জুভেন্টাসের নতুন কোচ পিরলো

অলিম্পিক লিওঁর হাত ধরে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিয়েছে জুভেন্টাস। ক্লাবের ব্যর্থতার দায়ে বলির পাঁঠা বানানো হয়েছে প্রধান কোচ মারিসিও সারিকে। শনিবার রাতে ইতালিয়ান কোচকে অব্যাহতি দিয়েছে তুরিনের বুড়িরা। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে নতুন কোচেরও নাম ঘোষণা করেছে টানা নয়বারের ইতালিয়ান লিগ চ্যাম্পিয়নরা।

আন্দ্রে পিরলো

জুভেন্টাসের নতুন প্রধান কোচের নাম আন্দ্রে পিরলো। কয়েকদিন আগে এই কিংবদন্তিকে যুবদলের কোচ হিসেবে নিযুক্ত করেছিল সিরি’এ লিগ চ্যাম্পিয়নরা। নয়দিনের মধ্যেই প্রমোশন হয়ে গেল পিরলোর। কোচিং ক্যারিয়ারে এটাই হবে তার শুরুর মিশন। এর আগে খেলোয়াড়ি ভূমিকায় নিজেকে কিংবদন্তিদের কাতারে নিয়ে গেছেন পিরলো।

অনূর্ধ্ব-২৩ দলের কোচ হিসেবে নিয়োগ পাওয়া পিরোলার সঙ্গে মূল দলের চুক্তি হয়েছে দুই বছরের। সারির উত্তরসূরি হিসেবে রিয়াল মাদ্রিদ প্রধান কোচ জিনেদিন জিদান, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ম্যানেজার ডিয়েগো সিমন, লাৎসিও কোচ সিমন ইনজাঘি ও টটেনহাম হটস্পারের সাবেক কোচ পচেত্তিনোর নাম শোনা গিয়েছিল। কিন্তু সবাইকে বিস্ময় উপহার দিল জুভেন্টাস।

ইতালি প্রধান কোচ রবার্তো মানচিনির কথাও ভেবেছিল তুরিনের বুড়িরা। ক্লাবের সাবেক দুই কোচ মাস্যিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রি এবং অ্যান্তনিও কন্তের নামও বিবেচনায় এনেছিলেন নীতি-নির্ধারকরা। শেষ পর্যন্ত অভিজ্ঞ কোচদের অগ্রাধিকার না দিয়ে কোচিংয়ে নবিশ একজনের হাতের ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোদের দায়িত্ব তুলে দিল জুভেন্টাস।

শনিবার রাতে এক বিবৃতিতে জুভেন্টাস বলেছে, ‘আজ থেকে সে (পিরলো) জুভেন্টাসের কোচ। নেতৃত্ব ও কৌশলগত দক্ষতায় আস্থা রেখে মূল দলের জন্য আমরা তাকে নিযুক্ত করেছি। যদিও তাকে আমরা অনূর্ধ্ব-২৩ দলের কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলাম। আমাদের বিশ্বাস তার ‍প্রতিভা ও অভিজ্ঞতা আমাদের সাফল্যে অবদান রাখতে পারে।’

খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে অনেক আগেই প্রমাণ করেছেন পিরলো। ইতালির হয়ে জিতেছেন বিশ্বকাপ। ক্লাব ক্যারিয়ারে এসি মিলান ও জুভেন্টাসের হয়ে জিতেছেন সম্ভাব্য সবকিছুই। পাঁচ বছর আগে জাতীয় দলকে বিদায় জানিয়েছেন এই কিংবদন্তি মিডফিল্ডার। দুই বছর পর ক্লাব ক্যারিয়ারেও ইতি টানেন পিরলো। ৪১ বছর বয়সী পিরলোর ক্যারিয়ার শুরু হয় ১৯৯৫ সালে ব্রেসিয়ার হয়ে।

ব্রেসিয়া ছেড়ে পিরলো যোগ দেন ইন্টার মিলানে। এই দলটার হয়ে তিন বছরের ক্যারিয়ারে আরো দুটি ক্লাবে ধারে খেলেন তিনি। ২০০১ সালে সত্যিকারের ঠিকানা খুঁজে পান এই মিডফিল্ডার; নাম লেখান এসি মিলানে। সান সিরোর এই দলটার হয়ে দুবার উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের স্বাদ পান তিনি। দশ বছরের এসি মিলান অধ্যায়ে সম্ভাব্য সব শিরোপা জিতেছেন পিরলো।

২০১১ সালে পিরলো যোগ দেন জুভেন্টাসে। বিখ্যাত সাদা-কালো জার্সিতে। খেলেন টানা পাঁচ বছর। এখানেও সফল হয়েছেন ইতালিয়ান কিংবদন্তি। তার ক্যারিয়ারের শেষের শুরু হয় মার্কিন ফুটবল থেকে। নিউ ইয়র্ক সিটির হয়ে তিন মৌসুম খেলে জার্সি ও বুট জোড়া তুলে রাখেন তিনি। অবসরে যাওয়ার আগে ইতালির হয়ে ১৩ বছরে ১১৬টি ম্যাচ খেলেছেন পিরলো। আজ্জুরিদের হয়ে ২০০৬ সালে তিনি জেতেন স্বপ্নের বিশ্বকাপ।