করোনা প্রাদুর্ভাব আমাদের চারপাশকে অনেকখানি পাল্টে দিয়েছে। একই সাথে নতুন অনেক কিছুর সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে। করোনার আসার পর আমাদের কানে নতুন যে শব্দটি অনেকবার ধাক্কা খেয়েছে, সেটি হচ্ছে অ্যান্টিবডি। বলা হচ্ছে অ্যান্টিবডি থাকলে সাধারণত ওই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়। কিন্তু এই অ্যান্টিবডি কী, কিভাবে তৈরি হয়, আবার যে একাধিক অ্যান্টিবডির কথা শোনা যায়, সেগুলোর মধ্যে পার্থক্য কী?

antibody 1বিশেষজ্ঞরা আস্থা রাখছেন টিকার অ্যান্টিবডির ওপরই

সাধারণত যে কোনো রোগ প্রতিরোধ করতে চাই প্রতিরোধ শক্তি বা অ্যান্টিবডি। মানুষের শরীরে যে কোনো রোগের ক্ষেত্রে সাধারণত দু’ভাবে রোগ প্রতিরোধ শক্তি গড়ে ওঠে। ওই অসুখে আক্রান্ত হয়ে, আর সেই অসুখের টিকা নিয়ে। করোনার ক্ষেত্রেও বিষয়টি এর চেয়ে ভিন্ন নয়।

চিকিৎসার পরিভাষায় যাকে ‘অ্যান্টিবডি’ বলা হয়, তা এই দু’ভাবে শরীরে তৈরি হয়। কিন্তু দু’ভাবে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডির মধ্যে পার্থক্য আছে। মূলত অ্যান্টিবডি হচ্ছে এক বিশেষ ধরনের প্রোটিনের কোষ, যা সংক্রমণকারী জীবাণুটিকে প্রতিহত করতে সক্ষম। পাশাপাশি, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত এই কোষে জমা হয়ে থাকে জীবাণুটির বৈশিষ্ট্যের কিছু স্মৃতি। ফলে সেই সময়ের মধ্যে জীবাণুটি ফের আক্রমণ করলে অ্যান্টিবডি তাকে আবারো প্রতিহত করতে পারে।

antibody 2করোনাকালে অ্যান্টিবডির কথা ওঠে এসেছে বারবার

সাধারণত কোনো রোগের জীবাণু শরীরে ঢুকলে তার প্যাথোজেনের সঙ্গে লড়াই করতে শরীর প্রথমে ইমিউনোগ্লোবিউলিন এম বা ‘আইজিএম’ তৈরি করে নেয়। বলা যেতে পারে, এরা যুদ্ধের প্রথম সারির সৈনিক। পরবর্তী ধাপে শরীর ইমিউনোগ্লোবিউলিন জি বা ‘আইজিজি’ নামের অ্যান্টিবডি তৈরি করে। এই পর্যায়ের অ্যান্টিবডির মধ্যে জমা থাকে ওই বিশেষ জীবাণুটির স্মৃতি। এটাই মূলত কোনো রোগে আক্রান্ত হওয়ার মাধ্যমে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি। অন্যদিকে টিকা থেকে অ্যান্টিবডির ক্ষেত্রে সংক্রমণকারী জীবাণুটির একটি বা দু’টি প্রোটিন শরীরে আলাদা করে প্রবেশ করানো হয়। এর মাধ্যমে শরীর সেগুলির বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি করে নেয়।

দুই অ্যান্টিবডির মধ্যে কোনটি ভালো?-এমন প্রশ্ন চলে অহরহ। এর জবাবে বলা যায়, সংক্রমণের ফলে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডির ব্যাপ্তি কিছুটা বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। শরীর প্রাথমিক পর্যায়ে যে অ্যান্টিবডি তৈরি করে, তা জীবাণুটির গঠন সম্পর্কে পুরো নিশ্চিত না হয়েই অ্যান্টিবডি তৈরি করে ফেলে। ফলে কোনো জীবাণুর ক্ষেত্রে বহু ধরনের গঠনের কথা মাথায় রেখে প্রাথমিক অ্যান্টিবডি-টি বানিয়ে নেয় শরীর। এদিকে টিকার অ্যান্টিবডি নির্দিষ্ট জীবাণুর নির্দিষ্ট গঠনকে প্রতিহত করার জন্যই তৈরি হয়।

এই দুই প্রকারের অ্যান্টিবডির কার্যকারিতার ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা জানান, দু’টি আসলে দু’রকমের। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সংক্রমণের ফলে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি বেশি কার্যকরী হয়েছে। আবার কোনো ক্ষেত্রে দেখা গেছে, টিকার অ্যন্টিবডিই বেশি কাজের।

আর করোনার বিষয়ে এসে কোনো বিশেষজ্ঞই রিস্ক নিতে চাননি। তাদের পরামর্শ হলো, করোনার মতো এত আগ্রাসী একটি ভাইরাসের ক্ষেত্রে টিকা নিয়ে নেয়াই ভালো। এমনকি টিকা নেয়ার আগেই যাদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, টিকা নিয়ে নিলে তারা রোগ প্রতিরোধে আরো বেশি সক্ষমতা অর্জন করবেন।

Get the latest news on lifestyle, health, food, and more from our team of expert writers. From fitness tips and nutrition advice to travel guides and entertainment news, we cover the topics that matter most to you. Whether you're looking to improve your health, broaden your horizons, or just stay up-to-date with the latest trends, you'll find everything you need here.