করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি খাতই বড় ধাক্কার মুখে পড়েছে। সেই তুলনায় প্রযুক্তি বাজারে ধাক্কার প্রভাব একটু হলেও কম। গুগল জানিয়েছে, তাদের বিভিন্ন সেবায় আগের চেয়ে গ্রাহকদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। কিন্তু এর মধ্যেই একটা ধাক্কার খবর এলো— করোনাভাইরাস সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে কানাডায় চলমান স্মার্ট সিটি উদ্যোগ থেকে পেছনে হটতে হচ্ছে গুগলকে।

google smart city initiative scrapped

কানাডার স্মার্ট সিটি উদ্যোগটি দেখভাল করছিলো গুগলের প্রতিষ্ঠান সাইডওয়াক ল্যাবস। প্রযুক্তিনির্ভর চলচ্চিত্রে যেই ধরনের স্মার্ট সিটি দেখা যায়, গুগল ঠিক তেমনই একটি বাস্তব শহর বানানোর পথে হাঁটছিলো। কিন্তু করোনাভাইরাস বৈশ্বিক অর্থনীতি যে আকস্মিক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, তা পাশ কাটিয়ে আর এই উদ্যোগ টেনে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

উদ্যোগটি নিয়ে অবশ্য আগে থেকেই সামান্য বিতর্ক ছিলো। সাইডওয়াককে উদ্যোগটি বাতিল করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিলো। কিন্তু গুগল সবসময়ই উদ্যোগটি নিয়ে আশা দেখিয়ে এসেছে। কিন্তু এখন এটির প্রধান নির্বাহী ড্যান ডকটরফকে বলতে হচ্ছে যে, করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্টি হওয়া অর্থনৈতিক দুর্দশার কারণে উদ্যোগটি টেকানো যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, “অপ্রত্যাশিত অর্থনৈতিক সমস্যা পুরো পৃথিবীকেই আঘাত করেছে। এই অবস্থায় টরোন্টোর রিয়াল এস্টেট বাজারের জন্য এই উদ্যোগটিকে অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা একটি সত্যিকারের স্মার্ট সিটি গড়ার উদ্যোগ নিয়েছিলাম।”

তিনি আরো বলেন, “গত আড়াই বছরে আমরা যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলাম, তা সত্যিই নানা রকমের নাগরিক সমস্যা সমাধান করতে পারতো। বিশেষ করে পরিস্থিতির সাথে মানুষের মানিয়ে নেওয়া এবং টেকসই হওয়ার দিকটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিলো।”

উদ্যোগটির মূল দর্শন ছিলো— এমন এক শহর তৈরি করা যা পুরোপুরি প্রযুক্তি নির্ভর। এর মধ্যে ছিলো স্বয়ংক্রিয় সড়ক ব্যবস্থা, চালকবিহীন গাড়ি, আবর্জনা সংগ্রহ ও পরিষ্কার করার নতুন পদ্ধতি, বাতাসের কোয়ালিটি নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রচুর সেন্সরের ব্যবহার এবং লোকজনের চলচাল ইতিবাচকভাবে নজরদারি করা। এ ছাড়া পুরোপুরি নতুন রকম পদ্ধতিতে ভবন তৈরিও ছিলো এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্যের অংশ।

কিন্তু কানাডার নাগরিক শ্রেণি এই উদ্যোগের সমালোচনা করেছেন। কারণ তারা বলেছেন যে, সাইডওয়াক যেভাবে কাজটি করার দায়িত্ব পেয়েছে, তা স্বচ্ছ ছিলো না। একই সাথে সাইডওয়াক যে আয়তনের মধ্যে তাদের স্মার্ট সিটি গড়ার কথা বলেছিলো, মূল কাজটি ছিলো তার চেয়েও অনেক বেশি জায়গাজুড়ে।

এক পর্যায়ে একটি স্বাধীন কমিটি গঠন করে পুরো উদ্যোগটির বাস্তবতা এবং উদ্দেশ্য পর্যালোচনা করা হয়। ওই কমিটি তাদের প্রতিবেদনে কর্তৃপক্ষকে জানায় যে, উদ্যোগটির অনেকগুলো কাজ কেবলই প্রযুক্তির যথেচ্ছ ব্যবহার। বাস্তবে এগুলো প্রয়োজনহীন বলে মন্তব্য করে তারা। তারপরও সাইডওয়াককে কাজটি চালিয়ে যেতে বলা হয়। কিন্তু মূল উদ্যোগের ১৯০ একর জায়গা থেকে তা সীমিত হয়ে আসে মাত্র ১২ একরের মধ্যে।

শেষ পর্যন্ত সীমিত উদ্যোগটিও আর থাকলো না। অন্যান্য চাপের কারণে এমনিতেই সাইডওয়াক বেশ বিপদে পড়ে গিয়েছিলো। এর মধ্যে করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি তাদের কাজ আরো কঠিন করে তুলে এবং শেষ পর্যন্ত উদ্যোগটি বাদই দিতে হয় তাদের।

Stay ahead of the curve with the latest news and insights on technology, mobile computing, laptops, and outer space. Our team of expert writers brings you in-depth analysis of the latest trends and breakthroughs, along with hands-on reviews of the newest gadgets and devices. From the latest smartphones to the mysteries of the cosmos, we've got you covered.