বিশ্বকাপ জয় ফুটবলের ক্ষেত্রে অবশ্যই অনেক বড় একটা বিষয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে খেলাটিতে বিশ্বকাপই কি শেষ কথা? এই প্রশ্নের যৌক্তিক উত্তর হয়তো কারো কাছেই নেই। প্রতিভাবান, মাঠে দাপট দেখানো বহু ফুটবলার আছেন যাদেরকে ঠিকভাবে চিনেই না বিশ্ব। কিন্তু সাদামাটা একজন বিশ্বকাপ জিতলে তাকে নিয়ে কতো মাতামাতি, কতো আলোচনা।
বিশ্বকাপই যেন ফুটবলের সব! হালের ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, লিওনেল মেসিরা মাঠে বিস্ময়ের পর বিস্ময় ছড়িয়ে যাচ্ছেন। গোল সংখ্যাকে বিস্ময়কর পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। কিন্তু অনেকেই তাদেরকে পেলে-ম্যারাডোনার চেয়ে অনেকটা পিছিয়ে মনে করেন। টটেনহাম হটস্পারের কোচ মাউরিসিও পচেত্তিনোও তাদের দলে। মেসি আর ম্যারাডোনার বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল তাকে।
কে সেরা মেসি না ম্যারাডোনা? আরও অনেকের মতো পচেত্তিনোও বেঁছে নিয়েছেন ম্যারাডোনাকে, ‘মেসি? না, আমার কাছে ম্যারাডোনাই সেরা।’ আর্জেন্টিনাকে ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জেতাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন বলেই হয়তো এমন মত পচেত্তিনোদের! তবে বিশ্বকাপটা বাদ দিলে অর্জনের দিক দিয়ে ম্যারাডোনার চেয়ে কিন্তু যোজন যোজন এগিয়ে মেসি।
ম্যারাডোনা আর্জেন্টিনার হয়ে দুটি শিরোপা জিতেছেন। একটি ওই ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ, অপরটি ১৯৯৩ সালের আর্টেমো ফ্রাঞ্চি ট্রফি। ক্লাব ফুটবলে নাপোলির হয়ে দুটি লিগসহ মোট শিরোপা জিতেছেন পাঁচটি। এছাড়া বার্সেলোনা হয়ে কোপা দেল রে জিতেছেন একটি, লা লিগা একটি ও সুপার কোপা একটি। আর বোকা জুনিয়র্সের হয়ে আর্জেন্টিনা প্রিমিয়ার ডিভিশন জিতেছেন একবার। সব মিলিয়ে ক্লাব ফুটবলে ৫৯০ ম্যাচ গোল করেছেন ৩১২টি। জাতীয় দলের হয়ে ৯১ ম্যাচে গোল ৩৪টি।
অন্যদিকে, লিওনেল মেসি ক্লাব পর্যায়ে ৬৫৪ ম্যাচ খেলে গোল করেছেন ৫৪৮টি। জাতীয় দলের হয়ে ১৪৬ ম্যাচ খেলে গোল করেছেন ৭৭টি। আর্জেন্টিনার হয়ে শুধু যুব বিশ্বকাপ ও অলিম্পিকে সোনা জিতেছেন মেসি।
কিন্তু ক্লাব ফুটবলে বার্সেলোনার হয়ে আটটি লা লিগা, চারটি উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগসহ মোট ২৯টি শিরোপা জিতেছেন মেসি! বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার জিতেছেন পাঁচবার। ফুটবল পায়ে দর্শকদের বছরের পর বছর ধরে ‘বুদ’ করে রাখছেন। কিন্তু তারপরও অর্জনের দিক দিয়ে ম্যারাডোনার ধারেকাছেও মনে করা হয় না মেসিকে। ফুটবলে বিশ্বকাপই হয়তো সব!