উথাপ্পা: মনে হত দৌড়ে ব্যালকনি থেকে লাফ দেব

বড় অবহেলায় জন্মেছিলেন রবিন উথাপ্পা। অসাধারণ প্রতিভা আর ব্যাট-গ্লাভস হাতে দারুণ পারফর্ম করেও দলে নিয়মিত জায়গা হয়নি এই ক্রিকেটারের। পুরোটা সময় লড়তে হয়েছে মাহেন্দ্র সিং ধোনি আর দিনেশ কার্তিকের সাথে। আর ধোনির জয়জয়কারে ক্যারিয়ারের প্রায় সময়ই দলের বাইরে থাকতে হয়েছে উথাপ্পাকে।

জাতীয় দলের জার্সি চাপানোর সুযোগ খুব বেশি না পেলেও দমে যাননি। ঘরোয়া ক্রিকেটকেই নিজের লক্ষবস্তু বানিয়েছেন, সাথে মিটিয়েছেন রানের ক্ষুধা। বিশেষ করে আইপিএলে কলকাতার হয়ে উথাপ্পার অবদান ভোলার নয়। কেকেআরের শিরোপা জয়েও বিরাট ভূমিকা আছে এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানের।

অথচ এই ক্রিকেটারই কি না আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। মূলত অফ সিজনে ক্রিকেটের বাইরে থাকায় মানসিক চিন্তা গিলে খেত উথাপ্পাকে। যার জন্যই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। আর এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্ত হতে মনোবিদের দারস্থ হতে হতো তাকে।

উথাপ্পা বলেন- এমন অনেক সময় গিয়েছে যখন ক্রিকেটের কথা একেবারেই মাথায় আসত না। সবচেয়ে দূরের ভাবনা তখন ছিল ক্রিকেট। ভাবতাম যে, কী ভাবে যে আজকের দিনটা কাটবে। পরের দিনটা কী ভাবে আসবে। ভাবতাম আমার জীবনে কী ঘটবে, কোন পথে আমি চলব। যে দিন খেলা থাকত না, সে দিন আর অফসিজনে খুব কঠিন হয়ে পড়ত। এক এক সময় মনে হত তিন গোনার পর দৌড়ে গিয়ে ব্যালকনি থেকে লাফ দেব। কিন্তু যে কোনও কারণেই হোক, নিজেকে সামলাতে পেরেছিলাম। তখন ডায়েরি লিখতে শুরু করি। নিজেকে বুঝতে চেষ্টা করি। নিজের জীবনে যে পরিবর্তনগুলো করতে চাই সেগুলো করার জন্য বাইরে থেকে সাহায্য নিয়ে আসি।

নিজের মানসিকতায় বড় পরিবর্তিন এনেছেন উথাপ্পা। এখন আর আগের মতো বাজে অবস্থার মুখোমুখি হতে হয় না।

নিজের উন্নতি নিয়ে এ ক্রিকেটার বলেন- ২০০৬ সালে যখন আমার অভিষেক ঘটেছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তখন নিজের সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন ছিলাম না। তখন থেকে অনেক কিছু শিখেছি, উন্নতির রাস্তায় থেকেছি। এখন আমি নিজের সম্পর্কে সজাগ। নিজের ভাবনাচিন্তা ও নিজের সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা রয়েছে। কোথাও কখনও ভুল হলে তা শুধরে নেওয়া এখন আমার পক্ষে অনেক সহজ। আমার এই জায়গায় আসার কারণ হল অতীতে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাওয়া। যখন মানসিক ভাবে হতাশ থাকতাম।