অধিনায়ক লিওনেল মেসি ছিলেন না আগের ম্যাচে। প্রীতি ম্যাচটাতে ইতালিকে ২-০ গোলে আর্জেন্টিনা হারালেও তার অনুপস্থিতিটা ছিল চোখে পড়ার মতোই। স্পেন ম্যাচেই ফেরার কথা ছিল বার্সেলোনা প্লে-মেকারের। কিন্তু একাদশ নয়, চোটজর্জর মেসির জায়গা হলো দর্শক সারিতে।

higuain after losing to spain

ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোর ভিআইপি গ্যালারিতে বসে মেসি দেখলেন তার দলের দুঃস্বপ্নের হার। চোখের সামনেই আর্জেন্টিনাকে ৬-১ গোলে চূর্ণ করল সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্পেন। দলের অসহায় আত্মসমর্পণের লজ্জা সইতে না পেরে ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই গ্যালারি ছেড়ে উঠে গেলেন মেসি।

শুধু মেসি নন, ইনজুরির কারণে মঙ্গলবার মাদ্রিদ ‘মহারণে’ আর্জেন্টিনা দলে ছিলেন না সার্জিও অ্যাগুয়েরো, অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়াও। স্পেন ম্যাচে দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের জন্য কঠিন কিছুর শঙ্কাটা তখনই জেগে উঠে। তাই বলে আর্জেন্টিনা যে এভাবে গোলবন্যায় ভেসে যাবে সেটা ছিল কল্পনারও বাইরে।

দুদিন ধরে জার্মানির কাছে চার বছর আগের ব্রাজিলের ৭-১ গোলের অবিশ্বাস্য হার নিয়ে সরগরম ফুটবলবিশ্ব। বেলো হরিজন্তের সেই ভূতটা তাড়িয়ে বেড়াচ্ছিল নেইমারবিহীন দলটিকে। কিন্তু বার্লিন ম্যাচে অভাবনীয় কোনো ফল হয়নি, ব্রাজিল জিতেছে ১-০ গোলে।

৭-১ স্কোর লাইন যখন সবার চোখে আড়াল হওয়ার উপক্রম তখনই সেই ভূতটা আছড়ে পড়ে মাদ্রিদে। ৭৪ মিনিটেই যে স্পেনের কাছে ছয় গোল হজম করে ফেলেছে আর্জেন্টিনা! আরো বড় লজ্জায় পড়তে পারতো মেসিবিহীন আর্জেন্টিনা। কিন্তু ম্যাচের শেষের ১৫ মিনিটে আক্রমণে যেন অনীহা চলে এসেছিল স্প্যানিশদের মধ্যে।

অবস্থা এমন, চূড়ান্ত বাঁশি বাজলেই যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচে জর্জ সাম্পাওলির দল। কিন্তু ম্যাচের শেষ দিকে এসে অপ্রত্যাশিতভাবে দুই দলের খেলোয়াড়রা জড়িয়ে পড়েন সংঘাতে। আর্জেন্টিনার করা একটা ট্যাকলকে কেন্দ্র করে রেফারির সামনেই রামোস-রোহোরা করলেন হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কি।

প্রায় মারামারি লেগে যাওয়া ম্যাচে দুই দলের অন্তত দুজনকে রেফারি লাল কার্ড দেখালেও সেটা বিস্ময়কর সিদ্ধান্ত হতো না। কিন্তু স্পেন অধিনায়ক সার্জিও রামোসকে হলুদ কার্ড দেখিয়ে ঝামেলাটা অল্পতেই চুকিয়ে ফেলেন রেফারি।

অবশ্য কয়েক সেকেন্ডের পেশীশক্তির লড়াইটা উত্তেজনা ছড়ালেও প্রকৃতপক্ষে ম্যাচটা শেষ হয়েছে নিষ্প্রাণভাবে; বড্ড একেপেশে এবং স্পেনের একচ্ছত্র আধিপত্যে। মেসিবিহীন আর্জেন্টিনা দাঁড়াতেই পারল না লা রোজাদের সামনে।

তবে শুরুর দিকে মনে হয়েছিলো ম্যাচটা জমে উঠবে। ডিয়েগো কস্টা ও ইস্কোর গোলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় স্পেন। ৩৯ মিনিটে নিকোলাস ওটামেন্ডি স্বাগতিকদের একটা গোল শোধ দিয়ে ম্যাচে ফেরার আভাস দিয়েছিলেন। কিন্তু ম্যাচে আর্জেন্টিনা থাকল শুধু ওই সময়টুকুই। দ্বিতীয়ার্ধেই আলবিসেলেস্তেরা দেখল সাবেক চ্যাম্পিয়নদের রূদ্রমূর্তি। শেষ বাঁশির ১৬ মিনিট বাকি থাকতে অতিথিরা হজম করল ছয়টি গোল।

স্পেনের গোল উৎসবের এই জয়ের আসল রূপকার ইস্কো, এদিন জাতীয় দলের জার্সিতে করেছেন ক্যারিয়ারের প্রথম হ্যাটট্রিক। রিয়াল মাদ্রিদ মিডফিল্ডারের তিন গোলের মাঝের দুটো করেছেন থিয়াগো আলকান্তারা ও ইয়াগো আসপাস।

তাই বলে স্প্যানিশদের সঙ্গে আর্জেন্টিনা যে একেবারেই লড়াই করতে পারেনি তা কিন্তু নয়। এদিন স্পেনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আক্রমণ করে গেছে সাম্পাওলির দল। একের পর এক সুযোগ হাতছাড়া করেছে ল্যাতিন জায়ান্টরা।

অন্যদের ভুলগুলোকে দুর্ভাগ্য বলে চালিয়ে দেওয়া যেতে পারে; কিন্তু আর্জেন্টিনার অভিজ্ঞ স্ট্রাইকার গঞ্জালো হিগুয়েইন এদিন যেভাবে ধারাবাহিক গোলের সুযোগ মিস করেছেন, সেটার আসলে কোনো ব্যাখ্যা হয় না। ম্যাচের অষ্টম মিনিটে গোলমুখের খুব কাছে থেকেও তিনি শট নেন ক্রসবারের অন্তত এক হাত উপর দিয়ে।

সেই যে শুরু, এরপর আপ্রাণ চেষ্টা করেও 'পাপমুক্ত' হতে পারেননি জুভেন্টাস স্ট্রাইকার। তবে দুর্ভাগ্য ওটামেন্ডির, ৬৭ মিনিটে তার হেডটা ক্রসবার রুখে না দিলে স্কোর লাইন হতে পারতো ৪-২। বদলাতে পারতো ম্যাচের চিত্রটাও। সেই আফসোস হয়তো ম্যাচ শেষেও করেছেন আর্জেন্টাইনরা।

বে গোল না করলেও এদিন দারুণ খেলেছেন মার্কো এসেনসিও। দলের ছয় গোলের দুটির উৎস তিনি, গোল করার পাশাপাশি দুটিতে আবার অবদান রেখেছেন আসপাস। বিস্ময়কর হলো হলো আসপাস যে গোলটি করেছেন সেটার জোগানদাতা ছিলেন সতীর্থ গোলরক্ষক ডি গিয়া! তার লং পাসটাকে দারুণ দক্ষতায় নিয়ন্ত্রণে রেখে গোল করেন আসপাস।

রাশিয়া বিশ্বকাপের বাকি মাত্র আড়াই মাস। এমন সময় শোচনীয় এই হার নিশ্চিতভাবেই ধাক্কা হয়ে এলো আর্জেন্টিনার জন্য। দুঃস্বপ্নের হারের ধকলটা কাটিয়ে উঠতে সাম্পালির দলকে যে বেশ বেগ পেতে হবে, তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। অবশ্য প্রস্তুতিমূলক প্রীতি ম্যাচ তো ভুলভ্রান্তি শুধরে নেওয়ারই উপলক্ষ্য। আর্জেন্টিনা এদিক থেকে নিজেদের সান্ত্বনা  দিতে পারে যে, যা হওয়ার সেটা বিশ্বকাপের আগেই হয়ে গেছে!

Stay on top of the latest sports news, including cricket and football, from around the world. Get comprehensive coverage of matches, tournaments, and leagues— along with expert analysis and commentary from our team of sports journalists. Whether you're a die-hard fan or a casual observer, you'll find everything you need to know about your favorite sports here.

Sports, cricket, and football are popular topics in the world of sports. Cricket is a bat-and-ball game played between two teams of eleven players and is particularly popular in South Asian countries. Football, also known as soccer, is a team sport played with a spherical ball between two teams of eleven players and is widely popular worldwide. Sports enthusiasts follow the latest news, matches, tournaments, and leagues in these sports and analyze and comment on the performances of players and teams.