সন্তান বেড়ে উঠছিলো, পৃথিবীর আলো বাতাস দেখছিলো তাদের মাধ্যমে- সেই সন্তানদের কী হবে?

সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, ডিভোর্সের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগে সন্তানরা। তারা সামাজিকভাবে যেমন হেয় হয়, তেমনি মানসিকভাবেও বিপন্ন হয়ে পড়ে। ডিভোর্স কখনোই কাম্য নয়। তবুও যদি হয়ে যায়, তাহলে সন্তানের দায়িত্ব কার কাঁধে পড়বে- এ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের মুসলিম পারিবারিক আইনে বিস্তারিত বলা আছে। আসুন সংক্ষেপে বিষয়টি জেনে নিই।

১. সিদ্ধান্ত কোর্ট নেবে

কোর্ট দেখে-শুনে-বুঝে বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত জানাবে, সন্তান কার কাছে থাকবে। এক্ষেত্রে সন্তানের বয়স, লিঙ্গ ও ধর্ম বিবেচনা করে রায় দেওয়া হয়। গার্ডিয়ানশিপ অ্যান্ড ওয়ার্ড অ্যাক্ট-১৮৯০ এর ধারা ১৭ ও উপধারা ২ এ এমনটিই বলা হয়েছে। সন্তান কার কাছে থাকলে বেশি নিরাপদ থাকবে, অর্থনৈতিক ও সামাজিক হয়রানি তুলনামূলক কম হবে, এসবও বিশ্লেষণ করে দেখবে কোর্ট।

২. শিশু সন্তানের জন্য বিশেষ আইন

মুসলিম পারিবারিক আইন মতে, শিশু সন্তান প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত মায়ের তত্ত্বাবধানে থাকবে। ছেলে ৭ বছর আর মেয়ে ১৫ বছর পর্যন্ত মায়ের তত্ত্বাবধানে থাকবে।

sad boy with his fighting parents

৩. খরচ বহন করতে হবে বাবাকেই 

সন্তান শিশু হোক অথবা প্রাপ্তবয়স্ক, বাবার কাছে থাকুক অথবা মায়ের কাছে- সর্বাবস্থায় বাবাই সন্তানের খরচ বহন করবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানজিম আল ইসলাম বলেন, ‘অনেকেই মনে করেন, সন্তান যার কাছে থাকবে, সেই খরচ বহন করবে। আসলে বিষয়টি তা নয়। আইন বলছে, সন্তান যার কাছেই থাকুক, খরচের দায় বাবার।

৪. সন্তানের মূল অভিভাবক বাবা

সুপ্রিম কোর্টের আরেক আইনজীবী আবুল হাসান বলেন, সন্তানের আইনগত অভিভাবক বাবা। পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ-১৯৮৫ এর ৫ ধারায় মুসলিম ও হিন্দু আইনে বলা হয়েছে, ‘বাবা হচ্ছেন সন্তানের সামাজিক ও আইনগত অভিভাবক। বাবা যদি মারা যান কিংবা নিখোঁজ থাকেন অথবা দায়িত্ব নিতে অপারগ হন তাহলে ওই সন্তানের দায়িত্ব নেবে দাদা-দাদি অথবা বাবার পরিবারের সদস্যরা।

৫. অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে তালাক!

মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ-১৯৬১ এর ধারা ৭ ও উপধারা ৫ এ বলা হয়েছে, গর্ভবতী থাকাকালীনও স্ত্রীকে তালাক দেওয়া যায়। তবে এই তালাক কার্যকর হবে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর। এই সময় পর্যন্ত স্ত্রীর যাবতীয় দায়ভারও স্বামীকেই বহন করতে হবে।

Get the latest news on lifestyle, health, food, and more from our team of expert writers. From fitness tips and nutrition advice to travel guides and entertainment news, we cover the topics that matter most to you. Whether you're looking to improve your health, broaden your horizons, or just stay up-to-date with the latest trends, you'll find everything you need here.