ডিয়েগো ম্যারাডোনা, এক কিংবদন্তির নাম। তাকে সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নানা কর্মকাণ্ডের জন্য বিভিন্ন সময় বিতর্কিত হলেও তার পুরো জীবনটাই ছিল ঘটনাবহুল ও আলোচিত। অবিশ্বাস্য নৈপূণ্যে দেশকে যেমন বিশ্বকাপ শিরোপা এনে দিয়েছিলেন, ঠিক তেমনি ড্রাগ টেস্টে ধরা পড়ে বিশ্বকাপ চলাকালীন দল থেকেও বহিষ্কার হয়েছিলেন। তবুও বিশ্বজুড়ে তার ভক্ত সংখ্যা কমেনি। বরং প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম এই সংখ্যা অগণিত হয়েছে।

diego maradona gratest১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে দুর্দান্ত খেলোয়াড়ি নৈপূণ্য প্রদর্শন করেছিলেন ম্যারাডোনা

১৯৬০ সালের ৩০ অক্টোবর আর্জেন্টিনার বুয়েন্স আয়ার্সে জন্মগ্রহণ করেছিলেন ডিয়েগো আরমান্ডো ম্যারাডোনা। মাত্র ১০ বছর বয়সে তিনি আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্সের যুব দল লস সেবোলিটাসে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর দলটি টানা ১৩৬টি ম্যাচে অবিশ্বাস্যভাবে জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখে। যেখানে ছোট্ট ম্যারাডোনার অবদান ছিল সবচেয়ে বেশি। যার ফলস্বরূপ মাত্র ১৬ বছর বয়সেই আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে তার অভিষেক ঘটে।

১৯৭৭ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি হাঙ্গেরির বিপক্ষে সর্বপ্রথম আর্জেন্টিনার হয়ে মাঠে নামেন তরুণ ম্যারাডোনা। ম্যাচটি হয়েছিল লা বোম্বোনেরা স্টেডিয়ামে, যেটি আবার ক্লাব দল বোকা জুনিয়র্সের নিজস্ব ভেন্যু। পরবর্তীতে ১৯৮১ সালে ক্লাবটিতে যোগ দেন তিনি। মাত্র একটি সিজন দলটিতে খেলেন এবং রিভার প্লেটের বিপক্ষে দুর্দান্ত একক গোল করে বোকাকে শিরোপা জিততে সহায়তা করেছিলেন। ফলশ্রুতিতে ইউরোপের বড় বড় ক্লাবগুলো তার প্রতি আগ্রহ দেখায় এবং ১৯৮২ সালে স্পেনে বিশ্বকাপ খেলতে গিয়ে বার্সেলোনার সঙ্গে ৫ মিলিয়ন ডলারে চুক্তিবদ্ধ হয়ে যান। যা তৎকালীন সময়ের সর্বোচ্চ ট্রান্সফার রেকর্ড ছিল।

diego maradona managerডিয়েগো ম্যারাডোনা

কিন্তু ইনজুরির কারণে কাতালানদের হয়ে নিজের সেরা ফর্ম প্রদর্শন করতে পারেননি। যার ফলস্বরূপ দল থেকেও বাদ পড়েন। পরবর্তীতে সুস্থ হয়ে ১৯৮৪ সালে ইতালিয়ান ক্লাব নেপোলিতে যোগ দেন। এই ক্লাবটির হয়েই নিজের ক্যারিয়ারের সেরা সময় পার করেছেন এই ফুটবল জাদুকর। ১৯৮৭ সালে দলটিকে প্রথম সিরি এ লিগ শিরোপা এনে দেন তিনি, সঙ্গে ইতালিয়ান কাপের টাইটেলও। এরপর ১৯৯০ সালে দ্বিতীয় সিরি এ লিগ শিরোপা এবং ১৯৯১ সালে উয়েফা কাপ। যার অবদান ও সম্মান-স্বরূপ ২০০০ সালে ১০ নম্বর জার্সিটিকে চিরদিনের জন্য অবসরে পাঠানোর ঘোষণা দেয় নেপোলি।

এতো গেল ক্লাব ফুটবলে তার সাফল্যের গল্প। তবে বিশ্বজুড়ে ম্যারাডোনার নাম-ডাক ছড়িয়ে পড়ে ১৯৮৬ সালে মেক্সিকো বিশ্বকাপের সময়। ওই বিশ্বকাপে তিনি নিজেকে একজন সত্যিকারের গ্রেট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। অধিনায়ক হিসেবে আর্জেন্টিনাকে সামনে নেতৃত্ব দেন এবং দেশকে বিশ্বকাপের শিরোপা এনে দেন। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে তিনি দুর্দান্ত খেলোয়াড়ি নৈপূণ্য প্রদর্শন করেছিলেন। নিজে সর্বোচ্চ ৫ গোল করার পাশাপাশি এসিস্ট করেছেন আরো ৫টি গোলে। কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার বিতর্কিত ও বহুল আলোচিত 'হ্যান্ড অব গড' বা হাত দিয়ে করা গোলটি শতাব্দীর সেরা গোলের মর্যাদা পেয়েছিল। ওই গোলটির কারণেই আর্জেন্টিনা ম্যাচটি জিততে পেরেছিল এবং পরবর্তীতে শিরোপাও জিতে নেয়।

diego maradona gratest1১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের পর

নিজের ক্যারিয়ারের সেরা এই সময়েই বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন 'ফুটবল ঈশ্বর খ্যাত' ডিয়েগো ম্যারাডোনা। নেপোলিতে থাকাকালীন সাত বছরের সময়কালে নিষিদ্ধ কোকেইনের প্রতি তীব্র আসক্ত হয়ে পড়েন। ১৯৯১ সালে মাদক গ্রহণের দায়ে তাকে ১৫ মাসের জন্য সব ধরনের খেলা থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল এবং ওই বছর তিনি ক্লাবও ছেড়ে দেন। সাজা শেষে খেলায় ফিরলেও মাদকের নেশা ছাড়তে পারেননি। ১৯৯৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপ চলাকালীন নিষিদ্ধ ড্রাগ 'এফিড্রিন' গ্রহণ করায় তাকে টুর্নামেন্টের মাঝপথেই দেশে ফিরে আসতে হয়। এরপর আর জাতীয় দলে ফিরতে পারেননি।

সেখান থেকেই মূলত ম্যারাডোনার ব্যক্তিগত জীবন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পরে ক্লাব ফুটবলে ফিরলেও নিজের সেরা সময়টা আর ফিরে পাননি। ১৯৯৭ সালে সব ধরনের ফুটবল থেকে অবসর গ্রহণ করেন। ২০০০ থেকে ২০০৪ সালের সময়টাতে হৃদরোগের কারণে তিনি হাসপাতালেও ভর্তি ছিলেন। সে সময় সঠিকভাবে শ্বাস নিতে শ্বাসযন্ত্রের ব্যবহারেরও প্রয়োজন হয়। পরের বছর নিজের স্থূলত্ব রোধে গ্যাস্ট্রিক-বাইপাস সার্জারি করেছিলেন।

অবশ্য নিজেকে শুধরে পরবর্তীতে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে আবারও ফিরে আসেন। তবে এবার কোচ ও ম্যানেজার হিসেবে। দুই বছর দায়িত্ব পালনকালে লিওনেল মেসির দলকে ২০১০ সালের দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত নিয়ে যান। শেষ বয়সে দুবাইয়ের একটি ক্লাবের কোচ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন এই কিংবদন্তি।

Stay on top of the latest sports news, including cricket and football, from around the world. Get comprehensive coverage of matches, tournaments, and leagues— along with expert analysis and commentary from our team of sports journalists. Whether you're a die-hard fan or a casual observer, you'll find everything you need to know about your favorite sports here.

Sports, cricket, and football are popular topics in the world of sports. Cricket is a bat-and-ball game played between two teams of eleven players and is particularly popular in South Asian countries. Football, also known as soccer, is a team sport played with a spherical ball between two teams of eleven players and is widely popular worldwide. Sports enthusiasts follow the latest news, matches, tournaments, and leagues in these sports and analyze and comment on the performances of players and teams.