স্বাধীন ফিলিস্তিনে সোচ্চার ছিলেন ম্যারাডোনা

সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার ডিয়েগো ম্যারাডোনার মৃত্যুতে কাঁদছে ফুটবল বিশ্ব। তবে সবচেয়ে বেশি মুহ্যমান নিজ দেশ আর্জেন্টিনা এবং ইতালিয়ান শহর নেপোলি, যেখানে নিজের ক্যারিয়ারের সেরা সময় কাটিয়েছেন। সেইসঙ্গে শোকে মুহ্যমান ফিলিস্তিনও। কারণ সারাজীবন ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে এবং স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবিতে সোচ্চার ছিলেন এই কিংবদন্তি।

ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে ডিয়েগো ম্যারাডোনা

তাইতো স্বাধীনতাকামী ফিলিস্তিনিদের কাছে ম্যারাডোনা একজন ফুটবল তারকার চেয়েও বেশি কিছু। ফিলিস্তিনিদের অধিকারের প্রশ্নে আপোষহীন এই তারকা ইসরায়েলের সন্ত্রাস এবং নির্বিচার অত্যাচার-নির্যাতনের তুমুল প্রতিবাদ করতেন। বিশ্বব্যাপী স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র কায়েমের দাবিতে জনমতও গঠন করেছিলেন তিনি।

বেশ কয়েকবার ফিলিস্তিনের পতাকা দুই হাতে উঁচিয়ে তুলে ধরতেও দেখা গেছে এই ফুটবল কিংবদন্তিকে। ২০১২ সালে একবার ম্যারাডোনা নিজেকে ফিলিস্তিনি জনগণের এক নম্বর সমর্থক উল্লেখ করে বলেছিলেন, আমি তাদের সমর্থন করি। তাদের অধিকার আদায়ের প্রতিও সমর্থন জানাই।

২০১৪ সালে গাজা যুদ্ধের সময় ইসরায়েলের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে ম্যারাডোনা বলেছিলেন, ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি ইসরায়েলের আচরণ চরম লজ্জাজনক। ২০১৮ সালের দিকেও একবার প্রকাশ্যে ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেছিলেন, হৃদয় দিয়েই নিজেকে একজন ফিলিস্তিনি হিসেবে অনুভব করেন।

এমনকি ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গেও ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন। সেখানে তিনি লিখেন, এই লোকটি ফিলিস্তিনে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চায় এবং মিস্টার আব্বাস একটি সঠিক রাষ্ট্রই প্রতিষ্ঠা করেছেন।

ফিলিস্তিনি সাংবাদিক রামজি বারাউদি ম্যারাডোনার স্মৃতিচারণে লিখেন, ফিলিস্তিনে আপনি কখনোই ম্যারাডোনাকে ঘৃণা করতে দেখবেন না এবং একমাত্র অপশন হচ্ছে, তাকে ভালোবাসতে হবে। আপনি তার বিরুদ্ধে নেতিবাচক কথাও বলতে পারবেন না।

কারণ ম্যারাডোনা আমাদের মাঝে কিছু অনুপ্রেরণার বীজ বপন করে দিয়েছিলেন। খুব দরিদ্র একটি পরিবার থেকে উঠে আসা ছোট-খাট গড়নের মানুষটি আমাদের মতোই বাদামি, আমাদের মতোই তার হৃদয় জ্বলন্ত, আমাদের মতোই তুমুল উৎসাহী। নিজের মতো করেই নিজেকে ছাড়িয়ে গেছেন। আমাদের জন্য তিনি কেবল ফুটবল কিংবা খেলাধুলার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং তিনি একজন আশা। তার কারণে আমরা এখন বিশ্বাস করি, যে কোনো কিছুই সম্ভব, যোগ করেন তিনি।