বার্সার বিদেশি সেরা পাঁচ ফুটবলার
- Details
- by খেলাধুলা ডেস্ক
ক্লাব ফুটবলের ইতিহাসে অন্যতম সফল ক্লাব বার্সেলোনা। কাতালানদের হয়ে খেলে গেছেন বিশ্বের অনেক বিখ্যাত ফুটবলার। আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, জাভি হার্নান্দেজ, কার্লোস পুয়োলের মতো স্বদেশি ফুটবলাররা তো ছিলেনই, এর বাইরে অনেক বড় বড় খেলোয়াড়ের পদচারণা ছিল ন্যু ক্যাম্পে। এদের মধ্যে সেরা পাঁচজনকে নিয়ে আজকের প্রতিবেদন। একনজরে দেখে নেওয়া যাক বার্সার বিদেশি সেরা পাঁচ ফুটবলারকে:
স্যামুয়েল ইতো: ‘আফ্রিকান লায়ন’ বলা হতো ইতোকে। বার্সার ইতিহাসে অন্যতম সেরা স্ট্রাইকারও ভাবা হয় তাকে। ২০০৪ সালে ২৪.৩ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে মায়োর্কা থেকে বার্সায় যোগ দেন ইতো। ন্যু ক্যাম্পে তার অধ্যায়টা ছিল রঙিন। ১৯৯টি ম্যাচে গোল করেছেন ১৩০টি। এ ছাড়া ৪০টি অ্যাসিস্ট ছিল ইতোর।
তার মতো নিখুঁত স্ট্রাইকার খুব কমই ছিল বার্সায়। ২০০৯ সালে বার্সার ত্রিমুকুট জয়ের অন্যতম নায়ক ছিলেন ইতো। উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে জোড়া গোল করে প্রায় একাই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন তিনি।
পরে ইতোকে ছেড়ে দিয়ে ইন্টার মিলান থেকে জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচকে নিয়ে আসে বার্সা। পাশাপাশি ইন্টারকে ৫৯ মিলিয়ন পাউন্ড দিতে হয়েছে কাতালানদের। বিস্ময়কর হচ্ছে ছেড়ে দেওয়া সেই ইতোর ইন্টার মিলানের কাছে সেমিফাইনালে হেরে যায় বার্সা। ওই আসরে চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফিও জিতেছিল ইতালিয়ান জায়ান্টরা। ইতোকে বিক্রি করাটা বার্সার তৎকালীন কোচ পেপ গার্দিওলার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় ভুল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বার্সা ছাড়ার আগে পাঁচ বছরে তিনটি লা লিগা ও দুটি চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছিলেন ইতো।
লুইস সুয়ারেজ: এই প্রজন্মের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার ভাবা হয় সুয়ারেজকে। মেসি-নেইমার-সুয়ারেজ জুটি হয়ে উঠেছিল দুনিয়ার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর আক্রমণাত্মক জুটি। উরুগুয়েন এই স্ট্রাইকারকেও বার্সা শেষ পর্যন্ত ছেড়ে দিয়েছে। গত মৌসুমে সুয়ারেজের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে লা লিগা শিরোপা জেতে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। বার্সা এখন কপাল ঠুকছে।
২০১১ সালে আয়াক্সের সর্বোচ্চ গোলদাতা লিভারপুলে নাম লেখান। মার্সিসাইডের ক্লাবটির হয়ে ২০১৪ সালে ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শু জেতেন সুয়ারেজ। ওই বছরই তাকে ন্যু ক্যাম্পে নিয়ে আসে বার্সা। কাতালানদের হয়ে ছয় মৌসুমে ২৮৩টি ম্যাচ খেলেছেন সুয়ারেজ। এ সময় ১৯৮ গোল করার পাশাপাশি ১১৩টি অ্যাসিস্ট করেছেন তিনি। বার্সার হয়ে চারটি লা লিগা, একটি চ্যাম্পিয়নস লিগ ও চারটি কোপা ডেল রে জিতেছেন সুয়ারেজ।
রোনালদিহো: অনেকের মতে বার্সেলোনার পুনর্জন্মের আসল নায়ক রোনালদিনহো। একবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে অবিশ্বাস্য পারফর্ম করেছেন ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার। সবুজ গালিচার সত্যিকারের জাদুকর বলা হয় তাকে। বার্সা থাকাকালীন বিশ্বের সেরা ফুটবলার ছিলেন রোনি। বার্সার ইতিহাসে সেরা প্লে-মেকার বলা হয় তাকে। ২০০৩ সালে পিএসজি থেকে তাকে নিয়ে আসে স্প্যানিশ জায়ান্টরা।
২০০৫ সালে ব্যালন ডি’অর জেতেন ব্রাজিলিয়ান এই কিংবদন্তি। ন্যু ক্যাম্পে পাঁচ বছরে সম্ভাব্য সবকিছুই জিতেছেন রোনি। বার্সার দুটি লা লিগা ও একটি চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের একক নায়ক তিনি। রোনি এমন একজন ফুটবলার যাকে ‘গার্ড অব অনার’ দিয়েছিল শত্রুশিবির রিয়াল মাদ্রিদ। এখানেই শেষ নয়, এই প্রজন্মের অন্যতম সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসির ‘গুরু’ বলা হয় তাকে। ট্রেডমার্ক করা ফ্রি-কিক, ড্রিবলিংয়ের মতো জাদু রোনির কাছ থেকেই রপ্ত করেছেন মেসি।
ইয়োহান ক্রুইফ: বার্সেলোনার ইতিহাসে কোনো ফুটবলারের এতটা প্রভাব ছিল না। যা করেছেন ক্রুইফ। ডাচ এই কিংবদন্তির মাঠে যেমন একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল তেমনি মাঠের বাইরেও। বার্সেলোনাকে আধুনিক করে তোলার রূপকার ছিলেন তিনি। শুধু খেলোয়াড় হিসেবে নয়, কোচ হিসেবেও ক্রুইফ ছিলেন অনন্য। এখনো বার্সেলোনার বড় একজন অভিভাবক ভাবা হয় ডাচ কিংবদন্তিকে।
১৯৭৩ সালে বার্সেলোনায় যোগ দেন ক্রুইফ। তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ইউরোপের অন্যতম সেরা ক্লাব হয়ে ওঠে কাতালানরা। পাঁচ বছরে ১৭৩ ম্যাচে ৫৯টি গোল করেছেন এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। খেলোয়াড় হিসেবে একটি লা লিগা ও একটি কোপা ডেল রে জিতেছেন ক্রুইফ। ১৯৮৮ সালে বার্সার কোচ হিসেবে ফিরে বার্সায় ফিরে আসেন তিনি। এই ভূমিকায় চারটি লা লিগা, একটি কোপা ডেল রে ও একটি চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতেন ডাচ কিংবদন্তি। বার্সার বিখ্যাত তিকি-তাকা ফুটবলের জন্মদাতা ছিলেন ক্রুইফ।
লিওনেল মেসি: বার্সেলোনার ইতিহাসে সর্বকালের সেরা ফুটবলার বলা হয় লিওনেল মেসিকে। তিনি ছাড়িয়ে গেছেন ক্রুইফ, ইতো, রোনালদিনহোদের। ক্লাবের স্প্যানিশ কিংবদন্তিদেরও পেছনে ফেলেছেন মেসি। বার্সার একাডেমি লা মাসিয়া থেকে উঠে আসা এই ফুটবল সম্রাট গেল এক যুগের সেরা দুই ফুটবলারের একজন। ইতিহাসের প্রথম ও একমাত্র ফুটবলার হিসেবে সর্বোচ্চ ছয়টি ব্যালন ডি’অর জিতেছেন তিনি।
ড্রিবল, ফ্রি-কিকে সর্বকালের সেরা ভাবা হয় তাকে। এমন কোনো ট্রফি নেই যা বার্সাকে জেতাননি মেসি। তিনি নিজেও নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। আটবার জিতেছেন লা লিগা গোল্ডেন বুট। সম্প্রতি ক্লাবের হয়ে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলা জাভিকে (৭৬৭) ছাড়িয়ে গেছন মেসি। ক্লাবের সর্বোচ্চ গোলদাতাও মেসি। আর্জেন্টাইন সেনসেশন ভেঙেছেন ব্রাজিলিয়ান মহাতারকা পেলের এক ক্লাবের হয়ে সর্বোচ্চ গোলের সেকর্ড। সান্তোসের হয়ে ৬৪৪টি গোল করেছিলেন পেলে।
সবধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে কাতালানদের হয়ে এ পর্যন্ত ৭৭৮টি ম্যাচ খেলেছেন মেসি। তার মোট গোল ৬৭২টি। এ ছাড়া সতীর্থদের দিয়ে আরো ৩০৫টি গোল করিয়েছেন মেসি। ইতিহাসের আর কোনো ফুটবলারের এতগুলো অ্যাসিস্ট নেই। বার্সায় ১৭ বছরের অধ্যায়ে মেজর ট্রফির মধ্যে ১০টি লা লিগা, চারটি চ্যাম্পিয়নস লিগ, সাতটি কোপা ডেল রে জিতেছেন মেসি। সম্প্রতি তিনি পেয়েছেন আন্তর্জাতিক প্রথম সাফল্য। ব্রাজিলকে হারিয়ে দেশবাসীর ২৮ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে আর্জেন্টিনাকে জিতিয়েছেন কোপা আমেরিকার ট্রফি। যা তাকে এবারো বর্ষসেরার লড়াইয়ে এগিয়ে দিয়েছে।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay on top of the latest sports news, including cricket and football, from around the world. Get comprehensive coverage of matches, tournaments, and leagues— along with expert analysis and commentary from our team of sports journalists. Whether you're a die-hard fan or a casual observer, you'll find everything you need to know about your favorite sports here.
Sports, cricket, and football are popular topics in the world of sports. Cricket is a bat-and-ball game played between two teams of eleven players and is particularly popular in South Asian countries. Football, also known as soccer, is a team sport played with a spherical ball between two teams of eleven players and is widely popular worldwide. Sports enthusiasts follow the latest news, matches, tournaments, and leagues in these sports and analyze and comment on the performances of players and teams.