আজ বিশ্ব ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা দিবস। দিবসটিকে কেন্দ্র করে গ্রাহকদের স্বার্থরক্ষাকারী সংগঠন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এ সময় ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার জন্য জনসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ।

personal information protectionবাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের মানববন্ধন

সভাপতির বক্তব্যে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, টেলিযোগাযোগ ও প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধনের সাথে সাথে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য হুমকির মুখে পড়েছে। রাষ্ট্রের শীর্ষ ব্যক্তি থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিকদের কেউ আর নিরাপদ নেই। কথায় কথায় কল রেকর্ড বা ভিডিও রেকর্ড, ব্যক্তিগত ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যত্রতত্রভাবে ছড়িয়ে পড়ছে।

চুল কাটার বা চুলে কলপ দেওয়া থেকে শুরু করে হাজার হাজার ই-কমার্স এর নামে গ্রাহকের ব্যক্তিগত নাম্বারে বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহকদেরকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। আজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করাও ভীতির কারণ হয়ে যাচ্ছে। ডিজিটাল বিন্যাস এখন আর নিরাপদ নেই।

তিনি আরো বলেন, ডাটা প্রাইভেসি দিবসের মূল উদ্দেশ্য ছিল ব্যক্তিগত গোপনীয়তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন, তথ্য সুরক্ষা ও আস্থা প্রতিষ্ঠা করা। সংবিধানের ৪৩(খ) অনুচ্ছেদে প্রাইভেসি রাইটস বা ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা ও গোপনীয়তাকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে। অথচ স্বাধীনতার ৫০ বছরেও বাংলাদেশ ডাটা প্রাইভেসি আইন প্রণয়ন করা হয়নি।

দেশে বর্তমানে সক্রিয় সিমের পরিমাণ প্রায় ১৮ কোটি। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১২ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলক ফাইভ জি চালু করা হয়েছে। এম এফ এসে লেনদেনকারীর সংখ্যা প্রায় ৯ কোটি। অনলাইন ব্যাংকিং সেবার সাথে যুক্ত সক্রিয় গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ৫ কোটি। আজকাল জন্ম নিবন্ধন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি সকল সেবা নিতে হয় অনলাইনে।

তিনি বলেন, অনলাইনে সকল সেবা নেওয়ার সময় নাগরিকদের আঙ্গুলের ছাপ, এনআইডি নাম্বার, জমির দলিলের কপি, বিদ্যুৎ বিলের কপিসহ অন্যান্য প্রায় ১৮ প্রকার তথ্য প্রদান করতে হয়।

সিম নিবন্ধনে আঙ্গুলের ছাপ দরকার হয়। সকল সেবা এনআইডি নাম্বার বা মুঠোফোন নাম্বার দ্বারা সমাধান বা একই ছায়া তলে না আনার কারণেই যত্রতত্র তথ্য প্রদান করায় বাচ্ছে বিপত্তি ও নাগরিক তথ্য বা ব্যক্তিগত তথ্য হুমকির সম্মুখীন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এর ২৬ ধারায় অনুমতি ছাড়া কারো ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ কে অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

মানববন্ধনে এ সমস্যা সমাধানে কয়েকটি দাবি তুলে ধরে হয়, সেগুলি হচ্ছে-

০১। ব্যক্তিগত ডাটা সুরক্ষা আইন ২০২২ নামে চলতি অধিবেশনেই পাস করতে হবে।

০২। সরকারি বা বেসরকারি সকল সেবার ক্ষেত্রে কেবলমাত্র এনআইডি নাম্বার বা ফোন নাম্বার দিয়ে সেবা নিশ্চিত করতে হবে।

০৩। গ্রাহকের ব্যক্তিগত ফোনালাপ বা অডিও-ভিডিও প্রকাশকারীদের শনাক্ত করে দ্রুত শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

০৪। ফিঙ্গারপ্রিন্ট কেবলমাত্র জাতীয় পরিচয় পত্রের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে অন্যান্য সেবার ক্ষেত্রে ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা যাবে না।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আবু বক্কর সিদ্দিক, বাংলাদেশ ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, জাতীয় নারী আন্দোলনের সভাপতি নেত্রী মিতা হক, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু, এনডিএম এর সাংগঠনিক সম্পাদক লায়ন নুরুজ্জামান হীরা, মোবাইলে রিচার্জ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলু, সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক জামিল, কেন্দ্রীয় সদস্য শাহজাহান শেখ ফরিদ প্রমূখ।

উপস্থিত নেতৃবৃন্দ নাগরিক স্বার্থে তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

Stay ahead of the curve with the latest news and insights on technology, mobile computing, laptops, and outer space. Our team of expert writers brings you in-depth analysis of the latest trends and breakthroughs, along with hands-on reviews of the newest gadgets and devices. From the latest smartphones to the mysteries of the cosmos, we've got you covered.