টিকটকের নাম শুনলেই দৃশ্যপটে প্রথমেই ভেসে ওঠে বিভিন্ন ভঙ্গিমায় কথাবার্তা, নাচানাচি ও গানের কিছু ভিডিও। তরুণ প্রজন্মের কাছে টিকটক মানেই যেন এক বিশাল বিনোদনের মাধ্যম। এর জনপ্রিয়তা ছাড়িয়ে গেছে ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রামকে। টেক্কা দিচ্ছে ইউটিউবের সঙ্গেও।

tiktok logo 1টিকটক

আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ে চীনা শর্ট ভিডিও তৈরির প্লাটফর্মটির অপব্যবহার বেড়েই চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হলেও নেটিজেনদের জন্য নতুন এক মৃত্যুর ফাঁদ হয়ে দেখা দিয়েছে এই টিকটক। চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে টিকটক করতে গিয়ে বাংলাদেশে প্রাণ গেছে ১০ জন তরুণ-তরুণীর।

সর্বশেষ গত ১১ জুলাই কুমিল্লায় চলন্ত ট্রেনের ছাদে টিকটক করতে গিয়ে পা পিছলে নিহত হয়েছে মেহেদী হাসান নামের ১৫ বছর বয়সী এক কিশোর। একইমাসে ৮ জুলাই নোয়াখালীর চাটখিলে টিকটক ভিডিও তৈরির সময় অসাবধানতাবশত পা পিছলে প্রাণ গেছে সানজিদা আক্তার নামে ১১ বছর বয়সী এক কিশোরীর।

টিকটকে ভিডিও আপলোডকে কেন্দ্র করে ২০১৯ সালের মার্চ মাসে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আরাফাত খুন হয়। গত ২ মার্চ রাজবাড়ী জেলার কালোখালি উপজেলায় টিকটক করতে গিয়ে রেলের নিচে কাটা পড়ে হোসেন (১৬) নামে একজনের মৃত্যু হয়। ৮ মে নড়াইলের কালিয়ায় টিকটক করতে বাধা দেওয়ায় মায়ের সাথে অভিমান করে কীটনাশক পানে আত্মহত্যা করে সুমি আক্তার (১৯)। ১৬ মে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার শহরের লাল ব্রিজে হৃদয় (১৫) নামে এক কিশোর খুলনাগামী নকশিকাঁথা এক্সপ্রেস ট্রেনের সামনে টিকটক বানাতে গিয়ে কাটা পড়ে। ২২ মে নীলফামারীর সৈয়দপুরে টিকটক করতে গিয়ে নদীতে ডুবে মৃত্যু হয় মুস্তাকিম ইসলাম (১৬) নামে এক কিশোরের।

টিকটককে কেন্দ্র করে তরুণদের এই মৃত্যুর মিছিলের পরিসংখ্যান দিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।

বুধবার প্রকাশ করা এই পরিসংখ্যান থেকে আরও জানা যায়, গত বছর ২০ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জে টিকটক ভিডিও বানাতে গিয়ে নির্মানাধীন তিন তলা ভবন থেকে পড়ে ১৪ বছর বয়সী অনিল নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়। সংগঠনটি মনে করে, তরুণ তরুণীদের অকাল মৃত্যুর দায়ভার কোনভাবেই টিকটক কর্তৃপক্ষ এড়িয়ে যেতে পারে না। এর দায়ভার তাদের নিতে হবে।

এ বিষয়ে গ্রাহক স্বার্থ রক্ষায় নিয়োজিত এই সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, টিকটকের দরুন এতো তরুণ-তরুণীর মৃত্যু হলেও এখন পর্যন্ত কোন অভিভাবক মামলা করেনি। টিকটক বাংলাদেশের লাইসেন্সধারী কোনো প্রতিষ্ঠান নয়। এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে, অথচ সরকার এই প্ল্যাটফর্ম থেকে কোন প্রকার রাজস্ব পায় না।

ইতেমধ্যে আমরা জানতে পেরেছি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী টিকটক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু আমাদের দাবি, মন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করে বা কমিশনের কোন সদস্যকে নিয়ে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে টিকটকের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে করে টিকটক বন্ধ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। ‌

Stay ahead of the curve with the latest news and insights on technology, mobile computing, laptops, and outer space. Our team of expert writers brings you in-depth analysis of the latest trends and breakthroughs, along with hands-on reviews of the newest gadgets and devices. From the latest smartphones to the mysteries of the cosmos, we've got you covered.