‘অ্যাসিস্টের কিং’কে মুস্তাফির আবেগি বিদায়

তুর্কি বংশোদ্ভূত; যদিও খেলেছেন জার্মানি জাতীয় দলে। ইউরোপিয়ান এই পাওয়ারহাউজের জার্সিতে ২০১৪ সালে বিশ্বকাপও জিতেছেন মেসুত ওজিল। কিন্তু জার্মানদের হয়ে তার বিদায় ঠিক সুখের হয়নি। প্রিয় ক্লাব হয়ে ওঠা আর্সেনালেও তার বিদায় হলো দুঃস্বপ্নের। অযত্ব-অবহেলায় শেষ হয়ে গেল তার ইংলিশ ফুটবল অধ্যায়।

আর্সেনালে প্রায় আট বছরের উত্থান-পতনের ক্যারিয়ার শেষ হলো দুদিন আগে। তুরস্কের প্রতি তার ভালোবাসা আগে থেকেই ছিল। ওজিল তাই নাম লেখালেন তুর্কি ফুটবলে। এখানকার শীর্ষ দল ফেনারব্যাচ হলো তার নতুন ঠিকানা। সবকিছু ঠিক থাকলে কদিনের মধ্যে এই ক্লাবের জার্সিতে অভিষেক হবে ওজিলের।

এই কয়েক বছরে আর্সেনালের কোনো কোচের কাছ থেকেই ন্যায্যটা পাননি তিনি। আর্সেন ওয়েঙ্গার, উনাই এমেরি কিংবা মিকেল আর্তেতা; প্রিয় হয়ে উঠতে পারেননি কারোর কাছেই। ধীরে ধীরে পুরো ক্লাবই অপ্রিয় হয়ে ওঠে তার। উত্তর লন্ডনে দুর্বিসহ হয়ে ওঠে তার জীবন। তাকে ধরে রেখেই ভুগিয়েছেন আর্সেনাল কোচরা।

সাম্প্রতিক মৌসুমগুলোতে আর্সেনালের অধিকাংশ ম্যাচেই ডাগ আউটে বেঞ্চে বসে থাকতে দেখা গেছে তাকে। কখনো কখনো বেঞ্চের জায়গাটাও হারিয়েছেন। অযত্বে অবহেলায় রাখা ওজিলকে ছাড়পত্রও দিচ্ছিল না আর্সেনাল। অবশেষে মিলেছে মুক্তির আনন্দ। যা তার ক্লাব সতীর্থদের কাছে বিষাদের মতোই।

তাদের মধ্যে অন্যতম স্কেদ্রান মুস্তাফি। তিনিও তুর্কি বংশোদ্ভূত জার্মানির ফুটবলার। ক্লাব এবং জাতীয় দল মিলিয়ে ওজিলের সঙ্গে পাঁচ বছর কেটেছে তার। মুস্তাফির কাছে ওজিল অ্যাসিস্টের কিং। বিদায়লগ্নে এভাবেই বন্ধুর প্রতি ভালোবাসা জানালেন তুর্কিশ ডিফেন্ডার। সোমবার রাতে ওজিলকে উদ্দেশ্য করে দিয়েছেন আবেগমিশ্রিত বানী।

টুইটারে মুস্তাফি লিখেছেন, ‘ভাই, মাঠে এবং মাঠের বাইরে আমার দেখা সবচেয়ে নিঃস্বার্থ খেলোয়াড় তুমি। তোমাকে আমি সবসময় মানে রাখব অ্যাসিস্টের রাজা হিসেবে। দুর্ভাগ্যবশত একজন খেলোয়াড় হিসেবে তোমার যখন সহায়তার দরকার ছিল সেটা করতে পারিনি। শুভকামনা তোমার জন্য।’

ওজিলকে ‘অ্যাসিস্টের কিং’ আখ্যা দেওয়াটা একেবারেই অমূলক নয়। ২০১৫-১৬ মৌসুমে আর্সেনালের ফুটবলারদের জন্য ১৪৬ বার গোলের সুযোগ তৈরি করেছেন ওজিল। যা গত বিশ বছরের মধ্যে কোনো ফুটবলারের সর্বোচ্চ জোগান দেওয়ার রেকর্ড। গেল আড়াই দশকে এক মৌসুমে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৩৬ বার গোলের সুযোগ তৈরি করেছেন ম্যানচেস্টার সিটির বেলজিয়ান মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইনে।