জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, ডিজাইনার এবং প্রকৌশলিরা মনে করছেন করোনাভাইরাস পৃথিবীর স্থাপত্য কৌশলের কিছু মৌলিক ভুল ধরিয়ে দিয়েছে। যে ভুলগুলোর ধারা অব্যাহত থাকলে করোনাভাইরাস কোনোদিনও পুরোপুরি নির্মুল হবে না বা নতুন ধরনের ভাইরাস, মহামারী আবার পৃথিবীতে হানা দিতে পারে। ভুলগুলো শোধরানোর প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে বিশ্বজুড়ে পাবলিক টয়লটের ধারণা পাল্টে দেওয়া।

public toilet might be rethinked in coming years

করোনাভাইরাস পৃথিবীকে এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছে যে ভবিষ্যতের সব স্থাপত্যে সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাও রাখতে হবে। আর এই জন্য প্রকৌশলিদের সহায়তা করতে পারেন রোগ বিশেষজ্ঞগণ।

এরই মধ্যে ডিজাইনের কিছু মৌলিক বিষয় বদলানোর প্রস্তাব উঠে এসেছে। যেখানে সেন্সর ট্যাপ, নিজে নিজে পরিষ্কার হবে এমন বেসিন, কমোড এবং হাতলবিহীন দরজার কথা বলা হয়েছে। এই ধারণার প্রবক্তারা বলছেন, এগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে ভাইরাস থাকতে পারে এমন স্থানে মানুষের স্পর্শ কমে আসবে এবং ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া কমে আসবে।

বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থাও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারাও মনে করে যে, বর্তমানে পৃথিবীতে যে ধরনের পাবলিক টয়লেট ব্যবস্থা আছে তা ত্রুটিপূর্ণ। সংস্থাটি নিরাপদে হাত ধোয়ার নানা কৌশল প্রচার করছে এবং হাত ধোয়ার পরও ভাইরাসের সংস্পর্শে আসা থেকে বাঁচার জন্য টয়লেটের ট্যাপ বন্ধ করতে পেপার টাওয়েল ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছে।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ব্রেন্ডন মারফি বলেছেন যে, তার দেশের মানুষ বাকি জীবনের জন্য হাত ধোয়ার অনুশীলন অব্যাহত রাখবে। তার মতে, করোনাভাইরাস চলে গেলে মানুষকে হাত ধোয়া নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সংক্রামক ব্যাধি ও মাইক্রোবায়োলজির অধ্যাপক পিটার কলিগনন মনে করেন, পাবলিক টয়লেটের ট্যাপ, দরজা এবং ফ্লোর ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা।

তিনি বলেন, “শ্বাস প্রশ্বাসের ড্রপলেট থেকে ভাইরাস ছড়ায়। এই ড্রপলেট টয়লেটের ফ্লোরেও পড়ে থাকতে পারে। সেখান থেকে হাতে এবং এরপর মুখে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও আছে। অন্তত ৬০ ভাগ রোগির ক্ষেত্রে এই সত্যের প্রমাণ পাওয়া গেছে।”

তিনি আরো বলেন, “লকডাউন শিথিল করা হলে পাবলিক টয়লেটে ভিড় বাড়তে থাকবে। এই অবস্থায় আমরা যতো কম জিনিস স্পর্শ করবো, আমাদের জন্য তাতো ভালো। সেন্সরের মাধ্যমে যে সব ট্যাপ চলে সেগুলো ব্যবহার করা আমাদের জন্য ভালো হবে।”

কলিগনন এক সময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ কমিটির উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি মনে করেন, পাবলিক টয়লেট ব্যবহারের পরও হাত স্যানিটাইজ করাটা জরুরি। কারণ পাবলিক টয়লেটে লোকজন এমন সব জায়গায় স্পর্শ করতে হয় যেখানে ভাইরাসের অস্তিত্ব থাকতে পারে।

তিনি বলেন, “অনেক কিছু নতুন করে ভাবার সময় এসে গেছে। পাবলিক টয়লেট বা বাথরুম এদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ। করোনাভাইরাস এবং অন্যান্য শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস হাত ধোয়া থাকলে এবং দূরত্ববিধি মনে চলে কম ছড়ায়। আগামী একটা বছর আমাদের হয়তো কোভিড-১৯ নিয়ে ভাবতে হবে। কিন্তু আমরা হাত ধোয়ার অনুশীলন গুরুত্ব দিয়ে অব্যাহত রাখি। অন্য অনেক রোগ বালাইও কম হবে।”

Get the latest news on lifestyle, health, food, and more from our team of expert writers. From fitness tips and nutrition advice to travel guides and entertainment news, we cover the topics that matter most to you. Whether you're looking to improve your health, broaden your horizons, or just stay up-to-date with the latest trends, you'll find everything you need here.