বাংলাদেশে রাজধানী ঢাকার মোবাইল ফোনের গ্রাহক সবচেয়ে বেশি ম্যালওয়্যার আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। দেশের ৪ টেলিকম অপারেটরদের জন্য সরকারের কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম বা সার্টের সাইবার থ্রেট গবেষণা দলের করা ‘হরাইজন স্ক্যানিং রিপোর্টে’ এ তথ্য উঠে এসেছে।

operatorফাইল ছবি

রিপোর্টে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল এই চারমাসের ম্যালওয়্যার সংক্রমণের হিসেব তুলে ধরা হয়েছে। এতে দেখা যায়, গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক এবং টেলিটকের গ্রাহকগণ ৫ লাখ ২৫ হাজার ৮২০ বার ম্যালওয়্যার আক্রমণের শিকার হয়েছেন।

সবচেয়ে বেশি ম্যালওয়্যার আক্রমণের শিকার হয়েছেন ঢাকার মানুষ। অ্যান্ড্রয়েড.হুমার এবং অ্যাভাল্যান্স.এন্ড্রোমিডা এই দুটি ম্যালওয়্যারের আক্রমণের হার ছিল বেশি। অন্যান্য ম্যালওয়্যারের মধ্যে আছে অ্যান্ড্রয়েড.রুটনিক, অ্যান্ড্রয়েড.ব্যাকডোর.প্রিজমিস, পাইকস্পা,অ্যান্ড্রয়েড.আইওপি, অ্যান্ড্রয়েড.স্কাইফিন, লেথিক, ভাইরুট, সিঙ্কহোল, নিকুরস, সালিটি ইত্যাদি।

মোবাইল অপারেটরদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গ্রাহক গ্রামীণফোনের, ৮ কোটির উপরে। চলতি বছরের প্রথম চার মাসে ৪ মাসে ২ লাখ ৯৪ হাজার ৬৫৭ বার ম্যালওয়্যার আক্রমণের শিকার হয়েছেন গ্রামীণফোনের গ্রাহকরা। অ্যাভাল্যান্স.এন্ড্রোমিডার সংক্রমণের হার ছিল ২৪ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং অ্যান্ড্রয়েড.হুমার ২৪ দশমিক ৪ শতাংশ। ঢাকার অন্তত ১০ শতাংশ গ্রাহক (গ্রামীণফোন) ম্যালওয়্যার আক্রমণের শিকার হয়েছেন।

দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রবি আজিয়াটা, তাদের গ্রাহক সংখ্যা ৫ কোটির উপরে। এই অপরেটরের গ্রাহকগণ ১ লাখ ৪ হাজার ৫৭৮ বার ম্যালওয়্যার আক্রমণের শিকার হয়েছেন। অ্যাভাল্যান্স.এন্ড্রোমিডার সংক্রমণের হার ছিল ১২ দশমিক ৮৫ শতাংশ। ঢাকার ১০ দশমিক ৬৪ শতাংশ গ্রাহক (রবি) ম্যালওয়্যার আক্রমণের শিকার হয়েছেন।

দেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ গ্রাহক বাংলালিংকের, তাদের রয়েছে প্রায় ৪ কোটির মতো ব্যবহারকারী। প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহকরা ৯৪ হাজার ৪২৩ বার ম্যালওয়্যার আক্রমণের শিকার হয়েছেন। অ্যান্ড্রয়েড.হুমার সংক্রমণের হার ছিল ২১ দশমিক ৬৪ শতাংশ। বাংলালিংকের ৩৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ ঢাকার গ্রাহক ম্যালওয়্যার আক্রমণের শিকার হয়েছেন। কেরানিগঞ্জের গ্রাহকদের আক্রমণের সংখ্যাটাও অনেক বেশি, ৩০ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

একমাত্র রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন মোবাইল অপারেটর টেলিটক। তাদের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৭০ লাখের মতো। ২৮ হাজার ১৬২ বার ম্যালওয়্যার আক্রমনের শিকার হয়েছের টেলিটক গ্রাহকরা। অ্যাভাল্যান্স.এন্ড্রোমিডার সংক্রমণের হার ছিল ১১ দশমিক ৩৯ শতাংশ। ঢাকার টেলিটক গ্রাহকরা সবচেয়ে বেশি ম্যালওয়্যার আক্রমণের শিকার হয়েছেন, ৭১ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

‌এছাড়া ঢাকার বাহিরে গ্রামীণফোনের চাটমোহড়, সাতক্ষীরা সদর, দিনাজপুর, কেরানিগঞ্জ, বগুড়া সদর, রংপুর, পাবনা সদর, রাজশাহী এবং বেলাবোর ১০ শতাংশ গ্রাহক ম্যালওয়্যার আক্রমণের শিকার হয়েছেন।

রবির কুমিল্লা সদর, লক্ষ্মীপুর, কেরানিগঞ্জ, কক্সবাজার সদর, চট্টগ্রাম, আনোয়ারা এবং সিলেটের ১০ দশমিক ৬৪ শতাংশ গ্রাহক ম্যালওয়্যারে আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া ঝালকাঠি সদরের ৮ দশমিক ৫১ শতাংশ গ্রাহক ম্যালওয়্যারে আক্রান্ত হয়েছেন।

বাংলালিংকের আড়াইহাজারে ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ, কুমিল্লা সদরের ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ গ্রাহক, তেজগাঁওয়ের ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ এবং বানারিপারর ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ গ্রাহক ম্যালওয়্যারে আক্রান্ত হয়েছেন।

টেলিটকের ঢাকার বাহিরে ভোলাহাট ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ এবং নীলফামারী সদরের ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ গ্রাহক ম্যালওয়্যারে আক্রান্ত হয়েছেন।

অ্যান্ড্রয়েড.হুমার এবং অ্যাভাল্যান্স.এন্ড্রোমিডা এই দুটি ম্যালওয়্যার অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস প্ল্যাটফর্মে অনুমোদনহীন অ্যাপ বা অন্যান্য অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে ছড়ায়।

ম্যালওয়্যার কি

ম্যালওয়্যার একটি ক্ষতিকর এপ্লিকেশন। যা স্মার্টফোন বা অন্য কোনো ডিভাইসে অনুমতি ছাড়াই বিভন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। সেটি হতে পারে আপনার উপর নজরদারি করা, আপনার মোবাইলের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেওয়া অথবা আপনার ডিভাইসে থাকা ডাটা হাতিয়ে নেওয়া। ব্যাংক একাউন্ট, ক্রেডিট কার্ডের তথ্যও হ্যাকারদের কাছে চলে যেতে পারে।

তাই সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্মার্টফোনে অ্যাপ ইনস্টল করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যাতে করে ভুয়া বা বিপজ্জনক কোনো অ্যাপস ফোনে ইনস্টল না হয়ে যায়। সন্দেহজনক লিংক ক্লিক করা থেকেও বিরত থাকতে হবে।

বাংলাদেশ ই-গভর্নমেন্টে সার্ট টেলিকম অপারেটরদের আইটি অবকাঠামো রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পরামর্শ দিয়েছে। ক্রমবর্ধমান সাইবার হুমকি মোকাবেলায় তাদের সক্ষমতা বাড়ানোর কথাও বলা হয়েছে।

Stay ahead of the curve with the latest news and insights on technology, mobile computing, laptops, and outer space. Our team of expert writers brings you in-depth analysis of the latest trends and breakthroughs, along with hands-on reviews of the newest gadgets and devices. From the latest smartphones to the mysteries of the cosmos, we've got you covered.