বার্সার ‘হাঁড়ির ঢাকনা’ সরালেন ফার্নান্দেজ

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বার্সেলোনার কাছ থেকে তিক্ততা পেয়েছেন বেশ কয়েকজন ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার। দ্যানি আলভেজ, নেইমার জুনিয়র, আর্থার মেলো, ফিলিপ্পে কুতিনহোর পর এবার শিরোনাম হলেন ম্যাথুস ফার্নান্দেজ। গেল জুনে তার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে কাতালান জায়ান্টরা। এতদিন চুপ থাকার পর অবশেষে মুখ খুললেন তিনি।

২০১৭ সালে বিশ্ব রেকর্ড গড়ে বার্সেলোনা ছেড়ে প্যারিস সেন্ট জার্মেইতে যোগ দিয়েছেন নেইমার। প্যারিসে যাওয়ার পর বোনাস-ভাতা নিয়ে কাতালানদের সঙ্গে দফায় দফায় শীতল যুদ্ধ হয়েছে ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকারের। কয়েক দফা বার্সাকে আদালতের ঘানিও টানিয়েছেন নেইমার। ন্যু ক্যাম্পে আসার পর মেলোকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জুভেন্টাসে পাঠিয়ে দেয় বার্সা।

কুতিনহোকে নিয়ে বায়ার্ন মিউনিখের সঙ্গে ভালো টানাটানি করেছে কাতালানরা। শেষ পর্যন্ত ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডারকে না ফিরিয়ে পারেনি বার্সা। তবে কুতিনহো ফিরলেও গত মৌসুমে একাদশে নিয়মিত জায়গা দেওয়া হয়নি তাকে। বার্সায় ক্যারিয়ারের শেষ দিকে একই অভিজ্ঞতা হয়েছিল আলভেজের। ব্রাজিলিয়ান এই ডিফেন্ডার তো সুযোগ পেলেই দু-চার কথা শুনিয়ে দেন পুরনো ক্লাবকে।

তবে সবচেয়ে বাজে অভিজ্ঞতাটা বোধহয় ফার্নান্দেজের হলো। গত বছর পালমেইরাস থেকে বার্সায় যোগ দেন এই মিডফিল্ডার। চুক্তির অংক ৭০ লাখ ইউরো। তার সঙ্গে ক্লাবের চুক্তি হয়েছে পাঁচ বছরের। অথচ দেড় বছরে ফার্নান্দেজকে ম্যাচ খেলানো হলো মোটে একটি। তাও আবার ১৭ মিনিটের জন্য। শেষ পর্যন্ত তার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করল বার্সা। তাতে হতাশ ফার্নান্দেজ।

হতাশার সঙ্গে ক্ষোভও প্রকাশ করলেন তিনি। শনিবার ব্রাজিলিয়ান গণমাধ্যম গ্লোভোস্পোর্টকে ফার্নান্দেজ বলেছেন, ‘আমি জানতামই না (বার্সা চুক্তি বাতিল করছে)। যখন ই-মেইলে বার্তাটি পাঠানো হলো বিশ্বাস করতে পারিনি। ক্লাবের মেইল থেকে জিজ্ঞেস করা হলো একই বার্তার মেইল পেয়েছি কি না। আমি বললাম পেয়েছি। কিন্তু আমি কিছুই বুঝিনি। আমি আমার আইনজীবী ও প্রতিনিধির কাছে এটা পাঠালাম। তারা জানালেন আমার চুক্তি বাতিল হয়েছে।’

বার্সা চুক্তি বাতিল করতেই পারে। তবে ফার্নান্দেজের মূল অভিযোগটা অন্যখানে, ‘এটা খুব বাজে ছিল। নোংরা আচরণ। তারা আমাকে কিছুই বলেনি। এমনকি বিদায়বেলায় আমাকে কোনো শুভকামনাও জানায়নি। ছোটবেলা থেকে বার্সেলোনায় খেলার স্বপ্ন দেখেছি। কিন্তু যখন সেখানে গেলাম আমার সঙ্গে একজন ফুটবলারের মতো আচরণ করা হয়নি।’

২৩ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার আরো বলেছেন, ‘আমি তাদের জানিয়েছি, আমার সঙ্গে একজন বার্সেলোনার খেলোয়াড়ের মতো আচরণ করা হচ্ছে না। আমি আয় কম-বেশি যাই করি, ক্লাব যা করুক না কেন আমি বার্সেলোনার খেলোয়াড়। আমার খেলা না খেলা আমার ওপর নির্ভর করে না। সেটা ক্লাব ও অন্য খেলোয়াড়দের ওপর নির্ভরশীল। আমি চেয়েছিলাম আমাকে অন্য খেলোয়াড়দের মতোই দেখা হোক।’

ফার্নান্দেজের অভিযোগ এখানেই শেষ নয়। বার্সার ভাবমূর্তি নিয়েও অভিযোগ করেছেন এই ব্রাজিলিয়ান, ‘এসব নিয়ে আমি খুব হতাশ এবং বিরক্ত ছিলাম। বাইরে থেকে বার্সেলোনাকে দেখে একরকম মনে হয়েছিল। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখলাম আমার সঙ্গে অন্যরকম আচরণ করা হচ্ছে। আমি জানি না সবার সঙ্গে এমনটা হয় কিনা। তবে আমার সঙ্গে যা ঘটেছে তা খুব বাজে ছিল।’