আপনি পড়ছেন

অনুসন্ধানী সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ। আজ মঙ্গলবার সংগঠনটির সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক নঈম নিজামের সই করা এক বিবৃতিতে এই নিন্দা জানানো হয়।

rojina islam editors

১৯২৩ সালের ‘অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্টে’ সাংবাদিক রোজিনার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে উল্লেখ করে এতে বলা হয়েছে, এ ঘটনা সংশ্লিষ্টদের সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধের নেতিবাচক মনোভাব এবং অশুভ মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ।

এটি গণমাধ্যমের ‘স্বাধীনতা খর্বের চেষ্টা’ আখ্যায়িত করে তা আগামী দিনের স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মত প্রকাশের জন্য হুমকি বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। গণতান্ত্রিক সমাজে এমন হীন চেষ্টা সংবাদপত্রের অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ঠেলে দেয় এবং পেশাকে নিয়ে যায় চ্যালেঞ্জের দিকে।

‘নজিরবিহীন’ এই ঘটনা দেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে ‘কালো অধ্যায়’ হয়ে থাকবে বলে মনে করে সম্পাদক পরিষদ। নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এর সঙ্গে জড়িত ও দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয়।

journalist rozina islam jail

সংগঠনের পক্ষ থেকে কারাগারে থাকা দৈনিক প্রথম আলোর সিনিয়র সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে। আজ রিমান্ড না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়ার পর এই বিবৃতি দেয়া হলো।

আদালত থেকে কারাগারে নেয়ার সময় উপস্থিত সাংবাদিকরা রোজিনা ইসলামের কাছে জানতে চান, তার কিছু বলার আছে কিনা? জবাবে রোজিনা বলেন, আমার সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে, আমার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিয়ে রিপোর্ট করায় আমার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে।

এদিকে, রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা, লাঞ্ছনা ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে আজ মঙ্গলবার বিবৃতি দিয়েছেন ১১ জন বিশিষ্ট নাগরিক। মামলা প্রত্যাহার করে অবিলম্বে তার মুক্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। বিবৃতিতে বলা হয়, রোজিনা আক্রান্তের কারণ খতিয়ে দেখা, হামলাকারীদের চিহ্নিত করা এবং তাদের কর্মকাণ্ড তদন্ত করা হোক।

rojina islam

রোজিনা ইসলামকে হেনস্তার পর গ্রেপ্তার করার প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলন বয়কট করেছে সাংবাদিকরা। ​বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএইচআরএফ) পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেয়া হয়।

প্রসঙ্গত, সোমবার পেশাগত দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম। সেখানে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাকে ৫ ঘণ্টার বেশি সময় আটকে রেখে হেনস্তা করেন। এক পর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরপর খবর পেয়ে রাত ৯টার দিকে পুলিশ তাকে সচিবালয় থেকে শাহবাগ থানায় নিয়ে আসে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সাংবাদিক রোজিনার বিরুদ্ধে অনুমতি ছাড়া ছবি তোলা ও তথ্য চুরির অভিযোগে মামলা করা হয়। ৩৭৯, ৪১১ এবং অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট এর ৩/৫- এই তিনটি ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।