পাঁচ ম্যাচেই মুনিমের প্রতি মোহ কেটে গেল!

বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পার্থক্য যোজন-যোজন। বিভিন্ন সময়ে অনেক ক্রিকেটারই তা প্রমাণ করেছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তপ্ত জমিনে টিকে থাকতে পারেননি অনেকেই। এমন তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন মুনিম শাহরিয়ার।

ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করলেও জাতীয় দলে ব্যর্থ মুনিম শাহরিয়ার

বয়সভিত্তিক ক্রিকেট খেললেও দীর্ঘদিন বিসিবির কাঠামোর বাইরে ছিলেন ডানহাতি এ ওপেনার। খালেদ মাহমুদ সুজনের অধীনে রাজশাহীর বাংলা ট্র্যাক একাডেমিতে ভর্তি হয়ে কোচিং করেছেন।

এরপর টিম ডিরেক্টরের আর্শীবাদে আবাহনীতে সুযোগ পান। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর হয়ে পারফর্ম করেছেন। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে পাওয়ার প্লেতে মারকুটে ব্যাটিংয়ের চেষ্টা করে অনেক সময় সফলও হয়েছেন।

সবার নজরে এসেছেন বিপিএলে ফরচুন বরিশালের হয়ে তিনটি ম্যাচে পারফর্ম করে। যার ফলেই সুজনের পছন্দে জাতীয় দলেও চলে আসেন মুনিম। বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যাপটাও পেয়ে যান অনায়াসে। চলতি বছরের মার্চে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে ১৭ রানের ইনিংস খেলে তার যাত্রা শুরু। ওপেনিংয়ে দেশের বড় ভরসা হবেন মুনিম, এমনই আশাবাদ ব্যক্ত করেছিল টিম ম্যানেজমেন্ট।

সেই স্বপ্ন থমকে গেল মাত্র ৫ ম্যাচেই। আফগানিস্তান সিরিজে দুই ম্যাচ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে এক ম্যাচ এবং জিম্বাবুয়ে সফরে দুই ম্যাচ খেলেছেন মুনিম। ৫ ম্যাচে ৬.৮০ গড়ে ৩৪ রান করেছেন তিনি, স্ট্রাইক রেট ৭২.৩৪। তাতেই বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টের মোহ কেটে গেছে মুনিমের প্রতি।

এশিয়া কাপের জন্য ঘোষিত বাংলাদেশ দলে নেই ২৪ বছর বয়সী এই ওপেনার। অকূল পাথারে পড়ে যাওয়া মুনিমকে ছুঁড়ে ফেলতে নির্বাচকরাও আর কালক্ষেপণ করেননি।

মুনিম একমাত্র সুজনের ইচ্ছাতেই জাতীয় দলে খেলে গেলেন, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ নির্বাচকদের সবার সায় ছিল না তাকে দলে ডাকার সিদ্ধান্তে। ক্ষমতাবান টিম ডিরেক্টরের সিদ্ধান্ত মানতে হয়েছে সবাইকে।

যদিও শুরু থেকেই দর্শক থেকে শুরু করে অনেকেরই আশঙ্কা ছিল তাকে ঘিরে, ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করলেও এত দ্রুত জাতীয় দলে খেলার সামর্থ্য তার ছিল কি-না। মুনিমের সুযোগ পাওয়াটা অন্তত এটা প্রমাণ করে যে, বর্তমান সময়েও এক মৌসুমের পারফরম্যান্স দিয়ে বাংলাদেশ দলে খেলা যায়।

আবার মুনিম দৃষ্টান্ত রেখে গেলেন যে, সুজনের মতো প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় থাকলে জাতীয় দলে খেলা কঠিন নয়। চার মাসের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে প্রতিটি ম্যাচেই সংগ্রাম করেছেন মুনিম। এই অঙ্গণের বোলিংয়ের বিপক্ষে অসহায় লাগছিল তাকে। সামর্থ্যের অভাবটা স্পষ্ট ছিল।

এখন এই বাদ পড়ার, পারফর্ম না করার তিক্ততা কাটিয়ে উঠে আবারও ঘরোয়া ক্রিকেটে ছন্দে ফিরতে পারবেন কি-না এই তরুণ ওপেনার, সেটাই দেখার বিষয়।