গবেষণা: বিসিজির টিকায় করোনা থেকে বাঁচার আশা দেখছে বাংলাদেশ!
- Details
- by জীবনশৈলী ডেস্ক
স্বাধীনতারও আগে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান বা বর্তমান বাংলাদেশে বিসিজি (ব্যাসিলাস ক্যালমেট-গুউরিন) টিকার কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর ১৯৭৯ সাল থেকে বাংলাদেশে শিশুদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয় যক্ষার এ ভ্যাকসিনটি। দেশের প্রায় সব মানুষ বাহুতে সেই টিকার দাগ এখনো বয়ে বেড়াচ্ছেন। একটু খেয়াল করলেই সেটা দেখতে পাবেন। আজ করোনাভাইরাস যখন বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে তখন সেই বিজিসি টিকাই নাকি নতুন এই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করছে। ফলে বাংলাদেশের মতো বিশ্বের যেসব দেশে বিসিজি টিকা দেওয়া হয়েছে তারা এই সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাচ্ছে। স্বাস্থ্যবিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান মেডআর্কাইভ এক গবেষণায় এ রকম দাবি করেছে। তারা এও বলছে, এ নিয়ে সিদ্ধান্তে আসতে আরো কিছুটা সময় প্রয়োজন।
গত ২৪ মার্চ একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। এতে যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি প্রতিষ্ঠানের ছয় বিজ্ঞানীর গবেষণা বলছে, যেসব দেশের জাতীয় নীতিতে দীর্ঘদিন ধরে বিসিজি টিকা কর্মসূচি রয়েছে সেখানে ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারেনি কোভিড-১৯।
গবেষণাটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রতিষ্ঠানটির এমএনসি অ্যান্ড এইচের পরিচালক শামছুল হক জানান, সারাদেশে এখন প্রায় ৯৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ মানুষের শরীরে এই টিকা দেয়া হয়েছে।
মরণঘাতী এ ভাইরাসটি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, স্পেনে তাণ্ডব চালাচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ওইসব দেশে জাতীয়ভাবে বিসিজি টিকা কর্মসূচি নেই।
স্বাস্থ্যবিষয়ক আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশের অপেক্ষায় গবেষণাটি বলছে, ইরানে যক্ষ্মার ভ্যাকসিনটি সর্বজনীন করা হয় অনেক পরে অর্থাৎ ১৯৮৪ সালে। মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতেও মৃত্যুহার অনেক বেশি। তবে দেশটিতে বয়স্কদের মধ্যে যারা বিসিজি টিকা নিয়েছেন, তারা ভয়ংকর এই ভাইরাসটির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারছেন এবং তাদের মধ্যে মৃত্যু হারও কম।
এ ছাড়া এশিয়ার দেশ জাপানে ১৯৪৭ সালে বিসিজি টিকা সর্বজনীন করা হয়। এ জন্য দেশটিতে করোনায় মৃত্যুর হার অনেক কম। ইরানে যেখানে মৃত্যুর হার ১৯ দশমিক ৭, সেখানে জাপানে এ হার শূন্য দশমিক ২৮। তাছাড়া ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে ভ্যাকসিনটি ১৯২০ সাল থেকেই সর্বজনীন। ফলে সেখানেও মৃত্যুর হার ০.০৫৭৩।
এদিকে, ১৯২০ সালের দিকে আবিষ্কৃত এ ভ্যাকসিনটি করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে সত্যিই কাজ করে কি না- তা নিয়ে ইতোমধ্যে গবেষণা শুরু করেছে অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস ও গ্রিসের মতো কয়েকটি দেশ।
জানা গেছে, করোনার উপসর্গের বিস্তার ও তীব্রতা হ্রাসে বিসিজি ভ্যাকসিন কোনো ভূমিকা রাখছে কি না তা দেখতে এখন অস্ট্রেলিয়া ও ইউরোপের কিছু দেশ এর ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা শুরু করেছে।
বিখ্যাত মার্কিন সাময়িকী টাইমে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে অবস্থিত মাডক চিলড্রেন রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এমসিআরআই) গবেষকরা এর কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখছেন। এ জন্য দেশটির বিভিন্ন হাসপাতালের চার হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ক্যাথরিন নর্থ আশা প্রকাশ করে বলেছেন, এটি করোনা আক্রান্তদের ক্ষেত্রে ভালো কাজ দিতে পারে।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Get the latest news on lifestyle, health, food, and more from our team of expert writers. From fitness tips and nutrition advice to travel guides and entertainment news, we cover the topics that matter most to you. Whether you're looking to improve your health, broaden your horizons, or just stay up-to-date with the latest trends, you'll find everything you need here.