রোনালদোদের নিয়ে নক আউটে ফ্রান্স

পর্তুগাল ২। ফ্রান্স ২। ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের গত আসরের দুই ফাইনালিস্ট মহাগুরুত্বপূর্ণ মহারণে গোল করল চারটা। যার তিনটিই এলো পেনাল্টি থেকে। জোড়া গোল করে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ছুঁলেন আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ গোলদাতা ইরানের কিংবদন্তি আলি দাইয়ের রেকর্ড। দুই গোল করে করিম বেনজেমা বুঝিয়ে দিয়েছেন কেন তাকে ছয় বছর ফেরানো হয়েছে ফ্রান্স দলে।

ম্যাচ শেষে রোনালদো-বেনজেমা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হাসতে হাসতে মাঠ ছাড়লেন। তাদের দলও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ইউরোর নক আউট পর্বে উঠে গেল। পার্থক্য বলতে ফ্রান্স ডেথগ্রুপ খ্যাত ‘এফ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছে। আর গ্রুপের তৃতীয় সেরা দলের কোটায় প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট কেটেছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। গ্রুপ রানার্সআপ হয়েছে জার্মানি।

এই গ্রুপের শেষ দুটো ম্যাচের একটিরও মীমাংসা হয়নি। মিনিউখে এসে জার্মানদের ২-২ গোলে রুখে দিয়ে বিদায় নিয়েছে হাঙ্গেরি। কোপেনহেগেনে একই ব্যবধানে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছে ফ্রান্স ও পর্তুগাল। পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে থেকে গ্রুপপর্ব শেষ হলো ফ্রান্সের। চার পয়েন্ট নিয়ে জার্মানি দুইয়ে। সমান ম্যাচ ও পয়েন্টে গোলগড়ে পিছিয়ে তিনে পর্তুগাল ও দুই পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে থাকল হাঙ্গেরি।

দুটো ম্যাচই শুরু হয়েছে একই সময়ে। ম্যাচ দুটোই রঙ বদলাল ক্ষণে ক্ষণে। তবে আকর্ষণের কেন্দ্রে ছিল দুই চ্যাম্পিয়নের মহারণটা। যেখানে নখ কামড়ানো উত্তেজনা উপহার দিয়েছে গত আসরের ফাইনালিস্টরা। ৩০ মিনিটে রোনালদোর পেনাল্টি গোলে এগিয়ে যায় পর্তুগাল। এই গোলে ইউরোপিয়ান ফুটবলারদের মধ্যে মৌলিক টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ ২০ গোলের নজির গড়লেন রোনালদো।

তিনি ছাড়িয়ে গেছেন জার্মানির কিংবদন্তি মিরোস্লাভ ক্লোসাকে। বিরতির আগ মুহূর্তে পেনাল্টি থেকেই সমতায় ফেরান বেনেজমা। প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-১ গোলে। বিরতি থেকে ফিরেই রিয়াল মাদ্রিদ স্ট্রাইকারের গোল। গোলের উৎস পল পগবা। লিড নেয় ফরাসিরা। সমতায় ফিরতে খুব বেশি সময় নেয়নি পর্তুগালও। ৬০ মিনিটে ম্যাচের দ্বিতীয় পেনাল্টি পায় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। স্পট কিক থেকে আবারো রোনালদোর গোল।

এই গোলেই পর্তুগিজ যুবরাজ স্পর্শ করলেন আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড। ম্যাচের বাকি সময়ে আপ্রাণ চেষ্টা করেও জয়সূচক গোল করতে পারেনি কেউ। রোনালদো হ্যাটট্রিকের সুযোগ হাতাছাড়া করেছেন। চলমান টুর্নামেন্টে তার গোল এখন পাঁচটি। যা তাকে গোল্ডেন বুটের দৌড়ে এগিয়ে রাখল। সবমিলিয়ে পর্তুগালের হয়ে সবশেষ ৪৫ ম্যাচে ৪৮ গোল হলো রোনালদোর।

এ যাত্রায় স্বপ্ন বেঁচে থাকলেও কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে আরো বড় পরীক্ষায় বসতে হবে পর্তুগালকে। নক আউট পর্বের শুরুতেই তাদের প্রতিপক্ষ টুর্নামেন্টের হট ফেভারিট ও বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দল বেলজিয়াম। আর শেষ ষোলোতে ফ্রান্স প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে সুইজারল্যান্ডকে। আগামী সোমবার ফরাসিদের ম্যাচ।