শরীরের উচ্চতার চেয়ে মাত্রাতিরিক্ত ওজনকে চিকিৎসকরা ভয়াবহ বিপদ সংকেত হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন। বিভিন্ন চিকিৎসা বিষয়ক গবেষণার ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ১৯৮০ সালের পর থেকে পৃথিবীতে বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোতে স্থুলতার সমস্যায় ভোগা মানুষের সংখ্যা দিনদিন বিস্ফোরণের মত বেড়ে চলছে।

fat

আরো ভয়ঙ্কর তথ্য হল, প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের চেয়ে শিশুরা বেশি স্থুলতার সমস্যায় ভুগছে। বড়দের চেয়ে শিশুর দেহে স্থুলতার খারাপ প্রভাব বেশি পড়বে সে কথা বলাই বাহুল্য।

অতিরিক্ত ওজনের কারণে শুধু শারীরিক সমস্যাই নয়, শিশুর মানসিক বিকাশও বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে মনে করেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা। ঢাকা শিশু হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের রেজিস্টার ডাক্তার নাজমুল ইসলাম বলেন, সন্দেহ নেই শিশুদের স্থুলতা একটি ভয়ঙ্কর রোগ। কিন্তু বাবা-মাদের এ বিষয়ে খুব একটা সচেতন বলে মনে হয় না।

কম ওজনের শিশুর বাবা-মাদের যত বেশি উদ্বিগ্ন দেখেছি, স্থুল শিশুর বাবা-মাদের সচরাচর তেমন উদ্বিগ্ন দেখা যায় না। অথচ বেশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে অতিরিক্ত ওজনের শিশুরা। এখনই যদি বাবা মারা সচেতন না হয় তাহলে ভবিষ্যৎ জীবনে শিশুকে নানা ধরনের জটিল ও কঠিন রোগে ভুগতে হতে পারে।

স্থুলতার কারণে শিশুদের যেসব জটিল রোগ হতে পারে

১. পিত্তথলিতে পাথর জমে যাওয়া।

২. মেরুদন্ড, পা, হাটু এবং হাতের হাড় ভেঙে যাওয়া।

৩. উচ্চ রক্তচাপ।

৪. পড়াশোনা এবং কাজকর্মে অনীহা।

৫. গলা-ঘাড়-পেটে ও বুকে কালো এবং সাদা দাগ হওয়া।

৬. শুয়ে থাকা অবস্থায় শ্বাসকষ্ট হওয়া।

৭. ডায়াবেটিস হওয়া।

diabetes in children

যেসব কারণে শিশুর স্থুলতা সমস্যা দেখা দেয়

১. মাত্রাতিরিক্ত ফাস্টফুড খাওয়া।

২. শারীরিক পরিশ্রম না করা।

৩. বেশি বেশি স্মার্টফোনে গেমস খেলা।

৪. দীর্ঘ সময় ধরে টিভি-কম্পিউটারের সামনে বসে থাকা।

৫. থাইরয়েড হরমোন কম হলে।

৬. রুটিনমাফিক খাওয়া-দাওয়া না করা।

৭. রুটিন মেনে না ঘুমানো।

৮. পরিশ্রম হয় এমন খেলাধুলায় অংশগ্রহণ না করা।

শিশুর স্থুলতা নির্ণয় করবেন যেভাবে

শিশুর ওজনকে তার উচ্চতা দিয়ে ভাগ করে স্থুলতা নির্ণয় করা যায়। শিশুর ওজন যদি উচ্চতার চেয়ে ৮৫ থেকে ৯৫ ভাগ বেশি থাকে তাহলে বুঝতে হবে শিশুটি স্থুলতার সমস্যায় ভুগছে।

শিশুর স্থুলতা রোধে অভিভাকদের করণীয়

১. খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে।

২. শিশুকে শর্করা জাতীয় খাবার কম দিতে হবে।

healty food

৩. অবশ্যই সব ধরনের ফাস্টফুড এড়িয়ে চলতে হবে।

৪. শাকসবজি-ফলমূল-পানি বেশি খাওয়াতে হবে।

৫. শারীরিক পরিশ্রমে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে।

৬. হেঁটে স্কুলে যাওয়া কিংবা লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

৭. দীর্ঘ সময় ধরে কম্পিউটার-স্মার্টফোন ও টিভি দেখা থেকে বিরত রাখতে হবে।

৮. শারীরিক পরিশ্রম হয় এমন খেলায় অংশগ্রহণ করতে শিশুকে উৎসাহ দিতে হবে।

৯. রুটিন মেনে খেতে হবে। রুটিন মেনে ঘুমোতে যেতে হবে এবং ঘুম থেকে উঠতে হবে।

১০. স্মার্টফোন থেকে শিশুকে অবশ্যই দূরে রাখতে হবে।

Get the latest news on lifestyle, health, food, and more from our team of expert writers. From fitness tips and nutrition advice to travel guides and entertainment news, we cover the topics that matter most to you. Whether you're looking to improve your health, broaden your horizons, or just stay up-to-date with the latest trends, you'll find everything you need here.