কী আছে ঢাকা টেস্টের ভাগ্যে?

পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিনও শেষ হয়নি। এর মধ্যেই টেস্টের ভাগ্যে কী আছে তা নিয়ে ভাবাভাবিটা হয়তো ঠিক মানানসই না। কিংবা কারো কাছে হয়তো টেস্টের ভাগ্য নিয়ে কথা বলাটাকে স্রেফ বাতুলতা মনে হবে। কিন্তু আসলেই কি প্রশ্ন উঠছে না?

খুলনা টেস্টের আগে ‘জয়ের জন্যই মাঠে নামবো’ বলে নেমেছিলেন মুশফিকরা। কিন্তু খুলনা টেস্টে বাংলাদেশের একাদশটা কি আসলেই টেস্ট জয়ের মতো ছিলো? টেস্ট মানেই ক্রিকেটীয় সামর্থ্যের সর্বোচ্চ পরীক্ষা। সেই পরীক্ষায় নামার আগে বাংলাদেশ কি যথাযথ প্রস্তুতি নিচ্ছে? পাকিস্তানের মতো প্রতিষ্ঠিত টেস্ট শক্তিকে হারানোর মতো রসদও কি আছে মুশফিকের ভাণ্ডারে?

এভাবে প্রশ্ন করতে গেলে খরচ হয়ে যাবে শয়ে শয়ে শব্দ। কিন্তু প্রশ্নের স্রোত তাতে ফুরাবে না। সুতরাং এই কটি প্রশ্ন নিয়েই হোক কিছু কথা।

টেস্টে স্কোরবোর্ডে বড় রান তোলার জন্য ব্যাটিং লাইনে যেমন পর্যাপ্ত শক্তি দরকার,তেমনি প্রতিপক্ষের ব্যাটিং লাইন গুড়িয়ে দেওয়ার সক্ষমতাও প্রয়োজন। এই সূত্রটা অঘোষিতভাবে অপরিহার্য। প্রতিটি দলই এভাবে চিন্তা করে। চিন্তাটা বাংলাদেশেরও আছে বটে। কিন্তু মাঠের খেলায় কিংবা একাদশ নির্বাচনে সেই চিন্তার প্রতিফলন কই?

খুলনা টেস্টে একজন অভিষিক্তসহ মাত্র তিনজন বিশেষজ্ঞ বোলার নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ। তিনজনের মধ্যে কেবল তাইজুল পেরেছেন দাবি মেটাতে। বাকি দুজনই ব্যর্থ। ব্যর্থতার মিছিলে ছিলেন সাকিব আল হাসানও। অথচ তার উপর টেস্ট সিরিজে বিশেষভাবে ভরসা ছিলো বাংলাদেশের। সেই ভরসার দাম রাখতে পারেননি পারেননি সাকিব।

তারপরও খুলনা টেস্ট হারেনি বাংলাদেশ। বরং ওই ম্যাচ শেষ হয়ে গৌরবের ড্রয়ে। তামিম- ইমরুল যদি মহাকাব্যিক ওই জুটিটা না গড়তেন, তবে খুলনা টেস্টে বাংলাদেশের ভাগ্যে হারই ছিলো।

খুলনার ঘটনার পর একাদশে ইতিবাচক পরিবর্তনের আশা করেছিলেন অনেকেই। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। একইরকম একাদশ নিয়ে মুশফিকরা মাঠে নামলেন ঢাকাতেও। এর মধ্যে আবার টস জিতে বোলিং নেওয়ার বিলাসিতাও দেখালেন অধিনায়ক। যে বিলাসিতার মাশুল দিতে হচ্ছে পাকিস্তানের স্কোর বোর্ডের সেঞ্চুরি-ডাবল সেঞ্চুরি দেখতে দেখতে।

খুলনা থেকে শিক্ষা না নেওয়া বাংলাদেশ ঢাকায় নামলো শাহাদাতকে নিয়ে। রুবেলের বদলে সুযোগ পেয়ে এক ওভারও বোলিং করতে পারেননি তিনি। প্রথম ওভারেই ইনজুরিতে পড়েন শাহাদাত। পরে লাঞ্চ বিরতির সময় ওয়ার্ম আপ করতে গিয়ে পড়েন আরো বিপদে। এবার তাকে মাঠের বাইরে চলতে যেতে ছয় মাসের জন্য। ফলে ঢাকা টেস্টে কার্যত দশজনকে নিয়ে খেলতে হচ্ছে।

এ অবস্থায় ঠিক কোথায় যাচ্ছে ঢাকা টেস্ট? দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশন শেষ হওয়ার আগে পাকিস্তান দুই সেঞ্চুরি ও এক ডাবল সেঞ্চুরিতে তুলে ফেলেছেন প্রায় সাড়ে পাঁচশ রান। উইকেট পড়েছে মোটে চারটি। সব মিলিয়ে আকাশসমান চাপে পড়ে গেছে বাংলাদেশ। এই চাপ সামলে ঢাকা টেস্টে ঠিক কতোটা ভালো পরিণতি হবে বাংলাদেশের, তা নিয়ৈ সংশয় আছেই। আছে শঙ্কাও। সেই শঙ্কাটা অবশ্যই হারের। সেই শঙ্কাটা চরম লজ্জায় পড়ারও।

আপনি আরো পড়তে পারেন

৫৭ বলে গেইলের ১১৭ রান!

ভূমিকম্পে নিহতদের সেঞ্চুরি উৎসর্গ করলেন ইউনিস

লিগামেন্ট ছিঁড়ে গেছে শাহাদাতের