শেষটায় দুর্দান্ত বাংলাদেশ

প্রথম ম্যাচে আট উইকেটে দারুণ জয়। দ্বিতীয় ম্যাচে জিম্বাবুয়ের ছুড়ে দেওয়া ১৬৬ রানের জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশ হেরে গেছে ২৩ রানে। আজ হারারে স্পোর্টস ক্লাবে সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচ তাই রূপ নেয় অলিখিত ফাইনালে। যেখানে আরো বড় লক্ষ্যমাত্রা ছুড়ে দেয় জিম্বাবুয়ে। স্বাগতিকদের ছুড়ে দেওয়া সেই রানপাহাড় ডিঙিয়েছে টাইগাররা।

জয়ের নায়ক সৌম্য সরকার

আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে পাঁচ উইকেটে ১৯৩ রান করে জিম্বাবুয়ে। জবাব দিতে নেমে ম্যাচের চার বল ও পাঁচ উইকেট হাতে রেখে দারুণ জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে টাইগাররা। এর আগে একমাত্র টেস্টের সিরিজে জিতেছে বাংলাদেশ। ওয়ানডে সিরিজে স্বাগতিকদের করেছে হোয়াইটওয়াশ।

৩০ বলে ৫২ রানের কঠিন সমীকরণ ছিল টাইগারদের সামনে। শামীম, আফিফ ও মাহমুদউল্লাহ ঝড়ে ১৬তম ওভারে এসেছে ১২ রান। ১৭তম ওভারেও তাই। ম্যাচ তখন দারুণভাবেই জমে ওঠে। ১৮তম ওভারের শেষ তিন বলে তিন চার হাঁকিয়ে ম্যাচ হাতের মুঠোয় নিয়ে আসেন শামীম। শেষ দুই ওভারে ১৩ রানের সমীকরণ মেলাতে বেগ পেতে হয়নি বাংলাদেশকে।

বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি

তবে জিম্বাবুয়ের ছুড়ে দেওয়া বিশাল লক্ষ্যের শুরুতেই পা হড়কায় বাংলাদেশ। কুড়ি রানেই উদ্বোধনী উইকেটের পতন। সাত বলে তিন রানে ফিরে যান মোহাম্মদ নাঈম। পরে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে ৫০ রানের জুটি গড়ে ধাক্কা সামাল দেন সৌম্য সরকার। ১৩ বলে ২৫ রানে দলকে লড়াইয়ে রেখে ফেরেন সাকিব; দুটি ছক্কা ও একটি চার মারেন ইনিংসে।

১৩৩ রানে দলের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন সৌম্য। ৪৯ বলে ৬৮ রান করেন টাইগার ওপেনার। নয়টি চার ও এক ছক্কায় ঝলমলে ইনিংসটি সাজান বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান। সৌম্যের বিদায়ে আস্কিং রেটের চাপে পড়ে বাংলাদেশ। দুই তরুণকে নিয়ে সেই চাপ সামাল দেন মাহমুদউল্লাহ। দলকে নিরাশ করেননি তিনি। খেলেছেন অধিনায়কোচিত ইনিংস।

মাহমুদউল্লাহ, আফিফ হোসেন ও শামীম হোসেনের শেষের ঝড়ে কঠিন চ্যালেঞ্জে উতরে যায় বাংলাদেশ। দলকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে সাজঘরে ফেরেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক। ২৮ বলে ৩৪ রানে আউট হন মাহমুদউল্লাহ। দুটি চার ও একটি ছক্কা মেরেছেন তিনি। শেষের নায়ক আছেন আরো একজন। তিনি শামীম হোসেন পাটোয়ারি। অভিষেক ম্যাচে ঝড় তুলে দলকে জেতাতে পারেননি তিনি।

আজ টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচেও ঝড় উঠল তার ব্যাটে। তাতেই এলোমেলো জিম্বাবুয়ে। ১৫ বলে ৩১ রানের ক্যামিও ইনিংসে অজেয় থাকেন শামীম। ইনিংসে মেরেছেন পাঁচটি চার। পাঁচ বলে দুই ছক্কায় ১৪ রান করে ফিরেছেন আফিফ হোসেন ধ্রুব।

এর আগে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করে জিম্বাবুয়ে। ছয় ওভার শেষ হওয়ার আগেই ৬৩ রান করে স্বাগতিক শিবির। ওই ওভারের শেষ বলেই উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন সাউফুদ্দিন আহমেদ। মারুমার স্টাম্প ওড়ান এই অলরাউন্ডার। কুড়ি বলে দুটি করে চার-ছক্কায় ২৭ রানে ফেরেন জিম্বাবুয়ে ওপেনার ও উইকেটরক্ষক।

পরে রেজিস চাকাভাকে নিয়ে আরেকটি কার্যকর জুটি গড়েন ওয়েসলি মাধভেরে। ২২ বলে ৪৮ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলে আউট হন চাকাবা। ইনিংসে কোনো চার নেই। তবে ছক্কা হাঁকিয়েছেন ছয়টি। তাকে ফেরান পার্ট টাইম বোলার সৌম্য সরকার। তাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে শামীমের হ্যাত ক্যাচ তুলে দেন চাকাবা।

টপ অর্ডারের দেখানো পথেই হেঁটেছে জিম্বাবুয়ের মিডল অর্ডার। দলকে বড় সংগ্রহের পথে রেখে সাজঘরে ফেরেন মাধভেরে। ৩৬ বলে ছয়টি চারে ৫৪ রানে আউট হন তিনি। শেষ দিকে ২১ বলে ২৩ রান করেন ডিয়ন মেয়ার্স। ইনিংসে তিনটি চার মেরেছেন তিনি। রায়ান বার্ল ১৫ বলে ৩১ রানে অজেয় থাকেন। ইনিংস সাজান তিনটি চার ও দুই ছক্কায়।