রাতে মুখোমুখি ক্রোয়েশিয়া-নাইজেরিয়া

গ্রুপ হিসেবে বেশ কঠিন ‘ডি’ গ্রুপ। এই গ্রুপে আছে রাশিয়া বিশ্বকাপের চমক আইসল্যান্ড, দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। বাকি দল দুটো ইউরোপিয়ান পরাশক্তি ক্রোয়েশিয়া ও আফ্রিকান জায়ান্ট নাইজেরিয়া। আজ রাতে শুরু হচ্ছে পরের দল দুটোর বিশ্বকাপ মিশন।

বাংলাদেশ সময় রাত একটায় মুখোমুখি হবে ক্রোয়েশিয়া ও নাইজেরিয়া। লড়াইয়ের মঞ্চ কালিনিনগ্রাদ। ধারণা করা হচ্ছে এই ম্যাচের জয়ী দল ‘ডি’ গ্রুপ থেকে টিকিট পাবে নক আউট পর্বের। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে মাছারাঙা টেলিভিশন ও নাগরিক টিভি।

এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে নাইজেরিয়ার জন্য দু রকমের খবর আছে। রক্ষণভাগের সৈনিক লিওন বালোগুন এখনো ফিট হয়ে উঠতে পারেননি। তাকে ছাড়াই ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি হতে পারে আফ্রিকান সুপার ঈগলরা।

তবে আফ্রিকান প্রতিনিধিদের জন্য স্বস্তির খবর- ওডিয়ন ইঘালো মাঠে নামতে নামছেন শুরু থেকেই। আজ আবার তার জন্মদিন। ফেরার ম্যাচে উপলক্ষ্যটা খুব করেই রাঙিয়ে তুলতে চাইবেন তিনি। ম্যাচটা ফেরার প্রেক্ষাপট তৈরি হতে পারে উইলফ্রেড এনগিডির জন্যও। যদিও তার ফিটনেস শঙ্কা এখনো কাটেনি।

অবশ্য নাইজেরিয়া শিবিরে চোটের আতঙ্ক থাকলেও এদিক থেকে বেশ নির্ভার ক্রোয়েশিয়া। আজ পূর্ণশক্তির একাদশ নিয়েই বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে ইউরোপিয়ান জায়ান্টরা। তাদের দলটি এবারের আসরে অন্যতম ভারসম্যের একটি দল।

রাশিয়ার মঞ্চে ক্রোটরা খেলবে লুকা মডরিচের নেতৃত্বে। মধ্য মাঠে বল দখলের লড়াইয়ে তিনি পাশে পাচ্ছেন ক্লাব প্রতিদ্বন্দ্বী ইভান রাকিটিচকে। স্প্যানিশ ফুটবলে গেল মৌসুমে দুজনই আলো ছড়িয়ে এসেছেন নিজ নিজ ক্লাবের হয়ে। এবার জাতীয় দলের হয়েও ফর্মটা টেনে আনতে চাইবেন তারা। এ দুজনের সঙ্গে ক্রোটদের শুরুর একাদশে থাকবেন মারিও মান্দজুকিচ, ইভান পেরিসিক এবং ভেদ্রান করলুকা।

গত সাত বিশ্বকাপের মাত্র একটিরই মূলপর্বের টিকিট পায়নি নাইজেরিয়া। তবে যে ক’টি আসরে খেলেছে তারা, তন্মধ্যে তিনবারই নক আউট পর্বে উঠেছিল সুপার ঈগলরা। সবশেষ ব্রাজিল বিশ্বকাপেও প্রথম রাউন্ডের গণ্ডি পড়ি দিয়েছিল নাইজেরিয়া। কিন্তু এবার দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার কাজটা তাদের জন্য বেশ কঠিন।

বিভাজনের পর স্বাধীন দেশ হিসেবে ১৯৯৮ বিশ্বকাপে অভিষেক হয়েছিল ক্রোয়েশিয়ার। প্রথম বিশ্বকাপেই রীতিমতো চমক নিয়ে হাজির হয়েছিল ক্রোটরা। ফ্রান্স বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠে গিয়েছিল তারা। ফুটবল মহাযজ্ঞে এটাই তাদের সর্বোচ্চ সাফল্য্য।

এরপর সেমিফাইনাল দূরের পথ, নক আউট পর্বেই আর উঠতে পারেনি ক্রোয়েশিয়া। ২০০২, ২০০৬ এবং ২০১৪ শেষ তিনটি বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব থেকে ছিটকে পড়েছিল তারা। এবার প্রথম রাউন্ডের বৃত্ত ভাঙার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দলটির সোনালি প্রজন্ম। ক্রোটদের আশাটা পূরণ হবে কিনা জানা যাবে কদিনের মধ্যেই।

বিশ্বকাপ কেন, আন্তর্জাতিক ফুটবলের ইতিহাসে কখনো নাইজেরিয়ার সঙ্গে দেখা হয়নি ক্রোয়েশিয়ার। তবে শেষবার বিশ্বকাপে আফ্রিকান যে দলটির বিপক্ষে খেলেছিল দলটিকে বিধ্বস্ত করেছিল ক্রোটরা। ব্রাজিল বিশ্বকাপে গ্রুপপর্বে ৪-০ গোলে ক্যামেরুনকে উড়িয়ে দিয়েছিল ইউরোপিয়ান জায়ান্টরা।

বিশ্বকাপে ইউরোপের দলগুলোর বিপক্ষে স্বস্তির কোনো তথ্য নেই নাইজেরিয়ার জন্যও। এ পর্যন্ত ছয়বারের দেখায় মাত্র একটিতে জয় পেয়েছিল আফ্রিকান ঈগলরা। সেটাও গত বিশ্বকাপে, বসনিয়া হার্জেগোভিনার বিরুদ্ধে। চার বছর আগের সেই দিনটিই আজ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে মাঠে নামছে নাইজেরিয়া।