অতিরিক্ত গেমিং আসক্তিকে একটি মানসিক ব্যাধি হিসেবে স্বীকৃত দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। প্রথমবারের মতো সংস্থাটি এই ধরনের পদক্ষেপ নিলো।

gaming addiction is a mental health issue says who

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১১তম ইন্টারন্যাশনাল ক্লাসিফিকেশন অব ডিজিজে (আইসিডি) গেমিং আসক্তিকে গেমিং ডিসঅর্ডার বা গেমিং ব্যাধি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

খসড়া ডকুমেন্টে বলা হয়েছে বিরতিহীনভাবে গেম খেলা বা সময়ে সময়ে গেম খেলার জন্য অস্থির হয়ে উঠা এবং জীবনের অন্যান্য কাজের চেয়ে গেমসকে বেশি গুরুত্ব দেওয়াই এই রোগের প্রধান উপসর্গ।

বেশ কয়েকটি দেশ এর মধ্যেই অতিরিক্ত গেমিং আসক্তিকে বৃহত্তর সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশের বেসরকারি ক্লিনিকে এই ধরনের আসক্তির চিকিৎসাও দেওয়া হয়।

আইসিডির সর্বশেষ সংস্করণ ১৯৯২ সালে সম্পূর্ণ হয়। ২০১৮ সালে এতে নতুন কিছু নির্দেশনা যুক্ত হওয়ার কথা ছিলো।

এই নির্দেশনায় রোগের কোড, লক্ষণ ও উপসর্গ বলা থাকে, যা চিকিৎসকরা কোনো রোগকে চিহ্নিত করার জন্য ব্যবহার করেন।

নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, গেমিংয়ের ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক আচরণ যদি ১২ মাস বা এর চেয়ে বেশি সময় ধরে চলতে থাকে তাহলে তা মানসিক ব্যাধি হিসেবে চিহ্নিত হবে। তবে উপসর্গগুলো যদি ব্যাপক হয়, তাহলে ১২ মাসের কম সময়েও এই ব্যাধি হতে পারে।

উপসর্গগুলোর মধ্যে আছে: গেমসে ডুবে থাকার কোনো ঠিক-ঠিকানা না থাকা, গেমসের গুরুত্ব দিনে দিনে বাড়িয়ে তোলা, নেতিবাচক প্রভাব বোঝার পরও গেমস চালিয়ে যাওয়া ইত্যাদি।

নাইটিঙ্গল হাসপাল, লন্ডনের প্রযুক্তি আসক্তি বিশেষজ্ঞ ডক্টর রিচার্ড গ্রাহাম গেমিং আসক্তিকে রোগ হিসেবে স্বীকৃত দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “এটি একটি বড় ঘটনা কারণ এর মাধ্যমে আরো বিশেষায়িত সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। এখন থেকে এই ধরনের ঘটনা আরো গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে।”

যারা এই ধরনের আসক্তির চিকিৎসার প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন, রিচার্ড গ্রাহাম তাদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।

তিনি বলেন, “(চিকিৎসা না করার সিদ্ধান্ত) এমন বাবা-মাকে বিভ্রান্ত করে দিতে পারে, যারা তাদের সন্তানদের কেবলই কৌতুহলি গেমার মনে করেন।”

তিনি আরো জানান, প্রতি বছর অন্তত ৫০টি নতুন ঘটনা তিনি দেখেন, যাতে প্রযুক্তির প্রতি তরুণদের আসক্তির বিষয়টি স্পষ্ট হয়। প্রযুক্তির কারণে কারো স্বাভাবিক কার্যক্রম, যেমন— ঘুম, খাওয়া, পড়াশোনা— ব্যাহত হচ্ছে কি না, তার মাধ্যমে তিনি রোগটি চিহ্নিত করেন।

কেউ যদি নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে বেশি গেম খেলেন, তাহলে জাপানে খেলোয়াড় স্বয়ংক্রিয়ভাবে বদলে যায়। চীনে একটি গেমিং প্রতিষ্ঠান শিশুদের জন্য নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে গেম খেলার ব্যবস্থা বন্ধ করে রেখেছে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখানো হয়েছে, শিশুরা আগের চেয়ে অনেক বেশি সময় স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে কাটায়। তারপরও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তারা জীবনের অন্যান্য বিষয়ের সাথে সমন্বয় করতে পারে।

আট থেকে ১৮ বছর বয়সী বাচ্চাদের উপর চালানো জরিপে দেখা গেছে, ছেলে শিশুরা মেয়েদের তুলনায় বেশি সময় গেমস খেলে কাটায়।

গবেষক কিলিয়ান মুলান বলেন, “লোকজন মনে করে বাচ্চারা সারাক্ষণ স্ক্রিনে সময় কাটায়। কিন্তু আমাদের গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে যে বাস্তবতা আসলে এ রকম নয়।”

Stay ahead of the curve with the latest news and insights on technology, mobile computing, laptops, and outer space. Our team of expert writers brings you in-depth analysis of the latest trends and breakthroughs, along with hands-on reviews of the newest gadgets and devices. From the latest smartphones to the mysteries of the cosmos, we've got you covered.