ডেক্সামেথাসনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা

করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীদের চিকিৎসায় ডেক্সামেথাসন ওষুধকে কার্যকর হিসেবে বলছেন বিজ্ঞানীরা। ইতোমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ওষুধটির প্রয়োগ শুরু হয়েছে। তবে ওষুধটি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া গ্রহণ করলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে বলে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ডেক্সামেথাসনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা

এ বিষয়ে বাংলাদেশ মেডিসিন সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক বিল্লাল আলম বলেন, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ছাড়া এই ওষুধ ব্যবহার জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হতে পারে। বিশেষ করে স্টেরয়েডের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে হাইপার টেনশন হতে পারে। পেপটিক আলসার হতে পারে এবং ডায়াবেটিসের তীব্রতাও বৃদ্ধি পেতে পারে।

তিনি বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এই ওষুধ গ্রহণ করলে মুখে, পেটে বা পায়ে পানি আসতে পারে। কিডনি বিকল হতে পারে, এমনকি লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আর যাদের অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রেও এই ওষুধের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

এক্ষেত্রে যাদের কিডনি বা লিভারের সমস্যা বা ডায়বেটিস রয়েছে, তাদের এই ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুরুতর হতে পারে। এ ছাড়া শরীরে কোনো ধরনের ইনফেকশন থাকলে এই ওষুধ ব্যবহারে ইনফেকশন বেড়ে যেতে পারে বলে জানান অধ্যাপক বিল্লাল আলম।

বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, মূলত কোন মাত্রায় এই ওষুধ কোন ধরনের রোগীর জন্য ব্যবহার করতে হবে, সেই বিষয়টি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতামত সাপেক্ষে নির্ধারণ করতে হবে। নয়তো এসব স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

এদিকে যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় এই ওষুধটি দারুণ কার্যকর ফলাফল দিচ্ছে। ভেন্টিলেটরে চলে যাওয়া রোগীদের অন্তত তিন শতাংশ এই ওষুধে সেরে উঠতে পারেন এবং যাদেরকে অক্সিজেন দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হচ্ছে তাদের অন্তত পাঁচ শতাংশ এই ওষুধে সেরে উঠতে পারেন।

করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় বিদ্যমান কোনো ওষুধে কাজ হয় কি না, তা দেখার জন্য বিশ্বজুড়ে একটি বড় পরীক্ষা চলছে, এই ওষুধও সেই প্রক্রিয়ার অংশ।

গবেষকরা বলছেন, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সময় থেকেই যদি যুক্তরাজ্যে ডেক্সামেথাসন ব্যবহার করা সম্ভব হতো, তাহলে অন্তত পাঁচ হাজার লোক কম মারা যেতেন।

ওষুধটি কম মূল্যের হওয়ার কারণে করোনাভাইরাসের কারণে মারাত্মক বিপদে পড়া কম আয়ের দেশগুলোর জন্য এই ওষুধ আর্শীবাদ হয়ে আসতে পারে বলেও উল্লেখ করেন ব্রিটিশ গবেষকরা।